Advertisement
০২ মে ২০২৪
Indian Air Force

আকাশযুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেবে ভারতীয় বায়ুসেনার ‘উইংম্যান’ ড্রোন

ড্রোনগুলি শুধুই পাইলটের সঙ্কেতের জন্য অপেক্ষা করে না। প্রতিটি উইংম্যান ড্রোনেই নিজস্ব রাডার এবং সেন্সর থাকে। দূর আকাশে সে যা দেখতে পায়, সেই সঙ্কেতও সে প্রতি মুহূর্তে পাঠিয়ে দেয় পাইলটের কাছে। তাই পাইলট নিজে নিরাপদ দূরত্বে থাকলেও এই ড্রোনগুলিকে পাঠিয়ে দিতে পারে শত্রুসীমায়।

জাগুয়ার যুদ্ধবিমান। ফাইল চিত্র।

জাগুয়ার যুদ্ধবিমান। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৩:৫৯
Share: Save:

আধুনিকীকরণের ফলে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত অত্যাধুনিক জাগুয়ার যুদ্ধবিমান এবং তার সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্রবাহী চারটি ‘উইংম্যান ড্রোন’। বিপক্ষের বিমানঘাঁটি রাডারে ধরা পড়লেই সেই খবর এই ড্রোনকে এক লহমায় পৌঁছে দেবেন ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট। এর পর সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে ছুটে যাবে মিসাইলবাহী ড্রোন। বিপক্ষের বিমানঘাঁটি ধ্বংস হওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।

পাকিস্তান ও চিন সীমান্তে ভারতীয় বায়ুসেনার এই যুদ্ধাস্ত্র যে কোনও মুহূর্তে বদলে দিতে পারে আকাশযুদ্ধের গতিপ্রকৃতি, এমনটাই মত যুদ্ধ-বিশেষজ্ঞদের। যুদ্ধ লাগলে শুরুতেই বিপক্ষের দাঁতনখ ভেঙে দিতে প্রথমে আসরে নামবে ভারতীয় বায়ুসেনার এই আক্রমণ ব্যবস্থা। এই আক্রমণ যত নিখুঁত হবে, ততই দুর্বল হয়ে পড়বে বিপক্ষ, আর এগিয়ে যেতে পারবে সেনার পরবর্তী বাহিনী। আর সেই আকাশযুদ্ধের লড়াইতে এই ‘উইংম্যান’ রাডারের জন্যই এখন অ্যাডভান্টেজ ‘ভারতীয় সেনা’।

আগামী ১০ বছরের মধ্যেই ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে আসছে এই দুর্ভেদ্য ‘উইংম্যান ড্রোন’। আকাশযুদ্ধের এই প্রযুক্তি এবং তাকে যুদ্ধক্ষেত্রের জন্য উপযোগী করার পিছনে আছে হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড (হ্যাল)। এই প্রযুক্তিতে একটি জাগুয়ার যুদ্ধবিমানের সঙ্গে থাকে তিন বা তার বেশি সংখ্যক ড্রোন। এই বিশেষ ভাবে তৈরি প্রতিটি ড্রোনের সঙ্গে যুক্ত থাকে আকাশ থেকে ভূমিতে আক্রমণ করতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র। তিন বা তার বেশি ‘উইংম্যান ড্রোন’ নিয়ে বিপক্ষের আকাশসীমার দিকে যুদ্ধবিমান নিয়ে এগোতে থাকেন পাইলট আর শত্রুঘাঁটি নজরে এলেই সেই নির্দেশ পৌঁছে যায় ড্রোনের কাছে। তার পরই সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে শত্রুঘাঁটিতে হামলা চালাবে উইংম্যান।

আরও পড়ুন: নিয়ন্ত্রণরেখায় ফের বিনা প্ররোচনায় গুলি পাক সেনার, পাল্টা জবাব ভারতের

এই আক্রমণ ব্যবস্থায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খুবই কম, কারণ প্রতিটি ড্রোনই স্বয়ংচালিত। পাইলটের নির্দেশ পেলেই সে ছুটে যায় শত্রুঘাঁটির দিকে। আর ড্রোনগুলি শুধুই পাইলটের সঙ্কেতের জন্য অপেক্ষা করে না। প্রতিটি উইংম্যান ড্রোনেই নিজস্ব রাডার এবং সেন্সর থাকে। দূর আকাশে সে যা দেখতে পায়, সেই সঙ্কেতও সে প্রতি মুহূর্তে পাঠিয়ে দেয় পাইলটের কাছে। তাই পাইলট নিজে নিরাপদ দূরত্বে থাকলেও এই ড্রোনগুলিকে পাঠিয়ে দিতে পারে শত্রুসীমায়। শত্রুপক্ষের পরিস্থিতি নিরাপদ দূরত্বে থেকেই ঠাহর করতে পারবেন ভারতীয় পাইলট। কোথাও কোনও গতিবিধি নজরে এলে দূর আকাশ থেকে তাঁর সঙ্কেত পেলেই শত্রুঘাঁটি ধ্বংস করবে উইংম্যান ড্রোন।

ভারতীয় সেনার সেরা দশ যুদ্ধাস্ত্র সম্বন্ধে জানেন?

ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানের সংখ্যা উদ্বেগজনক ভাবে কমে যাওয়ার সময়ই এই বিকল্প ভাবনা মাথায় আসে ভারতীয় প্রযুক্তিবিদদের। সেই সময় আকাশযুদ্ধের ক্ষমতায় অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল চিনের বায়ুসেনা। পাশাপাশি কার্গিল যুদ্ধের পর নিজেদের ক্ষমতা ক্রমশ বাড়াচ্ছিল পাক বায়ুসেনা। নতুন ব্যবস্থায় পর্যাপ্ত যুদ্ধবিমান না থাকলেও অনেক কম খরচে নিঁখুত লক্ষ্যে ধ্বংস করা যাবে বিপক্ষের শত্রুঘাঁটি।

আরও পড়ুন: পুলওয়ামা হামলা ‘ভয়ঙ্কর’, মন্তব্য ট্রাম্পের, পাকিস্তানকে তোপ মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকেরও

এনডিটিভিকে এই যু্দ্ধাস্ত্র তৈরির সঙ্গে যুক্ত এক প্রযুক্তিবিদ জানিয়েছেন, ‘‘এখন এই ব্যবস্থায় শুধু আকাশ থেকে ভূমি ক্ষেপণাস্ত্র বয়ে নিয়ে যেতে পারবে উইংম্যান। তার পর এই ড্রোনগুলিতে আকাশ থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র যুক্ত করে দেওয়ার কাজ শুরু হবে। তখন আর শুধু শত্রুঘাঁটি নয়, বিপক্ষের যুদ্ধবিমানকেও আকাশে ধ্বংস করতে পারবে উইংম্যান। ’’

প্রতিটি উইংম্যানের জন্য খরচ পড়ছে পাঁচ মিলিয়ন ডলার বা পঁয়ত্রিশ কোটি টাকা। অন্য দিকে উন্নত মানের রাফাল বা অন্যান্য যুদ্ধবিমানের দাম এই উইংম্যানের থেকে বহু গুন বেশি। তাই এই উইংম্যান একই সঙ্গে খরচ বাঁচায় এবং আক্রমণকে অপ্রতিরোধ্য করে তোলে।

গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE