Advertisement
০৪ মে ২০২৪

ঝড়ের ধাক্কায় বেসামাল বাঙালির সফর

হুদহুদের ধাক্কায় পুজোর ছুটিতে এ বার বিপাকে বাঙালি। গোপালপুর-বিশাখাপত্তনমে সাগর দেখতে যাওয়া আপাতত বন্ধ। পুরী-দিঘা গেলেও সমুদ্রে স্নানের মজা মিলবে কি না, তা-ও নিশ্চিত নয়। সেখানে ঝড় না হোক, উত্তাল সমুদ্রের জন্য সমুদ্রে স্নানে ইতিমধ্যেই বিধি-নিষেধ জারি হয়েছে। ট্রেন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় তামিলনাড়ু-কর্নাটকে পৌঁছতেও নাকাল হওয়ার আশঙ্কা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৪৪
Share: Save:

হুদহুদের ধাক্কায় পুজোর ছুটিতে এ বার বিপাকে বাঙালি। গোপালপুর-বিশাখাপত্তনমে সাগর দেখতে যাওয়া আপাতত বন্ধ। পুরী-দিঘা গেলেও সমুদ্রে স্নানের মজা মিলবে কি না, তা-ও নিশ্চিত নয়। সেখানে ঝড় না হোক, উত্তাল সমুদ্রের জন্য সমুদ্রে স্নানে ইতিমধ্যেই বিধি-নিষেধ জারি হয়েছে। ট্রেন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় তামিলনাড়ু-কর্নাটকে পৌঁছতেও নাকাল হওয়ার আশঙ্কা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

আন্দামান সাগরে ঘনীভূত হওয়া ঘূর্ণিঝড় হুদহুদ শনিবার বিশাখাপত্তনম থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। আজ, রবিবার দুপুরে তা অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম ও শ্রীকাকুলামের মাঝে আছড়ে পড়বে বলে পূর্বাভাস। ঝড়ের পূর্বাভাস পেয়ে ইতিমধ্যেই দক্ষিণ-পূর্ব রেল দক্ষিণ ভারতগামী সব ট্রেন ভুবনেশ্বর, ব্রহ্মপুরের বদলে নাগপুর দিয়ে ঘুরপথে চালাচ্ছে। তবে পুরীগামী ট্রেন চলাচল এ দিন রাত পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ওড়িশা-অন্ধ্রপ্রদেশের উপর দিয়ে যাওয়া বিমানগুলিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

পুজোর ছুটিতে এখন অনেক বাঙালিরই অন্যতম গন্তব্য বিশাখাপত্তনম-সহ দক্ষিণ ভারতের নানা জায়গা। কিন্তু ঝড়ের হানায় গোপালপুর-বিশাখাপত্তনমে বেড়াতে যাওয়া শনিবার থেকেই কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেখানে থাকা পর্যটকদের কেউ কেউ অন্যত্র চলে গিয়েছেন। গঞ্জামের (গোপালপুর যার অধীনে) জেলাশাসক প্রেমচন্দ্র চৌধুরি বলেন, “পর্যটকদের হোটেল থেকে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। রবিবার পরিস্থিতি দেখে বাকি ব্যবস্থা করা হবে।” শনিবার থেকেই জোরালো বৃষ্টি শুরু হয়েছে সেখানে। বিশাখাপত্তনমে বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়াও বইছে।

সোমবার সপরিবার বিশাখাপত্তনম যাওয়ার কথা ছিল বারাসতের মনোজ দাসের। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে বিশাখাপত্তনম যাওয়া কার্যত অনিশ্চিত। আরাকু-হায়দরাবাদও যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। বিশাখাপত্তনম না গিয়ে ঘুরপথে হায়দরাবাদ-আরাকু যেতে পারবেন কি না, তা নিয়েও চিন্তায় মনোজবাবু। তাঁর কথায়, “ট্রেনে রায়পুর গিয়ে সেখান থেকে সড়কপথে আরাকু যেতে পারি। কিন্তু ওই এক টিকিটে তা হবে কি না, বুঝতে পারছি না।” দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখপাত্র সঞ্জয় ঘোষ জানিয়েছেন, ওড়িশা-অন্ধ্রপ্রদেশ লাইনে কোনও স্টেশনের টিকিট থাকলে ঘুরপথে তার কাছাকাছি স্টেশনেও যাত্রীরা যেতে পারেন। টিকিট বাতিল করলে পুরো টাকা ফেরত দেওয়া হবে। ঘুরপথে ট্রেন পাঠানোর ফলে যাত্রীদের কিছুটা অসুবিধা হবে বলেও মানছেন রেলকর্তারা। তার ফলে কিছু ছোট স্টেশনেও দূরপাল্লার ট্রেন থামানো হতে পারে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ‘চিফ পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ম্যানেজার’ সৌমিত্র মজুমদার বলছেন, “ভুবনেশ্বর থেকে বেশ কিছু যাত্রীর ট্রেনে ওঠার কথা ছিল। তাঁদের অসুবিধা এড়াতে ঝাড়সুগুদায় ট্রেন থামবে।”

কলকাতার পর্যটন ব্যবসায়ীদের মতে শুধু ওড়িশা-অন্ধ্রপ্রদেশ নয়, তামিলনাড়ু-কর্নাটকেও পর্যটকদের সমস্যায় পড়তে হবে। ব্রহ্মপুর, বিশাখাপত্তনমের বদলে নাগপুর দিয়ে তামিলনাড়ুতে পৌঁছতে সময় বেশি লাগবে। ট্রেন চলাচলে দেরিরও আশঙ্কা রয়েছে। রেল সূত্রের খবর, নাগপুর লাইনে ট্রেনের সংখ্যা বেশি। তার উপর ঘুরপথে যাওয়া ট্রেনগুলিও রয়েছে। ফলে দেরি হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। পর্যটন ব্যবসায়ীরা আরও জানাচ্ছেন, ঘুরপথের ট্রেনে এমনিতেই গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হবে অনেকের। সেই সঙ্গে রেল চলাচল ব্যাহত হলে সমস্যা আরও বাড়বে। দেরিতে পৌঁছনোর সম্ভাবনা থাকায় পর্যটনসূচিতেও বদল আনতে হচ্ছে। কলকাতার একটি পর্যটন সংস্থার কর্তা নিতাই সেনগুপ্ত জানান, আজ, রবিবার বিকেলেই তাঁদের দু’টি দলের তামিলনাড়ু যাওয়ার কথা। নাগপুর দিয়ে গেলে ১২ ঘণ্টা দেরিতে ট্রেন পৌঁছবে। তাই পর্যটনসূচিতে বদল করতেই হবে।

রেলকর্তাদের অনেকে জানাচ্ছেন, নাগপুর দিয়ে আপাতত ট্রেন ঘোরানো হলেও এই ব্যবস্থা বেশি দিন চালানো সম্ভব নয়। “ঝড় আছড়ে পড়ার পর কতটা ক্ষয়ক্ষতি হল, তা দেখেই পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে”, মন্তব্য এক রেলকর্তার। তিনি জানালেন, ঝড়-বৃষ্টির দাপট তেমন বেশি না হলে তড়িঘড়ি পূর্ব উপকূল দিয়ে ট্রেন চালানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

hudhud tourism affected by hudhud tourism affected
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE