তিস্তা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী অবস্থান নেন, তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার ও গোটা বিজেপি শিবির। তবে প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফরের আগে স্থল সীমান্ত চুক্তিটি সম্পন্ন করতে সক্রিয় হলেন বিজেপি নেতৃত্ব।
আর সে কারণেই আজ সকালে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের বাড়িতে একটি বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, বিজেপি নেতা রাম মাধব, সংগঠন সচিব রাম লাল ও আরএসএস নেতা কৃষ্ণগোপাল উপস্থিত ছিলেন। স্থল সীমান্ত চুক্তি নিয়ে যেহেতু পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের স্বার্থ জড়িত, সে কারণে এই দুই রাজ্যের নেতাদেরও সামিল করানো হয়। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি রাহুল সিংহও এই বৈঠকে যোগ দেন। সেখানে তিস্তা নিয়ে আজ আলোচনা করা হয়নি শুধুমাত্র একটি কারণেই। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন বাংলাদেশ সফর করছেন। সেখানে আজই তিস্তা নিয়ে আজ সদর্থক বার্তা দিয়েছেন। আগামিকাল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও বৈঠক রয়েছে। ফলে তাঁর পদক্ষেপের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে মোদী সরকার, যেহেতু তিস্তার বিষয়টির সঙ্গে রাজ্যের স্বার্থ জড়িত।
কিন্তু তিস্তা নিয়ে আজ আলোচনা না হলেও স্থল সীমান্ত চুক্তি নিয়ে আজ বিজেপি নেতৃত্ব আরও একধাপ এগিয়ে গেলেন। পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের বিজেপি নেতৃত্ব নীতিগতভাবে এই চুক্তি সম্পাদন করার জন্য ছাড়পত্র দিয়েছেন। যদিও অসমের কাছে এটি এখনও একটি সংবেদনশীল বিষয়। সেটি কী করে মোকাবিলা করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা করবেন বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু সংসদের আসন্ন অধিবেশনে বিলটি নিয়ে তৎপর হতে চাইছে সরকার। যাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের আগে সেটি কার্যকর করা যায়। রাহুল সিংহ এই বৈঠকের পর বলেন, “আমরা দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক চাই। সে কারণেই এর একটি সুষ্ঠু সমাধান চাইছি। তেতুলিয়া করিডরটি পেলে কলকাতা বা ইসলামপুর থেকে জলপাইগুড়ির যাতায়াত আরও সহজ হবে। পাশাপাশি সীমান্তে কাঁটাতারের ব্যবস্থা হলে গোপাচার, অনুপ্রবেশ থেকে সন্ত্রাসের গতিবিধিতেও লাগাম কষা যাবে।” বৈঠকে মোদী সরকারের এক মন্ত্রীর কথায়, “ছিটমহল হস্তান্তর হলেও নাগরিকরা কোথায় থাকতে চান, সেটি তাঁদের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হবে। আর তিস্তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এখন আশার কথা শোনাচ্ছেন। আমরা সেই দিকে নজর রাখছি। সেই বিষয়টিরও দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়ার আশা রাখছি আমরা।” ইউপিএ আমলেও ভোটের আগে এই চুক্তি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় বিজেপিই বাদ সেধেছিল। সেই সময় তাদের বক্তব্য ছিল, দুর্নীতিতে লিপ্ত ইউপিএ সরকার শুধুমাত্র কৃতিত্ব অর্জনের জন্য এই চুক্তি করতে চাইছে। বরং বিজেপি ক্ষমতায় এসে এগুলি সম্পাদিত করবে। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরই কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানো শুরু হয়েছে। আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বাংলাদেশে গিয়ে তিস্তা নিয়ে সদর্থক বার্তা দিচ্ছেন, তার পিছনেও মোদী সরকারের কূটনৈতিক সক্রিয়তা রয়েছে বলে দাবি করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy