রায়বরেলীতে সনিয়া।
সনিয়া গাঁধীর বিরুদ্ধে মেরুকরণের রাজনীতির অভিযোগ তুলল বিজেপি।
গত কাল দিল্লির জামা মসজিদের শাহি ইমাম সৈয়দ আহমেদ বুখারি-সহ সংখ্যালঘু ধর্মগুরুদের এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন সনিয়া। আজ আবার রায়বরেলীতে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার পর স্থানীয় মাজারে চাদর চড়ান কংগ্রেস সভানেত্রী। পরে এলাকার মৌলবি ও সংখ্যালঘু মুরুব্বিদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সনিয়া তাঁদের কাছে আবেদন জানান, এ বারের ভোটে যেন কোনও ভাবেই ধর্মনিরপেক্ষ ভোট ভাগাভাগি না হয়।
এর পরেই সনিয়ার বিরুদ্ধে সরব হন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বুখারির সঙ্গে কংগ্রেস সভানেত্রীর বৈঠকের পাশাপাশি রায়বরেলীর মৌলবি-দের কাছে তাঁর আর্জি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। অরুণ জেটলি বলেন, “কংগ্রেস সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়াচ্ছে। লোকসভা ভোটে সমূহ পরাজয় আঁচ করে এখন মেরুকরণের রাজনীতিতে নেমেছে তারা। সংখ্যালঘু ধর্মগুরুদের সঙ্গে দেখা করে কংগ্রেস সভানেত্রী যে আর্জি জানিয়েছেন, তাতে বিষয়টি স্পষ্ট।” অরুণের হুঁশিয়ারি, “এই রাজনীতি ব্যুমেরাং হয়ে কংগ্রেসের দিকেই ফিরবে।”
সনিয়া অবশ্য রায়বরেলীর মাজারে চাদর চড়ানোর পর বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, “মেরুকরণের খেলায় আমরা নেই।” সেই সঙ্গে তিনি জানান, ভোটের আগে সংখ্যালঘু নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার ধারা ফিরোজ গাঁধী-ইন্দিরা গাঁধীর সময় থেকেই জারি রয়েছে কংগ্রেসে। তা নতুন কিছু নয়।
চালক যখন রাহুল। মনোনয়ন জমা দিতে নিয়ে যাচ্ছেন মাকে। বুধবার রায়বরেলীতে। ছবি: পিটিআই।
আজ ফুরসৎগঞ্জ বিমানবন্দরে নামার পর সেখান থেকে রাহুল গাঁধী গাড়ি চালিয়ে মাকে নিয়ে যান রায়বরেলী সদরে। রাস্তার দু’পাশ থেকে সমর্থকেরা গোলাপের পাপড়ি ছুড়ে তাঁকে স্বাগত জানান। পথে এ হেন শক্তি প্রদর্শনের পর কংগ্রেস দফতরে পৌঁছে হিন্দু শাস্ত্র মতে যজ্ঞে বসেন সনিয়া। মনোনয়ন পেশ করে দেখা করে মৌলবিদের সঙ্গে।
প্রথমে যজ্ঞ, তার পর মাজারে চাদর চড়ানোকে ভারসাম্যের রাজনীতি বলেই আখ্যা দিচ্ছিলেন অনেকে। কিন্তু বিজেপি সংখ্যালঘু নেতাদের সঙ্গে সনিয়ার বৈঠককেই নিশানা করে।
কেন? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভোটের আগে দিল্লির শাহি ইমামকে নিয়ে বিভিন্ন শিবিরের টানাটানি নতুন নয়। বরাবরই তা হয়ে থাকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-মুকুল রায়রাও এ বার ইমামের সঙ্গে দেখা করে গিয়েছিলেন। তবে সূত্র বলছে, শাহি ইমাম ও মৌলবিদের সঙ্গে বৈঠকে সনিয়া যে আর্জিটি জানিয়েছেন, তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি শুধুমাত্র কংগ্রেসের অনুকূলেই সংখ্যালঘু ভোট চাননি। বরং বলেছেন ধর্মনিরপেক্ষ ভোট যেন ভাগ না হয়।
উদাহরণ দিয়ে কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, উত্তরপ্রদেশে ৩০টি আসনে হার-জিৎ নির্ভর করছে সংখ্যালঘু ভোটের ওপর। সেখানে সপা, বসপা এবং কংগ্রেসের প্রার্থীর মধ্যে সংখ্যালঘু ভোট ভাগাভাগি হলে বিজেপির লাভ। তাই সনিয়ারা মনে করেন, সপা, বসপা ও কংগ্রেসের মধ্যে সবথেকে মজবুত প্রার্থীকে যদি স্থানীয় সংখ্যালঘুরা সকলে ভোট দেন, তা হলে ওই প্রার্থী জিতবেন। বিজেপি পরাস্ত হবে। যে কারণে ওই আর্জি। কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে নিজেদের প্রার্থীকে জেতানো এ বার যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ততটাই অগ্রাধিকার নরেন্দ্র মোদীকে রুখে দেওয়া।
স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপি নেতারা চিন্তিত। এবং সেই কারণেই আজ জেটলিরা সনিয়াকে বিঁধেছেন। তবে অনেকের মতে, বিজেপি বা মোদী মুখে ধর্মনিরপেক্ষতা ও উন্নয়নের কথা বললেও মেরুকরণের খেলায় রয়েছেন তাঁরাও। সনিয়া-বুখারি বৈঠক নিয়ে সরব হয়ে আসলে বিজেপির অনুকূলে হিন্দু ভোটের পাল্টা মেরুকরণ ঘটানোও এখন জেটলিদের কৌশল।
এই অবস্থায় কংগ্রেসও তাই জেটলিদের ছেড়ে কথা বলেননি। দলীয় নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, “ক’দিন আগে জৈনদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন রাহুল গাঁধী। বিজেপি তখন কেন সরব হয়নি? কেন তারা উত্তরপ্রদেশে এক জন সংখ্যালঘুকেও প্রার্থী করেনি? আর মোদীই বা কেন এত জায়গা থাকতে বারাণসীতেই প্রার্থী হলেন?”
সনিয়ার সম্পত্তি
মোট সম্পত্তি ৯.২৮ কোটি
অস্থাবর
২.৮১ কোটি
নগদ
৮৫ হাজার
ব্যাঙ্কে
৬৬ লক্ষ
বন্ড
১০ লক্ষ
শেয়ার
১.৯০ লক্ষ
মিউচুয়াল ফান্ড
৮২.২০ লক্ষ
পোস্টাল সেভিংস
সাড়ে ৪২ লক্ষ
ন্যাশনাল সেভিংস স্কিম
২.৮৬ লক্ষ
গয়না
৬২ লক্ষ
নিজের নামে কোনও গাড়ি নেই।
স্থাবর
পারিবারিক সম্পত্তি (ইতালি)
১৯.৯০ লক্ষ
দেরামান্ডি গ্রামে জমি
৪.৮৬ কোটি
দিল্লির সুলতানপুরে
জমি ১.৪০ কোটি
রাহুলকে ধার দিয়েছেন ৯ লক্ষ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy