Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ফের প্রত্যাখ্যান, লোকপাল নিয়ে বাড়ল বিড়ম্বনা

লোকপাল সার্চ কমিটির নেতৃত্ব দিতে নারাজ সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কে টি টমাস। ভরা ভোটের বাজারে কংগ্রেসকে চরম অস্বস্তিতে ফেলে লোকপাল কমিটি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন প্রবীণ আইনজীবী ফলি নরিম্যান। সেই অস্বস্তি কার্যত আজ দ্বিগুণ করে তুললেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কে টি টমাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৪ ০৮:৫৭
Share: Save:

লোকপাল সার্চ কমিটির নেতৃত্ব দিতে নারাজ সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কে টি টমাস।

ভরা ভোটের বাজারে কংগ্রেসকে চরম অস্বস্তিতে ফেলে লোকপাল কমিটি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন প্রবীণ আইনজীবী ফলি নরিম্যান। সেই অস্বস্তি কার্যত আজ দ্বিগুণ করে তুললেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কে টি টমাস। তিনিও লোকপাল সার্চ কমিটির নেতৃত্ব দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। শুধু প্রত্যাখ্যানই নয়, নরিম্যানের থেকে এক ধাপ এগিয়ে এসে টমাস এই সার্চ কমিটি গঠনের উদ্যোগকেই অন্তঃসারশূন্য এবং অপ্রয়োজনীয় বলে ব্যাখ্যা করেছেন।

স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব এতে উল্লসিত। দলের সূত্রে বলা হচ্ছে, আসন্ন প্রচারে এই জোড়া-পদত্যাগের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসে প্রচারে যাবে তারা। সরকার যে দুর্নীতি রোখার মোড়কে আরও বড় দুর্নীতির আশ্রয় নিচ্ছে সে কথাই তুলে ধরা হবে মানুষের কাছে।

দুর্নীতি মোকাবিলার আইন নিয়ে এমনিতেই কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে ইউপিএ মন্ত্রিসভার সংঘাত প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এ বার দুর্নীতি রোধে লোকপাল গঠনের ব্যাপারে সরকারের স্বচ্ছতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে এল। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামীকে লেখা একটি চিঠিতে সরকারকে সরাসরি আক্রমণ করেছেন টমাস। লোকপাল গঠনের আইনের মধ্যেই গলদ রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। চিঠিতে সুপ্রিম কোর্টের এই প্রাক্তন বিচারপতি জানিয়েছেন, “নরিম্যানের প্রত্যাখ্যানের পরই আমি এই লোকপাল গঠনের আইন খতিয়ে দেখি। যে কমিটির প্রধান হতে আমায় বলা হয়েছিল, সেটি সার্চ কমিটি। সার্চ কমিটি প্রাথমিক ভাবে কিছু নাম বাছাই করে পাঠাবে সিলেক্ট কমিটিকে। সিলেক্ট কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু বিষয় হল, সার্চ কমিটি যে-যে নাম বাছবে, সেগুলি গণ্য করতে বাধ্য নয় সিলেক্ট কমিটি। সার্চ কমিটিকে পুরোপুরি অগ্রাহ্য করেই সরাসরি লোকপালের সদস্যদের নাম ঘোষণা করে দিতে পারে সিলেক্ট কমিটি। ফলে এই ধরনের কোনও সার্চ কমিটি থাকারই কোনও প্রয়োজন নেই।” নরিম্যানও এর আগে এই নারায়ণস্বামীকেই লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন, “আমার বিনীত পর্যবেক্ষণ হল, লোকপালের মতো গুরুত্বপূর্ণ এবং সর্বোচ্চ একটি সংস্থা এ ভাবে তৈরি করা যায় না।... সব চেয়ে যোগ্য, স্বাধীন ও সাহসীদেরই এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে।” সরকারকের তরফে আজ কী বলছেন নারায়ণস্বামী? তাঁর বক্তব্য, “গোটা প্রক্রিয়ার মধ্যে স্বচ্ছতা রাখা হয়েছে। যদি কেউ ব্যক্তিগত ভাবে সার্চ কমিটিতে আসতে না চান, তার জন্য গোটা ব্যবস্থাকে দায়ী করা যায় না।”

জোড়া অস্বস্তির মুখে কংগ্রেসের বক্তব্য কী?

দলের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “বিধিবদ্ধ একটি কমিটি গড়া হচ্ছে। তাতে কেউ থাকতে না চাইলে সেটা সরকার বা দলের দায় নয়।”

যদিও এই যুক্তি মানতে নারাজ বিরোধী পক্ষ। বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, লোকপাল গঠনের প্রশ্নে সমস্ত প্রক্রিয়াগত বিষয়ে নিয়ম লঙ্ঘন করা হচ্ছে। পার্সোনেল মন্ত্রকের দায়িত্ব ছিল এই লোকপাল গঠনের জন্য ব্যবহারিক দিক থেকে সহায়তা করা। তা না-করে তারা সমস্ত সিদ্ধান্তকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। বিজেপি নেতাদের মতে, একের পর এক পদত্যাগে এই বিষয়টিই প্রকাশ্যে চলে এল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

lokpal k t tomas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE