আধার নম্বরের ভিত্তিতে রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি সরাসরি গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানোর প্রকল্প ফের চালু করার সুপারিশ করল সংশ্লিষ্ট কমিটি। তাদের মতে, এতে সরকারি অর্থের অপচয় কমে। তবে আগের বারের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে পুরো বিষয়টিকে মসৃণ করতে ব্যবস্থায় কিছু বদল আনার পক্ষেও সওয়াল করেছে তারা। তবে শেষ পর্যন্ত প্রকল্প সত্যিই ফের চালু হবে কি না, তা নির্ভর করছে নতুন সরকারের উপর।
সরাসরি ভর্তুকির এই প্রকল্প চালু করেও গ্রাহকদের অভিযোগের জেরে তা স্থগিত করেছিল ইউপিএ সরকার। কিন্তু একই সঙ্গে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে তারা। প্রকল্প আবার চালু করার সুপারিশ করেছে ওই কমিটিই। তেল সংস্থা সূত্রে খবর, সরকারি নির্দেশ মিললে, কয়েক দিনের মধ্যেই ওই ব্যবস্থা ফের চালু করতে তারা সক্ষম।
আগের বার এই প্রকল্প চালুর পর হয়রানির অভিযোগ তুলেছিলেন গ্রাহকদের একটা বড় অংশ। কারও আধার নম্বরই ছিল না। কারও আবার ছিল না ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। প্রয়োজনীয় নথি জমা দিয়েও সমস্যায় পড়তে হয়েছিল অনেককে। পরে এ নিয়ে মামলা উঠলে, অন্তর্বর্তী রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলে, সরকারি সুবিধা পাওয়ায় আধার বাধ্যতামূলক হতে পারে না। শেষ পর্যন্ত মার্চের গোড়ায় প্রকল্প স্থগিত ঘোষণা করে কেন্দ্র।
এই সমস্ত অভিযোগের বাস্তবতা মেনে নিয়েও কমিটির প্রধান এস জি ধান্ডের দাবি, “ওই প্রকল্প বণ্টন ব্যবস্থায় অপচয় রোখার প্রাথমিক লক্ষ্যপূরণ করেছিল। কমেছিল ভর্তুকির অপব্যবহার। বহু ‘ভুতুড়ে’ সংযোগ বাতিল হয়েছিল এর দৌলতে।” বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকল্পের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন ছিল না। সমস্যা ছিল তা রূপায়ণের পদ্ধতিতে। বিশেষত, যে ভাবে সবার কাছে আধার নম্বর পৌঁছনোর আগেই তড়িঘড়ি প্রকল্প চালু করা হয়েছিল, তা ঠিক হয়নি বলে মনে করেন তাঁরা।
সেই কারণে নতুন করে প্রকল্প চালুর আগে কয়েকটি বিষয়ে নজর দিতে বলেছে কমিটি। যেমন
• তিন মাসের জোরদার প্রস্তুতি।
• আধার নম্বরের জন্য গ্রাহকদের নাম নথিভুক্তি, তেল সংস্থা ও ব্যাঙ্কের কাছে ওই নম্বর জমা ইত্যাদি নিয়ে বিশদে প্রচার।
• এ নিয়ে অভিযোগ জানাতে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা গড়া।
• প্রত্যন্ত অঞ্চলে কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট না-থাকার সমস্যা মেটাতে সমবায় ব্যাঙ্ক ও ডাকঘরগুলিকে কাজে লাগানো। সেই সঙ্গে কোর-ব্যাঙ্কিং পরিষেবার আওতায় ডাকঘরের মাইক্রো এটিএম চালু করা।
• প্রথম বার বাজার দরে সিলিন্ডার কিনতে অ্যাকাউন্টে পাঠানো অগ্রিমের অঙ্ক বৃদ্ধি (আগের বার ছিল ৪৩৫ টাকা)।
• রান্নার গ্যাসে যুক্তমূল্য কর (ভ্যাট) কমানো।
গত মার্চে স্থগিত হওয়ার আগে দেশের ২৯১টি জেলায় ২.৮ কোটি গ্রাহককে মোট ৫,৪০০ কোটি টাকার ভর্তুকি সরাসরি অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। রাজ্যেও এই সুবিধা পেয়েছিলেন প্রায় ৪.৯৪ লক্ষ গ্রাহক।
এখন ফের ওই পদ্ধতি চালু করতে ইউপিএ জমানায় নিযুক্ত কমিটির সুপারিশ আদৌ গ্রাহ্য হবে কি না, তা পুরোপুরি মোদী-সরকারের এক্তিয়ারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy