জম্মু ও কাশ্মীরের ত্রিশঙ্কু বিধানসভায় সরকার গড়তে বিজেপির কাছাকাছি আসার ইঙ্গিত দিল পিডিপি। এর আগে কংগ্রেস, ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে মহাজোটের প্রস্তাব দিয়েও নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের সঙ্গে দরকষাকষির পথ যে মেহবুবা মুফতিরা খুলে রেখেছেন, তা এ দিন স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
পিডিপি নেত্রী বুধবার যে ভাবে কাশ্মীরের উন্নয়ন ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে অটলবিহারী বাজপেয়ীর প্রশংসা করেছেন, তাতে স্পষ্ট, ৩৭০ অনুচ্ছেদের মতো বিভিন্ন বিতর্কিত প্রশ্নে দু’দলের মতভেদ থাকলেও সরকার গঠনের প্রশ্নে তাকে দেওয়াল করতে চাইছে না পিডিপি। মেহবুবার মন্তব্য, “মহাজোট গড়লে আমরা অন্তত ৫৫ জন বিধায়কের সমর্থন পাচ্ছি। কিন্তু সরকার গড়ে কী করব, সেটাও দেখতে হবে।”
পিডিপি সভানেত্রীর মতে, কাশ্মীরে এখন দরকার উন্নয়ন। আর শান্তি ছাড়া তা বাস্তবায়িত হওয়া সম্ভব নয়। এই প্রশ্নেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর অবদানের কথা টেনে এনেছেন মেহবুবা। বাজপেয়ীর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষ বিরতির সূচনা করেছিলেন তিনি। শান্তি প্রক্রিয়া চালানো, নিঃশর্তে হুরিয়ত কনফারেন্সের সঙ্গে আলোচনার প্রক্রিয়াও তিনিই শুরু করেছিলেন। তবে ইউপিএ সরকার কিছু দিন এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে গিয়ে বন্ধ করে দেয়। তাঁর মন্তব্য, “জম্মু ও কাশ্মীরের এ বারের ভোটের ফলাফলের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অনেক দায়িত্ব রয়ে গিয়েছে।” উন্নয়ন নিয়ে মোদীর ‘স্বপ্ন’-কেও টেনে এনেছেন মেহবুবা।
পাশাপাশি, জম্মু ও কাশ্মীরে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া তাঁদের বাদ দিয়ে সম্ভব নয় বলেই দাবি করেছেন সঙ্ঘ থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা রাম মাধব। রাজ্যপাল এন এন ভোরার সঙ্গে দেখা করে এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। মেহবুবাও রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার পরেই বিজেপির সঙ্গে সমঝোতার ইঙ্গিত দিয়েছেন। আর পিডিপি নেত্রীর বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন রাম মাধব।
রাজ্যে আগামী ১৯ জানুয়ারির মধ্যে সরকার গড়তে হবে। ফলে জোট গড়তে আলোচনা চালানোর জন্য অনেকটা সময়ও হাতে রয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় প্রবল টানাপড়েনের সম্ভাবনাও থাকবে। পিডিপি সরকার গড়ার ক্ষেত্রে বিজেপির জন্য দরজা খুলে রাখলেও এখন তাদের শর্তে বিজেপিকে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। মুখ্যমন্ত্রিত্বের পদ নিয়ে বিজেপি এখনও দাবি ছাড়তে চায়নি। তাদের মতে, ছয় বছরের সরকারে অন্তত কিছু সময়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি তাদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হোক। রাজ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হলেও বিজেপি সব থেকে বেশি ভোট পেয়েছে। ফলে জনভাবনাকে সম্মান জানানোর দাবি তুলছে তারা।
পিডিপি এই দাবি নিয়ে কী মনোভাব দেখায়, এখন সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy