রাসায়নিক বিক্রিয়ায় নোনা জল থেকে তৈরি হবে গ্যাসীয় হাইড্রোজেন, তা ফের বদলাবে বিদ্যুৎশক্তিতে বিকল্প বিদ্যুৎ উৎপাদনের এমনই উপায় খুঁজেছেন প্রবাসী এক বঙ্গসন্তান।
অস্ট্রেলিয়ায় বাসিন্দা ওই বাঙালির আবিষ্কার বাস্তবায়িত করতে উৎসাহী পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
তিনি অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়। আদিবাড়ি ঘাটশিলার কাছে শালবনীতে। উচ্চশিক্ষা রাঁচিতে। খড়্গপুর আইআইটি থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি পাওয়ার পর পাড়ি দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ায়। বর্তমানে মেলবোর্নে একটি নিয়োগ সংস্থার কর্তা অরিন্দমবাবু।
পেশাগত কাজের ফাঁকেই বিকল্প বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপায় খুঁজছিলেন তিনি। লবণাক্ত জলকেই বিকল্প বিদ্যুতের উৎস হিসেবে ব্যবহার করেন। অরিন্দমবাবু চেয়েছিলেন, ঝাড়খণ্ডের প্রত্যন্ত এলাকায় তাঁর তৈরি বিকল্প-শক্তির প্রকল্প গড়ে দরিদ্র মানুষের জীবনযাত্রা বদলে দিতে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে কথাও বলেছিলেন। প্রশাসন রাজি হলে নিজের আবিষ্কার বিনামূল্যে দিতে রাজি ছিলেন। অরিন্দমবাবুর অভিযোগ, ঝাড়খণ্ড সরকার তাতে গুরুত্ব দিতে চায়নি। এরপরই অন্য কয়েকটি রাজ্যের কাছে প্রকল্পের বিষয়টি জানান তিনি। সাড়া মেলে পশ্চিমবঙ্গ থেকে।
পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎমন্ত্রী মনীশ গুপ্ত বাঙালি ওই প্রযুক্তিবিদের চিন্তাভাবনার প্রশংসা করেছেন। মনীশবাবু বলেন, “আমরা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করতে চাই। বিষয়টির মধ্যে নতুনত্ব রয়েছে। ওই পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির খোঁজও নেওয়া হচ্ছে।” বিদ্যুৎ দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, বিকল্প বিদ্যুৎ তৈরির ওই উপায় কতটা বাস্তবসম্মত, তা জানতে অরিন্দমবাবুকে এ নিয়ে ‘বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট’ (ডিপিআর) জমা দিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রশাসনের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুতের সমস্যা এখন কার্যত নেই। প্রথাগতভাবে উৎপন্ন বিদ্যুৎ রাজ্যের বেশিরভাগ জায়গায় পৌঁছেছে। তা সত্ত্বেও অরিন্দমবাবুর আবিষ্কারকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তার কারণ, দুর্গম কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ-গ্রিড বসানো সমস্যার। সেখানে বিকল্প বিদ্যুতের এই নতুন পদ্ধতি কাজে লাগানো যায় কি না, তা দেখতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গ।
অরিন্দমবাবু থাকেন প্রবাসে। তা-ই রাজ্যগুলির সঙ্গে কথাবার্তা বলেন তাঁর অশীতিপর বাবা বাণীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ঝাড়খণ্ড সরকার গুরুত্ব না-দেওয়ায় অন্য রাজ্যের পাশাপাশি চিঠি লিখেছিলাম পশ্চিমবঙ্গ সরকারকেও। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রর কাছেও চিঠি পাঠাই। তিনিই আমাদের রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন।” অরিন্দমবাবুর কথায়, “মনীশবাবু বিষয়টি নিয়ে উৎসাহী। প্রকল্প গড়তে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি চিন, জাপান কিংবা আমেরিকার বাজারে পাওয়া যায়। সে রাজ্যের সরকার রাজি থাকলে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy