E-Paper

মেধা তালিকায় নরেন্দ্রপুরের ছ’জন, সাফল্য ছক ভাঙা বিষয়ে

এ বার উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকাতেও নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের একাধিক পড়ুয়া। প্রথম দশে জায়গা করে নিয়েছে এই স্কুলেরই ছ’জন।

সমীরণ দাস 

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২৪ ০৭:২৪
কৃতী: ফলাফল জানার পরে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে (বাঁ দিক থেকে) অদ্বিতীয় বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্ক সাহা, নিলয় চট্টোপাধ্যায় এবং সৌম্যদীপ সাহা। বুধবার, নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলে।

কৃতী: ফলাফল জানার পরে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে (বাঁ দিক থেকে) অদ্বিতীয় বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্ক সাহা, নিলয় চট্টোপাধ্যায় এবং সৌম্যদীপ সাহা। বুধবার, নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।

মাধ্যমিকের পরে এ বার উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকাতেও নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের একাধিক পড়ুয়া। প্রথম দশে জায়গা করে নিয়েছে এই স্কুলেরই ছ’জন।

৪৯৫ নম্বর পেয়ে একক ভাবে মেধা তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের বাসিন্দা সৌম্যদীপ সাহা। ৪৯১ নম্বর পেয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে নিলয় চট্টোপাধ্যায়। তার বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার গড়িয়ার বোড়ালে। ৪৮৮ পেয়ে নবম স্থানে আছে দু’জন। বারাসতের অদ্বিতীয় বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার অর্ক সাহা। ৪৮৭ নম্বর পেয়ে দশম স্থানে রয়েছে সোহম মুখোপাধ্যায় ও শুভজিৎ ঘোষ। দু’জনেরই বাড়ি পূর্ব বর্ধমানে।

বিজ্ঞান বিভাগের (পিয়োর সায়েন্স) পাশাপাশি কলা বিভাগ, এমনকি ছক ভাঙা বিষয় নিয়ে পড়া ছাত্রেরাও জায়গা পেয়েছে এ বছরের মেধা তালিকায়। বছর তিনেক আগে বিজ্ঞান, কলার পাশাপাশি ‘ইকো-স্ট্যাট’ নিয়ে পড়াশোনা চালু হয়েছিল নরেন্দ্রপুরে। এই বিভাগে অর্থনীতি, রাশিবিজ্ঞান (স্ট্যাটিস্টিক্স), অঙ্ক, কম্পিউটার সায়েন্স-সহ বিভিন্ন বিষয় বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকে। গত দু’বছর এই বিভাগে পড়ে মেধা তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিল একাধিক ছাত্র। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সৌম্যদীপ ও ষষ্ঠ স্থানে থাকা নিলয়, দু’জনেই ‘ইকো-স্ট্যাট’ নিয়ে পড়াশোনা করেছে।

সৌম্যদীপের কথায়, “এই বিষয়গুলিতে নম্বর ভাল পাওয়া যায়। তবে, ঠিক মতো পড়াশোনা করলে যে কোনও ক্ষেত্রেই সফল হওয়া সম্ভব।” সৌম্যদীপ জানায়, আগামী দিনে রাশিবিজ্ঞান নিয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে চায় সে। বারাসত গভর্নমেন্ট স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করে একাদশ শ্রেণিতে নরেন্দ্রপুরে ভর্তি হয়েছিল সৌম্যদীপ। অবসর সময়ে আবৃত্তি ও খেলাধুলো করতে, গল্পের বই পড়তে ভালবাসে সে। বারাসতে পোশাকের দোকান চালান সৌম্যদীপের বাবা ভোলানাথ সাহা। তিনি বলেন, “এক সময়ে নরেন্দ্রপুরে পড়ার স্বপ্ন দেখতাম। হয়ে ওঠেনি। ছেলেকে পড়াতে পেরে স্বপ্নপূরণ হয়েছে। ছোট থেকেই পড়াশোনায় ভাল। আশা ছিল, ভাল ফল করবে।”

কলা বিভাগ থেকেও দুই ছাত্র এ বার জায়গা করে নিয়েছে মেধা তালিকায়। এদের মধ্যে নবম অদ্বিতীয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূগোল, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাশাপাশি অঙ্কও ছিল। দশম শুভজিৎ ঘোষের ছিল ইতিহাস, ভূগোল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি। অদ্বিতীয় বলে, “যার যে বিষয় ভাল লাগে, সেটা নিয়েই পড়াশোনা করা উচিত। তা হলেই ভাল ফল হবে।” রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন থেকে মাধ্যমিক পাশ করে নরেন্দ্রপুরে আসে অদ্বিতীয়। স্কুলে পড়াশোনা, খেলাধুলোর পাশাপাশি বিতর্কসভা, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতাতেও বরাবর ভাল করেছে সে। আগামী দিনে প্রশাসনিক পদে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে তার।

নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বামী ইষ্টেশানন্দ বলেন, “সাধারণ ভাবে বিজ্ঞান নিয়ে পড়া এবং ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার দিকেই ছাত্রদের ঝোঁক বেশি। অভিভাবকেরাও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা-ই চান। কিন্তু ইকো-স্ট্যাটের মতো অপ্রচলিত বিষয় নিয়ে পড়েও সফল হওয়া সম্ভব। এবং ভবিষ্যতেও প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছরেও এই স্ট্রিম থেকেই উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছিল। এটা নিয়ে আগামী দিনে ছাত্র-অভিভাবকদের ভাবা উচিত। হিউম্যানিটিস থেকেও আমাদের দুই ছাত্র এ বার মেধা তালিকায় জায়গা পেয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগের দুই ছাত্রও আছে।” নরেন্দ্রপুরের ধারাবাহিক সাফল্য নিয়ে তাঁর বক্তব্য, পড়ার পরিবেশ, নিয়মানুবর্তিতা, একে অপরের সঙ্গে থাকাই এখানকার ছাত্রদের এগিয়ে রাখে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

higher secondary result RKM Narendrapur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy