রিয়াং শরণার্থী সমস্যা মেটাতে ফের উদ্যোগী মিজোরাম সরকার। ত্রিপুরার কাঞ্চনপুরের বিভিন্ন শিবিরে ব্রু বা রিয়াং সম্প্রদায়ের ৩৬-৩৭ হাজার শরণার্থী বসবাস করছেন। তাঁদের ফিরিয়ে আনতে চাইছে মিজোরাম। শরণার্থী প্রত্যাবর্তনের কাজ তদারকি করতে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে মিজোরাম সরকারের প্রতিনিধি দল ত্রিপুরায় আসছেন। মিজোরাম সরকারের সংসদীয় দফতরের সচিব কার্নেল জোয়ালা জানান, রিয়াং শরণার্থীদের ত্রিপুরা থেকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে রাজ্য সরকার যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কাঞ্চনপুরের রিয়াং শরণার্থীরা এ বারের লোকসভা নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেন। তা বাতিল করার দাবিতে মিজোরামের বিভিন্ন সংগঠন লাগাতার বন্ধ ডাকে। তার জেরে মিজোরামের লোকসভা আসনে ভোট গ্রহণ পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় নির্বাচন কমিশন।
ছাত্র সংগঠন ও বেসরকারি সংগঠনগুলির দাবি ছিল, রিয়াংদের পোস্টাল ব্যালটের ভোট বাতিল করতে হবে। মিজোরামে এসেই তাঁদের ভোট দিতে হবে। প্রশাসনিক বিভিন্ন কারণে, এ বার রিয়াং শরণার্থীদের পোস্টাল ব্যালটের ভোট বাতিল করেনি কমিশন। তবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী দিনে কাঞ্চনপুরের রিয়াংদের ভোট পোস্টাল ব্যালটে নেওয়া হবে না। কমিশনের ওই সিদ্ধান্ত জানার পর, ভোটের আগে মিজোরামের পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়। কমিশনের নির্দেশের প্রেক্ষিতে ত্রিপুরার শরণার্থী শিবির থেকে রিয়াংদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে মিজোরাম সরকারের উপরে চাপ বেড়েছে। রাজ্যে লোকসভার ভোট গ্রহণ মিটে যাওয়ার পরেই রিয়াংদের পুনর্বাসন নিয়ে ফের উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য।
জোয়ালা জানান, আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দফায় দফায় শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হবে। ওই সময়ে মিজোরাম সরকারের প্রতিনিধিরা যাতে কোনও অসুবিধার সম্মুখীন না হন, সে জন্য ত্রিপুরার সাহায্য চাওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মিজোরাম সরকারের প্রতিনিধিরা কাঞ্চনপুরে গিয়ে রিয়াং শিবিরের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে কথা বলবেন। বাস্তুহারাদের পুনর্বাসনের জন্য মিজোরাম সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে, সে বিষয়ে সবিস্তার জানানো হবে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্রু তথা রিয়াংদের পুনর্বাসনের জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা মিজোরামের কাছে জানতে চেয়েছে কমিশন।
বছর দেড়েক আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম কাঞ্চনপুরে গিয়ে বলেছিলেন, রিয়াংরা মিজোরামে ফিরলে, তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য আরও বেশি অর্থ-সাহায্য করবে কেন্দ্র। তখনও মিজোরাম এবং ত্রিপুরা সরকার উদ্যোগী হলেও, রিয়াংদের ঘরে ফেরানোর কাজ বেশি দূর এগোয়নি। হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার শিবির ছেড়ে নিজভূমে ফিরে যায়।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে পশ্চিম মিজোরামের মামিথ জেলায় গোষ্টী সংঘষের্র জেরে কয়েক হাজার রিয়াং সম্প্রাদায়ের মানুষ উত্তর ত্রিপুরার কাঞ্চনপুরে আশ্রয় নেয়। ১৬ বছরে শিবিরগুলিতে শরণার্থীদের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৬-৩৭ হাজার। তাঁদের মধ্যে মিজোরামের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে প্রায় সাড়ে ১১ হাজারের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy