এমন ‘অ-সম’ লড়াইয়ের মুখে কখনও পড়েননি কবীন্দ্র পুরকায়স্থ। ১৯৭৮ সাল থেকে নির্বাচন লড়ছেন। প্রথমে বিধানসভা, পরে লোকসভা ভোটে। অসম বিধানসভায় যেতে না পারলেও লোকসভায় জিতেছেন তিন বার। তবে সব বারই লড়েছেন সম-বয়সি, সম-পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে। পাঁচ বার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কংগ্রেসের সন্তোষমোহন দেব। তাঁর সঙ্গে লড়াইয়ে দু’বার জিতেছেন। তিন বার হেরেছেন। শারীরিক অসুস্থতার দরুন কংগ্রেস সন্তোষবাবুর জায়গায় তাঁর কন্যা সুস্মিতাকে প্রার্থী করেছে। শিলতর আসনে এ বার তাঁরই মুখোমুখি হতে হচ্ছে প্রায় অশীতিপর কবীন্দ্র পুরকায়স্থকে।
লড়াই যে অ-সম, সে কথা মেনে নিয়েছেন কবীন্দ্রবাবু। তবে কন্যাসম বলেই তিনি অ-সম বলতে নারাজ। তাঁর মতে, ভোটের ময়দানে এ কোনও বিষয় নয়। তবে বিজেপি-র সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভোট টানতে এ বার শিলচরের ‘নবীন, অনভিজ্ঞ’ কংগ্রেস প্রার্থীকে অ-সম বলে মনে করছেন কবীন্দ্রবাবু। অবশ্য দেব বাড়ির মেয়ের বিরুদ্ধে আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা যে নেই তা স্বীকার করে শিলচরের বর্তমান সাংসদের বক্তব্য, ‘‘ভোটের ময়দানে প্রতিপক্ষকে কখনও দুর্বল বলে ভাবতে নেই। আমিও সর্বশক্তি নিয়েই ঝাঁপাচ্ছি।’’
সংঘ পরিবারের নির্দেশে চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছিলেন কবীন্দ্রবাবু। ১৯৭৮ সালে প্রথম লড়েন বিধানসভা নির্বাচনে। পরপর দু’বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সফল হননি। লোকসভা ভোটে প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতা ১৯৯১ সালে। শিলচরে এ নিয়ে পরপর সাত বার দল তাঁকেই প্রার্থী করেছে। এর আগে তিন বার জিতেছেন, তিন বার হেরেছেন। সরাসরি স্বীকার না করলেও তাঁর চোখ এআইইউডিএফ-এর দিকেই। গত লোকসভা নির্বাচনে এআইইউডিএফ প্রধান বদরুদ্দিন আজমল শিলচরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় তিনি সন্তোষবাবুকে ঠেলে দিয়েছিলেন তৃতীয় স্থানে। এ বার আজমল শুধু ধুবুরিতেই লড়ছেন। ফলে আজমলের উপস্থিতির সুবিধা এ বার কবীন্দ্রবাবু পাবেন না। আর ভোট-রাজনীতির এই অঙ্কটিকে একেবারে নস্যাৎ করতে পারেননি কবীন্দ্রবাবু। যদিও মুখে বলছেন, ‘‘অন্যের মুখের দিকে তাকিয়ে নির্বাচনে লড়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। কারা আমাদের জিতিয়ে দেবে, এমন ভেবে লড়িনি কখনও। এ বারও না। লড়ব নিজস্ব শক্তিতে। দলের বুথ কমিটিগুলি কবেই কাজে নেমে পড়েছে। আশা, গত বারের চেয়ে ভোট বাড়বে।’’
পাশাপাশি, স্বীকার করছেন, বিরোধী সাংসদ হলেও প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া বইছে তাঁর বিরুদ্ধে। কারণ এলাকা উন্নয়ন তহবিলে সবাই নিজের এলাকায় কাজ চান। কিন্তু সাংসদের তহবিল নির্দিষ্ট। ফলে একাংশকে বিমুখ করতেই হয়। তাঁর বক্তব্য, এ থেকে অটলবিহারী বাজপেয়ীও রেহাই পাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy