Advertisement
E-Paper

সিয়াচেনে দীপাবলি, মোদীর লক্ষ্য পাকিস্তান

১২ হাজার ফুট উচ্চতায় বরফের পাহাড়ে দাঁড়িয়ে দেশকে নিরাপত্তা দেন তাঁরা। বরফ-রাজ্যে গিয়ে সেই সেনা জওয়ানদের সঙ্গে এ বারের দীপাবলি কাটালেন প্রধানমন্ত্রী। আর প্রধানমন্ত্রীর সিয়াচেন সফরের ঠিক আগেই সীমান্তে ফের সংঘর্ষ-বিরতি লঙ্ঘন করল পড়শি পাকিস্তান। দীপাবলির দিনেই সীমান্তের ও পার থেকে ছুটে এল গুলির বৃষ্টি। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি বলেই সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।

সাবির ইবন ইউসুফ

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ০২:১৮
সিয়াচেন বেসক্যাম্পে মোদী। পিছনে সেনাপ্রধান দলবীর সিংহ সুহাগ (বাঁ দিক থেকে দ্বিতীয়)। বৃহস্পতিবার। ছবি:  এএফপি।

সিয়াচেন বেসক্যাম্পে মোদী। পিছনে সেনাপ্রধান দলবীর সিংহ সুহাগ (বাঁ দিক থেকে দ্বিতীয়)। বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি।

১২ হাজার ফুট উচ্চতায় বরফের পাহাড়ে দাঁড়িয়ে দেশকে নিরাপত্তা দেন তাঁরা। বরফ-রাজ্যে গিয়ে সেই সেনা জওয়ানদের সঙ্গে এ বারের দীপাবলি কাটালেন প্রধানমন্ত্রী। আর প্রধানমন্ত্রীর সিয়াচেন সফরের ঠিক আগেই সীমান্তে ফের সংঘর্ষ-বিরতি লঙ্ঘন করল পড়শি পাকিস্তান। দীপাবলির দিনেই সীমান্তের ও পার থেকে ছুটে এল গুলির বৃষ্টি। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি বলেই সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।

আজ সকালে বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে সিয়াচেনে যান নরেন্দ্র মোদী। সঙ্গে ছিলেন সেনাপ্রধান দলবীর সিংহ সুহাগ। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে সোজা বেস ক্যাম্পে। সেনা জওয়ানদের সঙ্গে বেশ কিছু ক্ষণ সময় কাটান মোদী। সিয়াচেনে দাঁড়িয়েই গোটা দেশবাসীকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। টুইটারে তিনি লিখেছেন, “সিয়াচেন হিমবাহের এই উচ্চতা থেকে সাহসী সেনা অফিসার ও জওয়ানদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আমি আপনাদের সকলকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। হয়তো এই প্রথম কোনও প্রধানমন্ত্রী দীপাবলির এই শুভ দিনটা জওয়ানদের সঙ্গে কাটানোর সুযোগ পেল।” টুইটারে আলাদা করে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোদী।

সিয়াচেনে যে কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে জওয়ানরা সীমান্ত রক্ষা করেন, সে জন্য তাঁদের সাহসিকতার প্রশংসাও করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেনার উদ্দেশে তিনি বলেছেন, “প্রথম বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনাদের সঙ্গে দীপাবলি কাটাতে এসেছি। ১২৫ কোটি ভারতবাসী আজ নিশ্চিন্তে দীপাবলি পালন করতে পারছেন আর স্বচ্ছন্দে নিজেদের জীবন যাপন করতে পারছেন কারণ আপনারা সীমান্তে রয়েছেন। মনে রাখবেন দেশবাসীও আপনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সর্বদা দাঁড়িয়ে।” না জানিয়ে হঠাৎ করে সিয়াচেনে আসার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন মোদী। বলেছেন, “নিজেদের লোকের সঙ্গে দেখা করার জন্য বলে আসার দরকার হয় না।” দেশবাসীর উদ্দেশে মোদীর বার্তা, “এখানে না এলে কেউ কল্পনাও করতে পারবেন না, কী কঠিন পরিস্থিতি আর প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে আমাদের জওয়ানরা রোজ দেশের সেবা করছেন।”

অনেকের মতে হঠাৎ করে নয়, যথেষ্ট ভেবে-চিন্তেই আজ সিয়েচেন সফরকে বেছে নিয়েছিলেন মোদী। সীমান্তে অস্থিরতার মধ্যে সচেতন ভাবে পাকিস্তানকে বার্তা দিতেই আজ সিয়াচেনে গিয়েছিলেন মোদী। উৎসাহ দিয়েছেন জওয়ানদের। ঘটনা হল, সংঘর্ষ-বিরতি ভাঙতে এ দিনটিকেই বেছে নিয়েছে পাক সীমান্তরক্ষী বাহিনী রেঞ্জার্সও। আজ সকাল আটটা নাগাদ জম্মুর কাঠুয়া ও সাম্বা জেলায় গুলি চালাতে শুরু করে তারা। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের আইজি রাজেশ কুমার জানান, ছোট এবং স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের সাহায্যে গুলি ছুড়েছে পাকিস্তান। জবাব দিয়েছে ভারতও। বেশ কয়েক ঘণ্টা সংঘর্ষ চলেছে। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। বিএসএফ-এর জনসংযোগ আধিকারিক যোগেশ্বর যাদব আবার জানিয়েছেন, আর্নিয়া, হিরানগর আর রামগড় সেক্টরের আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবরও আজ যুদ্ধ-বিরতি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। সেখানেও অবশ্য কোনও প্রাণহানি ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই।

ভারত-পাক সম্পর্কের টানাপড়েনের ফলে ওয়াঘা সীমান্তে ঈদে মিষ্টি বিতরণ বন্ধ ছিল এ বছর। দীপাবলিতেও সৌহার্দ্যের চেনা ছবি দেখা গেল না সীমান্তে।

সিয়াচেনের ঝটিকা সফর সেরে আজ শ্রীনগরেও যান নরেন্দ্র মোদী। উদ্দেশ্য, বন্যা-বিধ্বস্ত কাশ্মীর নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল এন এন ভোরা, ও মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিমানবন্দরেই একপ্রস্ত বৈঠক সারেন প্রধানমন্ত্রী। তার পর হেলিকপ্টারে যান রাজভবনে। সেখানে বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি-ঘর আর হাসপাতালগুলির পুননির্মাণের জন্য আজ ৭৪৫ কোটির কেন্দ্রীয় সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন মোদী। এতে অবশ্য তুষ্ট নয় ওমর সরকার। মোদী ফেরার উড়ান ধরার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই শাসক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স আর কংগ্রেস একজোটে আজ আক্রমণ করেছে মোদীকে। এই ত্রাণ প্যাকেজ হাস্যকর বলে মন্তব্য কংগ্রেসের।

আর ন্যাশনাল কনফারেন্সের এক মুখপাত্র আজ বলেন, “যাঁরা এত দিন মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করছিলেন আর বলছিলেন প্রধানমন্ত্রী এসে বিশাল তফাত পরিবর্তন আনবেন, তাঁরা কতটা ভুল ভেবেছিলেন এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন।”

sabir ibn yusuf srinagar siachen narendra modi kali pujo
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy