লোকে বলে বিখ্যাত মার্কিন সিনেমা সিরিজ় ‘মিশন ইমপসিব্ল’-এ দেখানো ঘটনাগুলি আসলে নাকি তাঁর কার্যকলাপ থেকেই অনুপ্রাণিত। প্রথমে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই, তার পর মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র হয়ে বহু দিন নানা দুঃসাহসিক কাজ করেছেন সেই গুপ্তচর রবার্ট মাহেউ। লেখক লিসা পিসের দাবি, সেই দুঃসাহসিক কাজের মধ্যে অন্যতম মার্কিন সেনেটর রবার্ট এফ কেনেডির খুনের পরিকল্পনা। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে লিসার ‘আ লাই টু বিগ টু ফেল’ নামে বইটি। সেখানেই নানা ‘তথ্যপ্রমাণ’ দিয়ে এই দাবি করেছেন লেখিকা।
১৯৬৮ সালের ৫ জুন লস অ্যাঞ্জেলেসের অ্যাম্বাসাডর হোটেলে গুলি করা হয় সেনেটর কেনেডিকে। গুলি করার ২৬ ঘণ্টা পরে মারা যান সেনেটর। গ্রেফতার করা হয় ২৪ বছর বয়সি এক প্যালেস্তাইনিকে। নাম সিরহান বিসারা সিরহান। গুলি চালানোর কথা স্বীকারও করে সে।
লিসার দাবি, সিরহান গুলি চালালেও যে গুলিটিতে কেনেডির প্রাণ গিয়েছে, সেটি এসেছিল অন্য কারও বন্দুক থেকে। সম্মোহন বিদ্যা কাজে লাগিয়ে সিরহানের মগজধোলাই করেছিলেন রবার্ট। সে সময়েই সম্মোহন এবং ‘মাইন্ড কন্ট্রোল’ বা মগজ নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয় নিয়ে নানা রকমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছিল সিআইএ। সেই সব তালিম নিয়েছিলেন রবার্টও।
সিআইএ-র ক্ষমতা বিস্তারের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন কেনেডি। তা ছাড়া, বছর পাঁচেক আগে তাঁর ভাই, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির খুন নিয়ে সিআইএ-কে নানা প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাতেও চেয়েছিলেন রবার্ট। ফলে এই ‘পথের কাঁটা’কে সরাতে রবার্টই ছিলেন সিআইএ-র প্রথম পছন্দ।
বইটি লেখার আগে ২৫ বছর অনুসন্ধান চালিয়েছেন লিসা। আরও বেশ কয়েক জন লেখকের উল্লেখ করেছেন। যাঁদের দাবিও এক, মূল অভিযুক্ত সিরহান আসলে কেনেডিকে খুন করতেই পারেন না। কারণ, কেনেডিকে মাথার পিছনে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয়। অটোপসিতেও তা প্রমাণিত। আর সিরহান ছিলেন কেনেডির মুখের সামনে। ব্যক্তিগত তদন্তে নেমে ২০১৭-র ডিসেম্বরে সিরহানের সঙ্গে কথা বলেন কেনেডির ছেলে রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র। তিনিও জানান, সিরহানের পক্ষে গুলিটি করা সম্ভবই ছিল না। তবে আদালতে তা প্রমাণ করা যায়নি। যাবজ্জীবন হয়েছে সিরহানের। যদিও কেনেডিকে গুলি করার কথা কিছুতেই মনে করতে পারছেন না তিনি। এই প্রসঙ্গে লিসার দাবি, মনে নেই কারণ তিনি সম্মোহিত হয়ে শূন্যে গুলি চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তবে সত্যি কী ঘটেছিল, তা আর কখনও জানা যাবে না। ২০০৮ সালে ৯০ বছর বয়সে মারা গিয়েছেন রবার্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy