Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কাশ্মীরের মানবাধিকারে চোখ ব্রিটেনের

গ্রীষ্মাবকাশের পরে গত কালই প্রথম দিন পার্লামেন্টে আসেন ব্রিটিশ এমপি-রা।

এখনও নিরাপত্তার মোড়কে কাশ্মীর। ছবি: পিটিআই।

এখনও নিরাপত্তার মোড়কে কাশ্মীর। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
লন্ডন শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:০৩
Share: Save:

আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত মানবাধিকার বলতে যা বোঝায়, কাশ্মীরে তা এখন বিপন্ন। পার্লামেন্টে গত কাল এই মন্তব্য করলেন ব্রিটিশ বিদেশসচিব ডমিনিক রাব। তাঁর মতে, কাশ্মীর সমস্যা ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ও শিমলা চুক্তি মেনে সেই সমস্যা তাদেরই মেটাতে হবে। কিন্তু কাশ্মীরের মানবাধিকারের বিষয়টি আন্তর্জাতিক। ব্রিটিশ বিদেশসচিবের কথায়, ‘‘আন্তর্জাতিক সমাজের একটা সার্বিক দায়িত্ব আছে। আমরা অবশ্যই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখব এবং অধিকারগুলি রক্ষিত হচ্ছে কি না, সে দিকে নজর রাখব।’’

গ্রীষ্মাবকাশের পরে গত কালই প্রথম দিন পার্লামেন্টে আসেন ব্রিটিশ এমপি-রা। তাঁদের অনেকেরই নির্বাচনী কেন্দ্রে পাকিস্তানি, কাশ্মীরি ও ভারতের অন্যান্য অংশ থেকে আসা প্রবাসীদের বাস। লেবার, কনজারভেটিভ, এসএনপি নির্বিশেষে এই এমপি-রা কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের পরে উপত্যকার পরিস্থিতি নিয়ে সরব হন। লেবার এমপি হিউ গ্যাফনি বলেন, কাশ্মীরে ওষুধের সঞ্চয় কমছে। হাসপাতালে চিকিৎসা হচ্ছে না। অথচ উপত্যকায় ৯০ শতাংশের বেশি ওষুধপত্র আসে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে। আর এক লেবার এমপি পল ব্লমফিল্ড জানতে চান, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে রাষ্ট্রপুঞ্জ ও কমনওয়েলথের মাধ্যমে ভারতের উপরে চাপ বাড়ানো হবে কি না। কনজারভেটিভ এমপি শেরিল গিলানের বক্তব্য, তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রের অনেকেই কাশ্মীরের জনবিন্যাস পাল্টে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। স্কটল্যান্ডের কাশ্মীরিদের উদ্বেগের কথা জানান গ্লাসগোর এমপি অ্যালিসন থিউলিস।

তবে কনজারভেটিভ এমপি বব ব্ল্যাকম্যান জানতে চান, ‘মহিলা এবং সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য সৃষ্টিকারী’ ৩৭০ ধারা বিলোপকে বিদেশসচিব সমর্থন করেন কি না। উত্তরে রাব বলেন, ‘‘লোকজনকে আটক, নির্যাতন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করা নিয়ে প্রচুর খবর ঘুরছে। ভারতের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাকে মান্যতা দিয়েও মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টিতে জোর দেওয়া হচ্ছে।’’ ১৫ অগস্ট হাইকমিশনের বাইরে ভারতীয়দের উপরে আক্রমণের নিন্দা করেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কনজারভেটিভ এমপি শৈলেশ ভারা। বিদেশসচিব বলেন, যে কোনও হিংসাই নিন্দনীয়।

আসলে ব্রিটিশ সরকারের সমস্যাটা দ্বিমুখী। ব্রেক্সিটের পরে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতকে তাদের দরকার। আবার ব্রিটিশ এমপি-দের উপরে তাঁদের নির্বাচনী কেন্দ্রের বাসিন্দা পাকিস্তানি ও কাশ্মীরিদের চাপ রয়েছে। গত কাল লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশনের জানলার কাচ ভেঙেছেন বিক্ষোভকারীরা। এই অবস্থায় বিদেশমন্ত্রীকে মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েও বলতে হয়েছে যে, কাশ্মীর সমস্যা দ্বিপাক্ষিক।

ইতিমধ্যে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে পাকিস্তানে গিয়েছেন সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিদেশমন্ত্রীরা। মঙ্গলবার কলম্বোয় ইউনিসেফের একটি সম্মেলনে কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলেছিল পাক প্রতিনিধিদল। ভারতীয় দলের সদস্য দুই সাংসদ, কংগ্রেসের গৌরব গগৈ এবং বিজেপির সঞ্জয় জয়সওয়াল বলেন, এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। গগৈ পাক নেতৃত্বকে মনে করিয়ে দেন সে দেশে মানবাধিকারের হাল, সংখ্যালঘুদের দুর্দশা ও ধর্মদ্রোহ-বিরোধী আইনের জুলুমের কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE