Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রাখাইনে এসেও সরকারি খোলস ছাড়লেন না সু চি

তার পরে কার্যত ফাঁকা হয়ে যাওয়া রাখাইনে সু চি আজ এলেন কোনও আগাম ঘোষণা ছাড়াই। বের হতে পারলেন না সরকারি খোলস ছেড়ে।

সফরে: রাখাইনে সুচি। ছবি: এএফপি।

সফরে: রাখাইনে সুচি। ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
ইয়াঙ্গন শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২১
Share: Save:

আন্তর্জাতিক মহলের প্রবল চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত রোহিঙ্গা সঙ্কটে জেরবার রাখাইন প্রদেশে পা দিলেন আউং সান সু চি। তবে সংঘাত চলার এত দিন পরে, রোহিঙ্গা-ভূমিতে তাঁর এই সফর ঢাকা রইল সরকারি গোপনীয়তায়। আর স্বল্প সময়ের সফরে মায়ানমার সরকারের ‘স্টেট কাউন্সিলার’-কে শুধুমাত্র এমন জায়গাগুলিতেই নিয়ে যাওয়া হলো, যেখানে রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠনের উপর সেনাবাহিনী অপারেশন চালিয়েছে ।

মায়ানমারের সেনাবাহিনীর অত্যাচারে গত অগস্ট মাস থেকে প্রায় ৬ লক্ষ রোহিঙ্গা প্রাণ হাতে নিয়ে দেশ ছেড়েছেন, ঠাঁই নিয়েছেন বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলিতে। যাঁরা ততটা ভাগ্যবান নয়, দেশ ছেড়ে নতুন জমির খোঁজ করতে গিয়ে নৌকা ডুবে মরেছেন তাঁরা। রোহিঙ্গাদের উপর মায়ানমারের সেনাবাহিনীর অত্যাচারকে ‘জাতি নিধন’-এর সঙ্গে তুলনা করেছে খোদ রাষ্ট্রপুঞ্জ। মানবাধিকার লঙ্ঘনের চরম নিদর্শনের পরে, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী সু চি-র ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। তার পরে কার্যত ফাঁকা হয়ে যাওয়া রাখাইনে সু চি আজ এলেন কোনও আগাম ঘোষণা ছাড়াই। বের হতে পারলেন না সরকারি খোলস ছেড়ে।

সকালে রাখাইন প্রদেশের রাজধানী সিটোই-এ পৌঁছন সু চি। সেখান থেকে যান উত্তর রাখাইনের রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলিতে। ২০১৫ সালে ভোটের আগে তিনি প্রচার করতে এসেছিলেন দক্ষিণ রাখাইনে। তবে তখনকার পরিস্থিতি ছিল একেবারেই আলাদা। তিনি ছিলেন জুন্টা শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মায়ানমারের ‘গণতন্ত্রের মুখ’। কিন্তু আজ সরকারের দায়িত্বে থেকেও রাখাইনে সু চি এলেন চরম সমালোচিত হয়ে। আর তাঁর আজকের সংক্ষিপ্ত সফরে এমন কিছু ঘটলোও না যাতে সেই দাগ মোছা যায়। সরকারি অফিসার আর দেশের প্রথম সারির শিল্পপতিদের সঙ্গে নিয়ে এখানে এসে সু চি শুধু দাওয়াই দিলেন, উন্নয়নের মধ্যে দিয়েই সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে।

তবে সু চি রোহিঙ্গাদের জন্য আদৌ কত টুকু করতে পারবেন, তা নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন ছিল। অনেকেই মনে করছিলেন, সে দেশে সরকারের উপরে সেনার নিয়ন্ত্রণ এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি। আর সু চি রোহিঙ্গাদের পক্ষে কোনও কথা বললে তাঁকে দেশের মাটিতে সমালোচনার মুখে পড়তে হবে। এই পরিস্থিতিতেই রোহিঙ্গা ভূমিতে তাঁর আজকের সফর সরকারি ছোঁয়ার বাইরে বেরোতে পারল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Aung San Suu Kyi Myanmar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE