গুগল ম্যাপ থেকে নেওয়া ছবি।
অবশেষে প্রলয়ের আশঙ্কা কাটল। অরুণাচল-অসমকে পুরোপুরি স্বস্তি দিয়ে চিন জানিয়ে দিল, ধসের জেরে ইয়ারলুং সাংপো নদীতে তৈরি হওয়া কৃত্রিম হ্রদ পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। ফলে হড়পা বানের মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা নেই। নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় জল কমিশনও জানিয়েছে, দেশের নদীগুলির জলস্তর স্বাভাবিক রয়েছে।
১৭ অক্টোবর সকালে তিব্বতের মিলিন এলাকার জিয়ালা গ্রামে পাহাড় ধস নামে। তার জেরে ইয়ারলুং সাংপোর গতিপথ বন্ধ হয়ে যায়। প্রাকৃতিক বাঁধ তৈরি হয়ে পুরোপুরি আটকে যায় নদীর গতিপথ। বাঁধের ওপারে নদীর জল আবদ্ধ হয়ে গড়ে ওঠে কৃত্রিম হ্রদ। সেই কৃত্রিম বাঁধ যে কোনও সময় ফেটে গেলে বিশাল জলরাশি তীব্র গতিতে হড়পা বানের মতো নীচের দিকে নামতে পারে, এই আশঙ্কাতেই চিন সীমান্ত সংলগ্ন অরুণাচল ও অসমকে সতর্কবার্তা পাঠায় চিন।
অরুণাচলের টুটিং এলাকায় ভারতে ঢুকে ইয়ারলুং সাংপো নদীর নাম হয় সিয়াং। সিয়াংয়ের সঙ্গে পরে লোহিত, রঙানদী ও অন্য নদীর জল মিশে অসমের ধেমাজি পার করে সেই নদীই প্রবাহিত হয় ব্রহ্মপুত্র নামে। সেই কারণেই ইয়ারলুং সাংপোয় জলোচ্ছ্বাস হওয়ায় অরুণাচলের টুটিং থেকে পাসিঘাট হয়ে অসমের ধেমাজি, লখিমপুর, ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়া জুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়।
ধস নেমে এভাবেই আটকে যায় নদীর গতিপথ। ছবি: শিনহুয়া নিউজের টুইটার হ্যান্ডলের সৌজন্যে
আরও পড়ুন: মৃত্যু-আর্তনাদের মধ্যেও সেই রাতে লুঠ হয়েছিল হতাহতদের মোবাইল, টাকা, সোনাদানা!
চিনের সতর্কবার্তা পেয়েই ভারতেও তৎপরতা শুরু হয়। সিয়াংয়ের দুই পাড়ের লোকজনকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়। এনডিআরএফের ৮টি দল, সেনাবাহিনী, ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ-সহ নিরাপত্তা বাহিনী ও উদ্ধারকারী দল উজানি অসম ও অরুণাচলে মোতায়েন করা হয়েছে।
অন্যদিকে শুক্রবার রাত থেকেই পাসিঘাটে সিয়াংয়ের জল বাড়তে শুরু করে। দেখা দেয় ঢেউ। জল বিপদসীমার দিকে এগোয়। পূর্ব সিয়াং জেলা প্রশাসন জানায়, শনিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ স্বচ্ছ জলের স্রোত পাসিঘাটে পৌঁছয়। কিন্তু তার পরিমাণ যতখানি হবে ধরা হয়েছিল তার চেয়ে কম। জল ধেমাজি হয়ে ব্রহ্মপুত্রে পৌঁছয় সন্ধ্যায়।
A barrier lake has formed after a landslide hit the Yarlung Tsangpo River in SW China's Tibet on Wednesday morning. The safe evacuation of local residents is being carried out pic.twitter.com/5rtFXoANMG
— China Xinhua News (@XHNews) October 17, 2018
আরও পড়ুন: চিনে রাখুন: বার বার মৃত্যু ডেকে এনেছে এই বাদ্যযন্ত্রের সুর!
এই পরিস্থিতিতে শনিবার সন্ধ্যার দিকে চিনের তরফে স্বস্তির বার্তা আসে। বেজিং জানিয়েছে, শনিবার সকাল থেকে বাঁধ উপচে জল নীচে নামতে শুরু করে। সেই স্রোতের ধারায় প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হওয়া বাঁধের ওই মাটি-পাথরও নামতে শুরু করে। তারপর ধীরে ধীরে প্রায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে নদীর গতিপথ। তাই বড় কোনও বিপর্যয়ের আশঙ্কা নেই। এই বার্তার পরই স্বস্তি ফিরেছে অরুণাচল-অসমে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy