Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

খুলবে ব্রিটেন, বন্ধ শুধু ‘ছোট্ট ভারত’

অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে যখন গোটা দেশ ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে, প্রশাসনের রাতারাতি এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে শহরবাসীর মনে।

পারস্পরিক দূরত্ব রেখেই চলছে পার্লামেন্টের অধিবেশন। বক্তা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। মঙ্গলবার লন্ডনে। এপি

পারস্পরিক দূরত্ব রেখেই চলছে পার্লামেন্টের অধিবেশন। বক্তা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। মঙ্গলবার লন্ডনে। এপি

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২০ ০৩:৪৪
Share: Save:

আর দিন তিনেকের অপেক্ষা। ৪ জুলাই থেকে ইংল্যান্ডের বেশির ভাগ শহরেই আরও শিথিল হচ্ছে করোনা-লকডাউন। খুলছে পাব, রেস্তরাঁও। ছবিটা আলাদা শুধু লেস্টার শহরে। গত কাল রাত ৯টায় ব্রিটেনের স্বাস্থ্যসচিব ম্যাট হ্যানকক জানালেন, নতুন করে গুচ্ছ সংক্রমণ বাড়ার কারণে এখনই তালাবন্দি দশা কাটছে না বিপুল সংখ্যক ভারতীয় থাকা ব্রিটেনের এই শহরে। প্রাথমিক ভাবে আরও অন্তত দু’সপ্তাহ লকডাউন চালু থাকছে লেস্টার শহরে। অতিমারি-ত্রাসের আবহে ব্রিটেনে আঞ্চলিক স্তরে লকডাউন এই প্রথম বলে দাবি স্থানীয়দের। লেস্টার সংলগ্ন ওডবি, ব্রিস্টল ও গ্লেনফিল্ডের কিছু এলাকাতেও নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকছে।

অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে যখন গোটা দেশ ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে, প্রশাসনের রাতারাতি এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে শহরবাসীর মনে। ‘মিনি ইন্ডিয়া’ হিসেবে পরিচিত লেস্টারের বেলগ্রেফ রোড সংলগ্ন এলাকায় প্রচুর মিষ্টি এবং অলঙ্কারের দোকান রয়েছে ভারতীয়দের। প্রশাসনের নির্দেশ, এলাকার সব ‘নন-এসেনশিয়াল’ দোকান আজ থেকেই বন্ধ রাখতে হবে। ব্যবসায় ফের ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কায় এ নিয়ে আজ প্রতিবাদে নামেন মূলত গুজরাতি দোকানদারদের একাংশ।

প্রশাসনের দাবি, গত ১০ দিনের করোনা-পরীক্ষায় সংক্রমণের গ্রাফ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী লেস্টারে। বিশেষত শহরের শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ যে ভাবে বাড়ছে তা নিয়ে হ্যানককও কাল উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এখনও পর্যন্ত পাওয়া রিপোর্টে, সংক্রমিত শিশুদের পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হওয়ার তেমন ঝুঁকি নেই। তবু সংক্রমণ ঠেকাতেই আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শহরের সব স্কুল বন্ধ রাখা হচ্ছে। লেস্টার-বাসীদের যত বেশি সম্ভব ঘরে থাকারই নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। আগামী দু’সপ্তাহের পরিস্থিতি বিচার করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান দেশের স্বাস্থ্যসচিব।

বিশ্বে করোনা

মৃত
৫,১০,৯২৮

আক্রান্ত
১,০৫,০৯,৯৬৮

সুস্থ
৫৭,২৯,২০১

শুধু লেস্টারই নয়, গোটা ব্রিটেনে করোনা-সংক্রমণ ও তাতে মৃত্যুর হার দক্ষিণ-এশীয়দের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি। স্বাস্থ্য দফতরের একাংশের দাবি, দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবিটিসই বিপদ বাড়াচ্ছে। কেউ বলছেন, এঁরা যে-হেতু বৃহত্তর পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় থাকেন, তাই সংক্রমণের হারও এখানে অন্য শহরের তুলনায় বেশি। লেস্টারবাসীর একাংশ যদিও তাঁদের যাবতীয় বিপদের জন্য দুষছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রশাসনকেই। তাঁদের অভিযোগ, আর্থ-সামাজিক নানা বিষয়ের মতো করোনা-যুদ্ধেও দক্ষিণ-এশীয়দের জন্য কিছুই করেনি সরকার।

আরও পড়ুন: লক্ষ্য চিনা অর্থনীতিও, দাবি বালোচ জঙ্গিদের

সংবাদ সংস্থার খবর, ব্রিটেনে সার্বিক করোনা-ছবিও তেমন আশাপ্রদ নয়। সংক্রমণ ৩ লক্ষ ছাড়িয়েছে। মৃত প্রায় ৪৪ হাজার। মাঝখানে শোনা যাচ্ছিল, এডসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত লোপিনাভির এবং রিটোনাভিরের কম্বিনেশন ওষুধে ভাল সাড়া মিলছে করোনা-চিকিৎসায়। কিন্তু গত কাল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাদের রিকভারি ট্রায়ালের পরে জানিয়েছে, এই ওষুধে আদৌ তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। ট্রায়ালের জন্য ১৭৬টি হাসপাতাল থেকে প্রায় ১২ হাজার রোগীকে পাওয়া গিয়েছিল। ১৬০০ জনের উপর এই ওষুধ ব্যবহার করেই এই সিদ্ধান্তে এসেছে অক্সফোর্ড।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE