নব্বইয়ের নভেম্বরে সরে যেতে হয়েছিল তাঁকে। দেশের প্রথম এবং একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার পদত্যাগ করেছিলেন ২২ নভেম্বর, ১৯৯০। দু’দশক কেটে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর গদিতে আর কোনও মহিলাকে বসতে দেখেনি ব্রিটেন। ব্রেক্সিট আবার সেই সুযোগ করে দিল।
গণভোটের রায়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে আসছে ব্রিটেন। তার জেরেই প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের বিদায় আসন্ন। আর দেশের শাসক দল শেষমেশ নতুন প্রার্থী হিসেবে যে দু’জনের নাম বেছেছে, তাঁরা হলেন টেরিজা মে এবং আন্ড্রিয়া লিডসোম। কনজারভেটিভ পার্টির এই দুই নেত্রীর মধ্যেই এক জন হতে চলেছেন পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। কাল মন্ত্রীদের অভ্যন্তরীণ ভোটে গো হারান হেরে গিয়েছেন শেষ মূহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে নাম লেখানো ‘লিভ-পন্থী’ নেতা মাইকেল গোভ। মাত্র ৪৬টি ভোট পেয়েছেন তিনি। উল্টো দিকে টেরিজা পেয়েছেন ১৯৯টি ভোট আর আন্ড্রিয়া ৮৪টি। এ বার পালা মোট দেড় লাখ পার্টি সদস্যের। তাঁদের ভোটই নির্ধারণ করবে কার হাতে দায়িত্বভার তুলে দেবেন ক্যামেরন। ফল বেরোবে সেপ্টেম্বরের গোড়ায়।
কিছু দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড় থেকে নিজের নাম তুলে নিয়েছিলেন লন্ডনের প্রাক্তন মেয়র বরিস জনসন। তাঁর জায়গায় এসেছিল আর এক কনজারভেটিভ নেতা মাইকেল গোভের নাম। ওয়েস্টমিনস্টারে তখনই বলাবলি শুরু হয়েছিল, গোভই আসলে জনসনকে সরে আসতে বাধ্য করেছেন। কিন্তু কাল ভোটাভুটির ফল বেরোনোর পরে হতাশ গোভ। সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘‘হ্যাঁ, আমি সত্যিই হতাশ। তবে আশা করি, এর পর যিনি-ই এই পদে আসুন, তিনি দেশকে ঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবেন।’’
এর উল্টো ছবিটাই হল টেরিজা মে-র। ১৯৯টা ভোট পেয়ে আত্মবিশ্বাসী তিনি। ২০১০ সাল থেকে দেশের স্বরাষ্ট্র সচিবের পদ সামলাচ্ছেন ‘রিমেন-পন্থী’ এই নেত্রী। বুকিরা কিন্তু তাঁর পক্ষেই বাজি ধরছেন। আর তিনি নিজে কী ভাবছেন? ‘‘কয়েক জন সুবিধাভোগীর জন্য নয়। ব্রিটেন যাতে সব শ্রেণির মানুষের বসবাসযোগ্য হয়, সেই চেষ্টাই করব’’, বললেন টেরিজা। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মন্ত্রী প্রীতি পটেলও তাঁকেই সমর্থন করছেন বলে আজ জানিয়েছেন।
টেরিজার বিরুদ্ধে যাঁর নাম উঠে আসছে, সেই আন্ড্রিয়া লিডসোমকে অবশ্য কয়েক দিন আগেও দেশের মানুষ তেমন চিনতেন না। গণভোটের আগে ইইউ ছেড়ে আসার পক্ষে জোর সওয়াল করে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন বর্তমান শক্তি মন্ত্রী (জুনিয়র) লিডসোম। তাঁর সমর্থকরা অবশ্য বলছেন, তারকাদের নেতৃত্ব দিতে দেখতে দেখতে ব্রিটেনের মানুষ ক্লান্ত। তাই এখন অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত মুখই চাইছেন তাঁরা।
শেষ হাসি কে হাসবেন, তা অবশ্য জানা যাবে সেপ্টেম্বরের ৯ তারিখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy