Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

রহস্য-ভাইরাসে আতঙ্কে বেজিং, ফের মৃত্যুর খবর

আতঙ্কের বড় কারণ ‘সার্স’-এর ভয়াবহতা আগেও দেখেছে বিশ্বের সব চেয়ে জনবহুল এই দেশ।

স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর চিনের উহানে।—ছবি এএফপি।

স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর চিনের উহানে।—ছবি এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
বেজিং শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৪১
Share: Save:

পাঁচ দিনের মধ্যে ফুসফুসে যক্ষ্মার সংক্রমণ। তার পরেই একাধিক অঙ্গ বিকল। সবশেষে মৃত্যু। এক রহস্যময় ভাইরাসের হানায় এ ভাবেই চিনে প্রাণ হারিয়েছেন দু’জন। আক্রান্ত আরও বহু মানুষ। ইতিমধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে চিনে।

প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বুধবার মধ্য চিনের উহানে ৬৯ বছর বয়সি এক ব্যক্তি মারা গিয়েছেন ওই ভাইরাসের হানায়। এই অঞ্চলটিকেই ‘সার্স’ (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরাটরি সিন্ড্রোম)-এর জীবাণু সংক্রমণের ‘এপিসেন্টার’ বা উৎসস্থল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আতঙ্কের বড় কারণ ‘সার্স’-এর ভয়াবহতা আগেও দেখেছে বিশ্বের সব চেয়ে জনবহুল এই দেশ। ২০০২ থেকে ২০০৩ সালে চিনের মূল ভূখণ্ডে ৩৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। হংকংয়ে মারা যান আরও ২৯৯ জন। এ বারে ইতিমধ্যেই ৪১ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। নিউমোনিয়া ও তার সঙ্গে এই ভাইরাসে জোড়া আক্রমণ। উহানের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, চিকিৎসায় সাড়া দিয়েছেন ১২ জন। তাঁরা হাসপাতাল থেকে ছাড়াও পেয়েছেন। কিন্তু ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সর্বশেষ যিনি মারা গিয়েছেন, তাঁর রোগ ধরা পড়েছিল গত বছর ৩১ ডিসেম্বর। পাঁচ দিনের মধ্যেই অবস্থার ভয়াবহ অবনতি ঘটে। ফুসফুসে যক্ষ্মা বা টিবি-র সংক্রমণ। শেষে শরীরের একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে মৃত্যু।

তাইল্যান্ড ও জাপান থেকেও এই ভাইরাস সংক্রমণের খবর মিলেছে। কিন্তু দু’দেশের ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, আক্রান্তেরা সম্প্রতি চিনের উহান প্রদেশে গিয়েছিলেন। উহান প্রশাসনের সন্দেহ, সি-ফুড বাজার থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও মানুষের থেকে অন্য মানুষের শরীরে সংক্রমণের জোরদার প্রমাণ মেলেনি। যদিও এই আশঙ্কা এখনই উড়িয়ে দিতে রাজি নয় প্রশাসন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-র এক চিকিৎসক যেমন জানিয়েছেন, যদি সামান্য কিছু মানুষের থেকে অন্য মানুষের দেহে সংক্রমণের ঘটনা জানা যায়, সেটা খুব অবিশ্বাস্য হবে না। বিশেষ করে একই পরিবারের সদস্যের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতেই পারে। যেমন, ভাইরাস আক্রান্ত একটি লোক সি-ফুড হোলসেল মার্কেটে কাজ করতেন বলে জানা গিয়েছে। সেখান থেকেই তাঁর সংক্রমণ হয়েছে বলে চিকিৎসকদের অনুমান। কিন্তু তাঁর স্ত্রী ওই বাজারে কাজ না করলেও, একই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তিনিও। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, রহস্যময় ভাইরাসটি করোনাভাইরাস পরিবারের হতে পারে। এই ভাইরাসেরা কখনও কখনও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। সামান্য সর্দিজ্বরকে ‘সার্স’ বা ‘সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরাটরি সিন্ড্রোম’-এর মতো ভয়াবহ রোগে রূপান্তরিত করতে পারে।

‘সার্স’-এর খবর প্রথম মিলেছিল ২০০২ সালে, দক্ষিণ চিনে। এর পরে পৃথিবীর অন্তত ৩৭টি দেশ থেকে আট হাজার মানুষের আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলে। ৮০০ লোক মারা গিয়েছেন ‘সার্স’-এ। এক সময়ে ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে আনার ‘সুখবর’ দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। নয়া রিপোর্টে নতুন করে চিন্তায় চিন প্রশাসন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health China SARS coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE