ডেনিস বুকানন। ছবি: এএফপি।
বয়স তখন সতেরোর বেশি নয়। সেই শুরু। তার পর থেকে টানা আট বছর ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ডেনিস বুকানন। দু’বার অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন। প্রথম বার হাসপাতালের অন্ধকার ঘরে নিয়ে গিয়ে তাঁর গর্ভপাত করিয়েছিলেন ব্রাদার পল। দ্বিতীয় বারেও সেই এক লোক। তখন যদিও তিনি ফাদার পল!
না, ত্রাতা হয়ে নয়। ডেনিস বলছেন, ‘‘ওই লোকটা আমায় শেষ করে দিয়েছে। আটটা বছর আমি শুধু রোবটের মতো নির্দেশ পালন করে গিয়েছি। ভয়ে বাড়িতেও কিছু বলতে পারিনি। কিন্তু আর নয়।’’
ডেনিস এখন ৫৭। বহু দিন হল জামাইকা থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে থাকছেন আমেরিকায়। লস অ্যাঞ্জেলেসের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান। এর পাশাপাশি তিনি মুখ খুলছেন যাজকদের একাংশের নোংরামো নিয়েও। বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন গির্জায় শোষণের শিকার এক ঝাঁক মেয়েকে নিয়ে তিনি এসেছেন রোমে। পোপ ফ্রান্সিসের কাছে বিচার চাইতে। কিন্তু নিজে কি বিচার পেয়েছেন? দীর্ঘ প্রায় তিন দশকের অবসাদ পেরিয়ে আসা ডেনিস বললেন, ‘‘সব জানিয়ে নানা জায়গায় চিঠি লিখেছি। বছর তিনেক আগে লস অ্যাঞ্জেলেসের এক গির্জা থেকে চিঠি পেলাম। তাতে লেখা ছিল— পোপ আমাদের জন্য নিয়মিত প্রার্থনা করছেন।’’
‘সিন্স অব ফাদার্স’ নামে ২০১৩ সালে একটি বই লিখেছিলেন ডেনিস। তবু হুঁশ ফেরেনি কর্তৃপক্ষের। তাই তিনি ফের অতীত ঘাঁটতে বসেছেন। গির্জা সংলগ্ন যে ঘরে পল থাকতেন, সেখানেই তাঁকে প্রথম বার ধর্ষিতা হতে হয় বলে জানান ডেনিস। তার পর থেকে চলতেই থাকে। ডেনিস যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, তখনও সপ্তাহে অন্তত এক বার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে এসে থাবা বসিয়ে গিয়েছেন পল। তখন কিন্তু তিনি ফাদার!
তার পর পঁচিশে পৌঁছে কানাডায় চলে আসেন ডেনিস। বিয়েও করেন। বিয়েটা টেকেনি। আর সন্তানধারণ যে অসম্ভব, সেটা ২১ বছরে দ্বিতীয় গর্ভপাত করাতে গিয়েই টের পান তিনি। আজ অবশ্য চোয়াল শক্ত রেখেই বলছেন, ‘‘দু’বছর আগে উকিল নিয়ে গিয়েছিলাম কিংস্টনে। সহবাসের কথা স্বীকার করলেন পল। কিন্তু ধর্ষণের কথা বেমালুম উড়িয়ে দিলেন। গর্ভপাতের কথাও মানলেন না। কিন্তু এ বার এর শেষ দেখে ছাড়ব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy