সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি।
ভারতের হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব শেষ করে এ মাসের ১৯ তারিখে দিল্লি থেকে ঢাকায় ফিরেছিলেন তিনি। ২৪ তারিখে শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হন। ধরা পড়ে নিউমোনিয়া। সোমবার সকালে ঢাকার সম্মিলিত সেনা হাসপাতালে মারা গেলেন সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি। বয়স হয়েছিল ৭৫।
হাইকমিশনার হিসেবে দিল্লি ও কলকাতায় খুবই জনপ্রিয় ছিলেন মোয়াজ্জেম আলি। কাকা সৈয়দ মুজতবা আলির রস-সাহিত্যের ঝলক দেখা যেত তাঁর বক্তৃতা থেকে একান্ত আলাপে। দিল্লিতে ঢাকাই কচ্চি বিরিয়ানির উৎসব শুরু করে দ্বিপাক্ষিক কূটনীতিতেও নতুন রসের সঞ্চার করেছিলেন মোয়াজ্জেম। নিজেকে সিলেটের সন্তান বলে উল্লেখ করতে গর্ব বোধ করতেন তিনি। ১৯৪৪-এ জন্ম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণীবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাওয়ার পরে ১৯৬৮-তে তৎকালীন পাকিস্তানের ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন মোয়াজ্জেম। ১৯৭১-এ ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত অবস্থায় বিদ্রোহ ঘোষণা করে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেন। এর পরে তাঁর উদ্যোগেই ওয়াশিংটনে গড়ে ওঠে বাংলাদেশের দূতাবাস। কর্মজীবনে ভুটান, ইরান ও ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জে স্থায়ী প্রতিনিধি থাকাকালীন তাঁর উদ্যোগেই ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ভাষাদিবস আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পায়। এর কৃতিত্ব অবশ্য তিনি ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা’কে দিয়ে বলতেন, ‘‘আমি তাঁর নির্দেশ পালন করেছি মাত্র।’’
বিদেশসচিব হিসাবে অবসর নেন ২০০১-এ। তার ১৩ বছর পরে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়ে তাঁকেই ডেকে পাঠিয়ে ভারতে হাই কমিশনারের দায়িত্ব দেন। পাঁচ বছরে দুই দেশের সম্পর্ক যে উচ্চতায় পৌঁছেছিল, সে কাজে তাঁর অবদানও ছিল যথেষ্ট। মোয়াজ্জেমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি মোহম্মদ আব্দুল হামিদ বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশের কূটনৈতিক ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি হল।’’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিএমএইচ হাসপাতালে গিয়ে মোয়াজ্জেম আলিকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর টুইটে বলেন, ‘মোয়াজ্জেম আলি আমার বন্ধু এবং আমার মতো অনেকেরই ঘনিষ্ঠ সাথী ছিলেন। আমি মর্মাহত।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy