বিভ্রাট: মাইকেলের তাণ্ডবে উপড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। শুক্রবার ফ্লরিডার পানামা সিটিতে। ছবি: এএফপি।
যেন শক্তিশালী একটা বোমা আছড়ে পড়েছে ফ্লরিডার সৈকত-শহরটিতে। মাইকেলের দাপটে এ ভাবেই প্রায় মুছে গিয়েছে ছবির মতো সাজানো ফ্লরিডা প্যানহ্যান্ডেল। দেখে মনে হচ্ছে, ইট-কাঠ-পাথরের ধ্বংসস্তূপ।
ক্ষয়ক্ষতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। এখনও পর্যন্ত ওই ঝড়ে মৃতের সংখ্যা ১২। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
বুধবার দুপুরে ফ্লরিডা প্যানহ্যান্ডেলে আছড়ে পড়েছে ক্যাটেগরি-৪ হারিকেন মাইকেল। তবে জর্জিয়া, ক্যারোলাইনা ও ভার্জিনিয়ার দিকে ঝড় যত এগিয়েছে, ততই কমেছে তার শক্তি। ঝোড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়েছে সেখানকার জনজীবন। বৃহস্পতিবার শক্তি কমিয়ে মাইকেল ক্রান্তীয় ঝড়ে পরিণত হয়েছে। শুক্রবার সকালেও ফ্লরিডা থেকে ভার্জিনিয়ার প্রায় ১৫ লক্ষ বাড়ি ও অফিস বিদ্যুৎহীন। ফ্লরিডার পানামা সিটির মতো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিদ্যুৎ আসতে প্রায় এক সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে বলে আশঙ্কা।
তবে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফ্লরিডা প্যানহ্যান্ডেল। প্রতি ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে ঝড়টি বয়ে গিয়েছে। যার দাপটে মাত্র এক হাজার মানুষের বাসস্থান ওই ছোট্ট শহরতলিটা পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আকাশ থেকে তোলা ছবিতে দেখা গিয়েছে, রাস্তায় পড়ে রয়েছে গাছপালা ও বিদ্যুতের তার, উল্টে পড়ে রয়েছে গাড়ি, নৌকাগুলো উল্টেপাল্টে এক জায়গায় জড়ো হয়েছে। ভেঙে পড়েছে ঘরবাড়ি। গোটা শহরটাই এখন জনমানবশূন্য যুদ্ধক্ষেত্র যেন। ওই ধ্বংসস্তূপে প্রাণের সন্ধান পাওয়ার আশায় কুকুর, ড্রোন এবং গ্লোবাল পজিশনিং স্যাটেলাইটের সাহায্য নিচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। এ ছাড়াও ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যবহার করা হচ্ছে অত্যন্ত ভারী যন্ত্রপাতি।
উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে নৌসেনা, যেমনটা ফ্লোরেন্সের সময়েও করেছিল তারা। হেলিকপ্টারে উদ্ধারে নেমে শিউরে উঠছেন উদ্ধারকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, তছনছ হয়ে গিয়েছে জায়গাটা। এক উদ্ধারকারীর বক্তব্য, ‘‘উপর থেকে দেখে মনে হচ্ছে, যেন একটা বোমা পড়েছে।’’ গত মাসে হারিকেন ফ্লোরেন্সের সময়েও উদ্ধারকাজে নেমেছিলেন তিনি।
মাইকেলের লেজের ঝাপটায় ভার্জিনিয়ায় বন্যায় ভেসে গিয়েছেন চার জন। মৃত্যু হয়েছে এক দমকলকর্মীরও। গাল্ফ কোস্ট রিজিওনাল মেডিক্যাল সেন্টারেই ভেঙে পড়েছে ছাদ, গুঁড়িয়ে গিয়েছে জানলাগুলি। বিদ্যুৎহীন হাসপাতালের ভরসা এখন শুধু জেনারেটর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy