একদিকে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগে বড় মাপের আর্থিক নিষেধাজ্ঞার খাঁড়া। অন্য দিকে আমেরিকার চাপ। আন্তর্জাতিক স্তরে পাকিস্তানের এমন কোণঠাসা অবস্থার মধ্যেই আগামিকাল সে দেশের বিদেশসচিব তেহমিনা জানজুয়ার সঙ্গে একটি বহুপাক্ষিক মঞ্চে সাক্ষাৎ হওয়ার কথা ভারতের নবনিযুক্ত বিদেশসচিব বিজয় গোখলের। সূত্রের খবর, আনুষ্ঠানিক কোনও বৈঠক না হলেও দু’দেশের বিদেশসচিবের মধ্যে
বর্তমান দ্বিপাক্ষিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা হতেও পারে।
আগামিকাল ভারত এবং পাকিস্তান-সহ পঁচিশটি দেশকে নিয়ে শুরু হচ্ছে কাবুল কনফারেন্স। আজই কাবুলে পৌঁছেছেন ভারতের বিদেশসচিব। আফগানিস্তানের পুনর্গঠন, শান্তিপ্রক্রিয়া এগোনো, তালিবান সংগঠনগুলির সঙ্গে আলাপ আলোচনা নিয়ে কৌশল তৈরি হবে ওই সম্মেলনে। আমেরিকার পক্ষ থেকে ঘোষিত বিবৃতিতে আফগানিস্তান প্রশ্নে ভারতকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে বলার পরে সেখানকার আঞ্চলিক রাজনীতির অভিমুখ কিছুটা বদলেছে। পিছনের পায়ে চলে গিয়েছে এত দিন সেখানে নির্বিচারে ছড়ি ঘোরানো ইসলামাবাদ। কাবুল কনফারেন্স নিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘আফগানিস্তানে শান্তি ও সুস্থিতি ফেরাতে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক — দু’রকমের উদ্যোগেই ভারত সামিল হতে চলেছে।’’ পাকিস্তানের নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘এই কনফারেন্সের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশগুলি কিছুটা বুঝতে পারবে যে এই অঞ্চলে প্রতিবেশী দেশগুলি কী ভাবে সন্ত্রাস রফতানি করে।’’ ভারত যে তার আফগান-নীতিকে ঢেলে সাজতে চাইছে, তা আরও স্পষ্ট করতে সে দেশে নতুন একজন রাষ্ট্রদূতকে নিয়োগ করা হবে। সূত্রের খবর, বিদেশ মন্ত্রকের যুগ্মসচিব বিনয় কুমারকে খুব শীঘ্রই কাবুলে দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হবে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, গত সপ্তাহেই পাক বিদেশসচিবের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছেন আমেরিকার দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর লিজা কার্টিস। সূত্রের খবর, ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক কিছুটা উন্নত করে আঞ্চলিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য পাকিস্তানকে চাপ দিয়েছেন লিজা।
আমেরিকার এই চাপের সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে সন্ত্রাসে মদতের অভিযোগে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)-এর পক্ষ থেকে বড় মাপের আর্থিক নিষেধাজ্ঞার খাঁড়া। চাপের মুখে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নিজেদের ভাবমূর্তি পরিচ্ছন্ন করে তুলে ধরতে পাকিস্তানও এখন নতুন করে আলোচনার দরজা খুলতে চাইছে ভারতের সঙ্গে।
নরেন্দ্র মোদী সরকারও প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কের সুতো একেবারে কেটে দিতে চাইছে না। শীর্ষ পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক না করলেও আলোচনার সূত্র ধরে রাখতে আগ্রহী তারা। গত ডিসেম্বরেই দু’দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার মধ্যে তাইল্যান্ডে গোপন বৈঠক হয়। দু’সপ্তাহ পরে সংবাদমাধ্যম সে কথা জানতে পারে। এ ছাড়াও ট্র্যাক টু-র মাধ্যমে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা চেষ্টাও হচ্ছে প্রচারমাধ্যমের আড়ালে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy