Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ফেসবুকে মেয়ে আর ডলারের টোপ দিয়ে রিক্রুট করছে আইএস

কোনও আদর্শ নয়। কোনও বিশেষ ধর্মীয় মতাদর্শে গভীর বিশ্বাসও নয়। কোনও ‘জিহাদি’র প্রতিজ্ঞা নয়। ফেসবুকে মেয়ে আর ডলারের টোপ দিয়ে রিক্রুট হচ্ছে আইএসে।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৫ ১৮:২৬
Share: Save:

কোনও আদর্শ নয়। কোনও বিশেষ ধর্মীয় মতাদর্শে গভীর বিশ্বাসও নয়। কোনও ‘জিহাদি’র প্রতিজ্ঞা নয়।

শুধুই সুন্দরী, ধনী সিরীয় মহিলার টোপ। বিয়ের হাতছানি। বা, খুব সহজে বহু সিরীয় মহিলার সঙ্গে যৌন সংসর্গের প্রস্তাব। সঙ্গে প্রচুর প্রচুর ডলারের টোপ। বিলাসবহুল জীবনের হাতছানি। ওই সব টোপ বা প্রস্তাব দেওয়ার জন্য বেছে নেওয়া হচ্ছে ফেসবুক, টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়াগুলিকে।

খুব সস্তায় বাজিমাত করতে চায় ইসলামিক স্টেট (আইএস)!

বহু লোকজন দরকার আইএসের। যাদের ‘জঙ্গি’ বানানো হবে। তার জন্য আইএসের টার্গেট মূলত ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি। সেখান থেকেই বেশির ভাগ রিক্রুট করে আইএস।

ওই ফাঁদে যে পা বাড়াল, প্রথমে তার মনে হয়, তার মতো ভাগ্যবান এই দুনিয়ায় আর কেউ নেই! একেবারে কর্পোরেট কেতায় রিক্রুট করে আইএস। কেউ মনোনীত হলে, এজেন্ট মারফত তার হাতে সিরিয়া যাওয়ার জন্য বিমানের টিকিট ধরিয়ে দেওয়া হয়। ‘বিজনেস ক্লাসে’। বাড়ি থেকে বেরিয়ে সেই মনোনীতকে সিরিয়ায় নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্য যে যে পথে যেতে হবে, যেখানে যেখানে থাকতে হবে, তার যাবতীয় খরচও তাকে দিয়ে দেওয়া হয়। দেওয়া হয় বিনা মূল্যে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপের মতো যোগাযোগের কিছু জরুরি ইলেকট্রনিক গ্যাজেটস। ভিসা, পাসপোর্ট সব কিছুর বন্দোবস্ত করে দেওয়া হয় মুখ থেকে কথা বেরনোর আগেই।

তার পর সিরিয়ায় আইএসের প্রশিক্ষণ শিবিরে নিয়ে গিয়ে তোলা হয় তাকে। শুরু হয় ‘শিক্ষাদান’! যাকে বলে শিক্ষা! আচার-আচরণ-অস্ত্র চালনা, আত্মরক্ষার উপায়, আত্মঘাতী হওয়ার উপায়, সব কিছুই। সেই ‘কোর্সে’র নির্দিষ্ট মেয়াদ রয়েছে। সেই মেয়াদ ফুরলেই আইএসের ট্রেনিং স্কুল থেকে তাকে গ্র্যাজুয়েশনের সার্টিফিকেট নিতে হয়। দু’রকম সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। জঙ্গি হিসেবে। আর আত্মঘাতী জঙ্গি হিসেবে। এর মানে, সকলকেই আত্মঘাতী জঙ্গির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না। ওই সার্টিফিকেট হাতে এলেই কোনও এক সুন্দরী, ধনী সিরীয় মহিলার সঙ্গে তাকে খাতায় কলমে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়।

মুম্বইয়ের ২৩ বছর বয়সের আরিব ফইয়াজ মাজিদ গত বছর ওই ফাঁদে পড়েই গিয়েছিল সিরিয়ায়। লুকিয়ে সদ্যই ফিরে এসেছে ভারতে। সাংবাদিকদের জানিয়েছে তার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার কথা।

আরিব জানিয়েছে, ‘‘আইএসের ট্রেনিং স্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েশনের পর পরই এক জন সুন্দরী, ধনী সিরীয় মহিলা ফেসবুকে পোস্ট করে জানিয়ে দেয়, তার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ওই পোস্ট দেখেই জানতে পারি, আমার বিয়ে হয়ে গিয়েছে! ওই মহিলাকে আমি প্রশিক্ষণ চলার সময় বহু বার দেখেছি। ওই মহিলা আমার চেনা এক জনের মাধ্যমে আমার টেলিফোন নম্বর জানতে চায়। আমাকে ওই মহিলার বাড়ির ঠিকানা দিয়ে তার বাড়িতে যেতে বলা হয়। আমি ভারতে পালিয়ে আসার চেষ্টা করতে শুরু করি তখন থেকেই। কোনও আদর্শ নয়, আমি দেখেছি, সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিরা কী ভীষণ অত্যাচার চালায় মহিলাদের ওপর!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

is dollar recruit women girls
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE