অভিযুক্ত: জঁ-ক্লদ আর্নো
আশঙ্কাটা দেখা দিয়েছিল গত সপ্তাহেই। সেটাই সত্যি হল শুক্রবার সকালে। নজিরবিহীন ভাবে এ বছর নোবেল সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা করা হবে না বলে জানিয়ে দিল সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
নোবেল সাহিত্য অ্যাকাডেমির প্রাক্তন সদস্য, কবি ক্যাটরিনা ফ্রস্টেনসনের স্বামী এবং ফরাসি চিত্রগ্রাহক জঁ-ক্লদ আর্নোর বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় চলছে বেশ কিছু দিন ধরেই। আর্নোকে নিয়ে বিতর্ক ওঠায় গত বছর নভেম্বর থেকে মোট ৮ জন সদস্য অ্যাকাডেমি থেকে পদত্যাগ করেছেন। প্রথমে পদত্যাগ করেন তিন জন। তার পর আর্নোর স্ত্রী, কবি ক্যাটরিনা ফ্রস্টেনসনের পদত্যাগের দাবি ওঠে। তিনি পদত্যাগ না করায় এ বছর এপ্রিলে আরও তিন সদস্য ইস্তফা দেন। পরের সপ্তাহেই ক্যাটরিনা ও অ্যাকাডেমির স্থায়ী সচিব সারা দানিউস পদত্যাগপত্র জমা দেন। অ্যাকাডেমির ১৮ সদস্যের জুরির মধ্যে ১২ জনের অনুমোদন লাগে পুরস্কার ঘোষণা করতে। এখন মাত্র ১০ সক্রিয় সদস্য থাকায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না।
হলিউডের প্রাক্তন প্রযোজক হার্ভি ওয়াইনস্টেইনের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা নিয়ে যে ভাবে মহিলারা মুখ খুলতে শুরু করেছিলেন, খানিকটা সেই ছায়া দেখা গিয়েছে আর্নোর ক্ষেত্রেও। একাধিক হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল আর্নোর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি জানা যায়, ২০০৬ সালে সুইডিশ রাজকুমারি ভিক্টোরিয়াকেও অশালীন ভাবে ছুঁয়েছিলেন তিনি। শুধু যৌন হেনস্থা নয়, প্রাক্তন সাত নোবেলজয়ীর নাম ফাঁস করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছিল আর্নোর বিরুদ্ধে। আর্নো সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
গত কাল এক বৈঠকের পরে অ্যাকাডেমি জানিয়েছে, এই মুহূর্তে সংস্থার ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাধারণ মানুষের কাছে আস্থা হারাতে বসেছে কমিটি। তাই অ্যাকাডেমির অন্তর্বর্তী সচিব অ্যান্ডার্স ওলসন বলেছেন, ‘‘সুইডিশ অ্যাকাডেমির সক্রিয় সদস্যরা বুঝতে পারছেন, এই পরিস্থিতিতে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে, তার দ্রুত পরিবর্তন হওয়া দরকার। আর সেটা করতে হলে প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি জোরদার কাজ। তাই সাহিত্যে পরবর্তী নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণার আগে জন-আস্থা ফেরাতে সেই কাজটিতেই মনোনিবেশ করতে চাই আমরা। নোবেল ফাউন্ডেশন, সাধারণ মানুষ এবং অতীত ও ভবিষ্যতের নোবেলজয়ীদের সম্মানের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত।’’ তাই ১৯৪৯ সাল থেকে চলে আসা নিয়মের এই প্রথম ব্যতিক্রম ঘটাচ্ছে অ্যাকাডেমি। তারা জানিয়েছে, এ বছর সাহিত্যে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা না করে তা জানানো হবে ২০১৯ সালে। আগামী বছর দুই নোবেলজয়ীর নাম একসঙ্গে ঘোষণা করার সিদ্ধান্তই নিয়েছে সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
১৯০১ সালে শুরু হওয়া নোবেল পুরস্কার ঘোষণায় ছেদ পড়েছিল সাত বার। তবে কোনও কেলেঙ্কারির জন্য নোবেল ঘোষণা বন্ধ থাকার ঘটনা এই প্রথম ঘটল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy