Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

হ্যানয় বৈঠক ব্যর্থ বলেই কি দূতকে ‘মেরেছেন’ কিম

আমেরিকায় উত্তর কোরিয়ার বিশেষ দূত কিম হিয়োক চোল।—ছবি রয়টার্স।

আমেরিকায় উত্তর কোরিয়ার বিশেষ দূত কিম হিয়োক চোল।—ছবি রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
সোল শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৯ ০২:১৬
Share: Save:

অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ভিয়েতনামের হ্যানয়ে আলোচনার টেবিলে বসেছিলেন দুই রাষ্ট্রনেতা। ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কিম জং উনের সেই বৈঠক অবশ্য ভেস্তে গিয়েছিল মাঝপথেই। দক্ষিণ কোরিয়ার একটি দৈনিকের দাবি, সেই বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার কারণে আমেরিকায় উত্তর কোরিয়ার বিশেষ দূতকে ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে মেরেছে কিম জং উনের সরকার। ওই সংবাদমাধ্যমের আরও দাবি, একই সঙ্গে মেরে ফেলা হয়েছে, কিমের বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে যুক্ত চার কর্তাকে। দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার অবশ্য এ বিষয়ে মুখ খোলেনি। ফলে খবরটি আদৌ সত্যি না ভুয়ো, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।

কিম হিয়োক চোল। হ্যানয়ের বৈঠকের যাবতীয় প্রস্তুতি করেছিলেন সরাসরি কিমের নিয়োগ করা এই আধিকারিকই। দক্ষিণ কোরীয় দৈনিকটি তাদের রিপোর্টে দাবি করেছে, দু’দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়তে গিয়ে ওয়াশিংটনের বিশেষ আস্থাভাজন হয়ে উঠছিলেন চোল। যা উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম একেবারেই ভাল চোখে দেখেননি। বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় গোটা দায় তাই তিনি চোলের উপরেই চাপান। মার্চের কোনও এক সময়ে পিয়ংইয়্যাংয়ের মিরিম বিমানবন্দরে চোলের সঙ্গেই মেরে ফেলা হয় বিদেশ মন্ত্রকের আরও চার আধিকারিককে। তবে তাঁদের নাম জানা যায়নি।

দেশদ্রোহ অথবা সরকার-বিরোধী কাজের অভিযোগে সরকারি আধিকারিকদের মেরে ফেলার খবর উত্তর কোরিয়ায় নতুন কিছু নয়। ২০১৩ সালে ষড়যন্ত্রী সন্দেহে নিজের পিসেমশাইকে কিম হিংস্র কুকুরের মুখে ফেলে দিয়েছিলেন বলে শোনা যায়। ২০১৬ সালে একটি বৈঠকে বক্তৃতা চলাকালীন তাঁর সামনে ঘুমিয়ে পড়ার জন্য প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন কিম। তবে সরকারি ভাবে কখনওই উত্তর কোরিয়া এই ধরনের কোনও খবর স্বীকার করেনি। যদিও দক্ষিণ কোরিয়ার ওই দৈনিকে কিম প্রশাসনের দুই শীর্ষ পদাধিকারীর মৃত্যুদণ্ডের খবর প্রকাশিত হয়েছিল। অনেকে বলেন, ‘ভুয়ো’ বলে প্রমাণিতও হয়েছিল সেই প্রতিবেদন।

গত ফেব্রুয়ারির বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্টই প্রথম বৈঠক ছেড়ে মাঝপথে বেরিয়ে এসেছিলেন। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে তাঁদের সমস্ত দাবি উত্তর কোরিয়ার পক্ষে মানা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছিলেন কিম। পাল্টা ট্রাম্পও জানিয়ে দেন, পিয়ংইয়্যাংয়ের দাবি মেনে সমস্ত আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তোলা ওয়াশিংটনের পক্ষেও সম্ভব না। ওই দৈনিকের রিপোর্ট, ‘নো ডিল’ বলে ট্রাম্প যখন বৈঠক ছেড়ে সে দিন বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন কিম তাঁর নিজের ভাষায় কিছু বলে তাঁকে আটকাতে চেয়েছিলেন। উত্তর কোরিয়ার তরফে যে অনুবাদক তখন সেখানে হাজির ছিলেন, সেই শিন হিয়ে ইয়ং নাকি কিমের সেই বার্তা মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে দ্রুত পৌঁছে দিতে পারেননি। সেই জন্য একটি জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে তাঁকে। বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরে উত্তর কোরিয়ার বিদেশমন্ত্রী কিম ইয়ং চোলকেও দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেছে দৈনিকটি।

সোলের যে মন্ত্রক দুই কোরিয়ার সম্পর্ক দেখাশোনা করে, সরকারি ভাবে এই রিপোর্টটি নিয়ে তারা মুখ খোলেনি। তবে মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো বার্লিনে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘আপনারা যে রিপোর্টের কথা বলছেন, সেটা আমাদেরও নজরে এসেছে। এই খবর আদৌ সত্যি কি না, তা যাচাইয়ের চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE