Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নোত্র দাম গির্জা বন্ধ থাকবে পাঁচ বছর, পুনর্নির্মাণে দিশা দেখাচ্ছেন প্রয়াত গবেষক

ভ্যাসার কলেজের শিল্পকলার এই শিক্ষক ২০১৫ সালে লেজ়ার রশ্মির সাহায্যে গথিক কাঠামোটির প্রায় হুবহু ডিজিটাল প্রতিলিপি বানিয়েছিলেন। গথিক স্থাপত্য নিয়ে গবেষণা করেছিলেন ট্যালন।

অ্যান্ড্রু ট্যালন। ফাইল চিত্র

অ্যান্ড্রু ট্যালন। ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
প্যারিস শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৫৩
Share: Save:

সাড়ে আটশো বছরেরও বেশি পুরনো স্থাপত্য পুড়ে ছাই নিমেষে। নিশ্চিহ্ন নোত্র দাম ক্যাথিড্রালের প্রধান মিনার। ভস্মীভূত ছাদ। তবু ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তাকে পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন দেখছে গোটা বিশ্ব। সৌজন্যে এক মার্কিন ইতিহাসবিদ, অ্যান্ড্রু ট্যালন।

ভ্যাসার কলেজের শিল্পকলার এই শিক্ষক ২০১৫ সালে লেজ়ার রশ্মির সাহায্যে গথিক কাঠামোটির প্রায় হুবহু ডিজিটাল প্রতিলিপি বানিয়েছিলেন। গথিক স্থাপত্য নিয়ে গবেষণা করেছিলেন ট্যালন। ৩০০ ফুট উঁচু মিনার, ১২ টনের ইমানুয়েল (বড় ঘণ্টা), সিসার নকশা, ১৩০০ গাছ থেকে তৈরি ছাদ-কড়ি-বরগা— মধ্যযুগের শিল্পীরা কী ভাবে ওই প্রকাণ্ড ক্যাথিড্রাল তৈরি করেছিলেন, সে নিয়ে দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন। ক্যাথিড্রালের ৫০টি পৃথক স্থানে ট্রাইপড বসিয়ে লেজ়ার রশ্মি চালিয়ে মানচিত্র বানিয়েছিলেন।

ব্রেন ক্যানসারে আক্রান্ত ট্যালন গত বছর নভেম্বরে মারা যান। কিন্তু তাঁর তৈরি করে যাওয়া ডিজিটাল মডেলই এখন ক্যাথিড্রাল পুনর্নির্মাণের অন্যতম পথ। কারণ ক্যাথিড্রালে সূক্ষ্ম-সূক্ষ্ম কারুকাজ ধরা আছে ট্যালনের মানচিত্রে। স্থাপত্যকীর্তি নির্মাণ বিষয়ক একটি সংস্থা ‘স্টিরিয়ো’-র অন্যতম কর্তা ড্যান এডলেসন বলেন, ‘‘পুনর্নির্মাণ সংক্রান্ত কোনও প্রশ্ন থাকলে, কিংবা কী ভাবে ক্যাথিড্রালটি বানানো হয়েছিল তা জানতে চাইলে, ওই প্রতিলিপি দেখা উচিত। প্রতিটি ছোট ছোট নকশা, তার মাপ, বিশদে রয়েছে প্রতিলিপিটিতে।’’ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সাতশো বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে ক্যাথিড্রালের নকশায় রূপান্তর করা হয়েছে। যার ফলে ওর স্থাপত্য ইতিহাস বেশ জটিল। কেন ওই সব রূপান্তর করা হয়েছিল, থ্রি-ডি লেজ়ার স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে ট্যালন তা ‘তদন্ত’ করে দেখেছিলেন। তাঁর গবেষণাপত্রে এ ছাড়াও বহু অজানা তথ্য রয়েছে।

মারা যাওয়ার আগে একটি সাক্ষাৎকারে ট্যালন জানিয়েছিলেন, নোত্র দাম ক্যাথিড্রালের সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। ২০১৭ সালে একটি ভিডিয়োয় তিনি বলেছিলেন, ‘‘ক্রমাগত জল পড়ে পাথরে ক্ষয় ধরেছে, কালের নিয়মে ক্যাথিড্রালের গায়ের মূর্তিগুলো নষ্ট হয়েছে, কাঠের তৈরি ছাদের কিছু অংশ উধাও।’’ প্রিয় নোত্র দামের সংস্কারের জন্য অর্থ জোগাড় করতে একটি তহবিল তৈরি করেছিলেন ট্যালন, ‘ফ্রেন্ডস অব নোত্র দাম দ্য প্যারিস ইন আমেরিকা’। বলতেন, ‘‘একটানা জল লেগে, দূষণ সহ্য করে ওরা ভাল নেই। ওদের একটু যত্ন প্রয়োজন... একটু নজর দিন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE