Advertisement
১১ মে ২০২৪
Chinese President Xi Jinping

সেনাকে যুদ্ধ প্রস্তুতির নির্দেশ দিলেন চিনফিং

তার পর থেকেই শুরু হয়েছে নানা জল্পনা। সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলে আদতে কাকে বার্তা দিতে চাইছেন দেশের প্রেসিডেন্ট? অনেকেই মনে করছেন এই বার্তা সরাসরি তাইওয়ান আর আমেরিকাকে দিয়েছেন শি।

সংগৃহীত চিত্র।

সংগৃহীত চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
বেজিং শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২০ ০২:২৯
Share: Save:

লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনার পারদ পুরোপুরি প্রশমিত হয়নি। এর মধ্যেই দেশের নৌসেনাকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বললেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। দেশের সেনাবাহিনীর প্রতি তাঁর এই বার্তাকে আসলে প্রচ্ছন্ন হুমকির সুরেই দেখছে বাকি দেশগুলি। তবে চিনফিংয়ের নিশানায় আসলে কোন দেশ, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। কূটনৈতিক শিবিরের একাংশ মনে করছে, নৌসেনাকে বার্তা দিয়ে ভারতকে নয়, আসলে আমেরিকাকে চাপে রাখতে চাইছেন চিনা প্রেসিডেন্ট।গত মঙ্গলবার চিনের গুয়াংডং প্রদেশের চাওঝউয়ের নৌসেনা ঘাঁটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন চিনফিং।

সেখানেই পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র নৌ বিভাগের সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও সময়ে যুদ্ধের জন্য আপনারা মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকুন।’’ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নৌসেনাও যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে, সেই কথাও স্মরণ করিয়ে দেন শি। চিনের সরকারি চ্যানেলে সম্প্রচারিত হয়েছে প্রেসিডেন্টের সেই বার্তা।

তার পর থেকেই শুরু হয়েছে নানা জল্পনা। সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলে আদতে কাকে বার্তা দিতে চাইছেন দেশের প্রেসিডেন্ট? অনেকেই মনে করছেন এই বার্তা সরাসরি তাইওয়ান আর আমেরিকাকে দিয়েছেন শি। সম্প্রতি তাইওয়ান প্রণালী দিয়ে মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস ব্যারি-র সফরকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। মার্কিন সেনা বিষয়টিকে রুটিন সফর আখ্যা দিলেও বেজিং বিষয়টিকে একেবারেই ভাল চোখে দেখেনি। তাইওয়ানকে তারা বরাবর নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে। তাই তাওয়ান প্রণালীতে মার্কিন যুদ্ধজাহাজের প্রবেশকে চিন নিজেদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন বলেই মনে করছে। চিনের ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের মুখপাত্র কর্নেল ঝাং চুনহুই ওয়াশিংটনের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়ে বলেছেন, ‘‘আমরা চাই আমেরিকা অবিলম্বে নিজেদের কথা ও কাজকে সংযত করুক যাতে তাইওয়ান প্রণালীকে কোনও ভাবে বিব্রত করা না-হয়।’’

আরও পড়ুন: দুর্গাপুজো আছে, তবে দুর্গোৎসব নেই​

আরও পড়ুন: ফের থমথমে প্যারিস, কড়াকড়ি লন্ডনেও​

আমেরিকার নৌসেনা অবশ্য পাল্টা বার্তা দিয়ে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন যেখানে যেখানে অনুমতি দেয়, মার্কিন সেনার জাহাজ বা বিমান সেখান দিয়েই যেতে পারে। তারা পাল্টা হুমকির সুরে আরও জানিয়েছে যে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকাকে মুক্ত রাখতে আমেরিকা যা করার করবে। সম্প্রতি কোয়াড-এর (আমেরিকা, ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া) বৈঠকেও একই বার্তা দিয়ে রেখেছেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো-ও। রাষ্ট্রপুঞ্জ তাইওয়ানকে আলাদা দেশের স্বীকৃতি না-দিলেও তাদের নিজস্ব মুদ্রা, পতাকা ও সেনাবাহিনী রয়েছে। চিনের কর্তৃত্ব তারা মানবে বলে ঘোষণা করে রেখেছে সেই ১৯৪৯-এর গৃহযুদ্ধের পর থেকেই। উল্টো দিকে, বেজিং তাইওয়ানকে হংকং আর ম্যাকাওয়ের মতোই নিজেদের দেশের অংশ বলে দাবি করে বরাবর। চিনের সঙ্গে সম্পর্ক শোধরানোর জন্য ১৯৭৯ সাল থেকে তাইপেইয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে রেখেছে আমেরিকা। কিন্তু সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে সব সময়েই বেজিংয়ের বিরোধিতা করে তাইপেইয়ের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে ওয়াশিংটনকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chinese President Xi Jinping
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE