দক্ষিণ চিন সাগরে হ্যানয়ের নিরাপত্তার দিকে নজর দিক নয়াদিল্লি। শুধু মুখে বন্ধুত্বের কথা না বলে ওই অঞ্চলে বেজিং-এর ক্রমবর্ধমান সক্রিয়তার জবাব দিতে কাজেও কিছু করে দেখাক। তা না-হলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নতুন মিত্র খুঁজতে দ্বিধা করবে না ভিয়েতনাম। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, ভিয়েতনামের এই বার্তা পৌঁছেছে সাউথ ব্লকে।
ভারত-ভিয়েতনাম কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ তিনদিনের সফরে ভারতে এলেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট ত্রান দাই কুয়াং। প্রতিরক্ষা এবং সমুদ্র নিরাপত্তা প্রশ্নে দু’দেশের মধ্যে একাধিক চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা। তথ্য ও প্রযুক্তি, মহাকাশ গবেষণা, কৃষি-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এক ডজন চুক্তিপত্রও সই হওয়ার কথা। দেশের শীর্ষ পর্যায়ের বাণিজ্য কর্তাদের সঙ্গেও বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করবেন দাই কুয়াং। কিন্তু এ-সবের পাশাপাশি হ্যানয়ের ক্ষোভের ব্যাপারটি নিয়ে দু’দেশের শীর্ষ বৈঠকে আলোচনা হবে।
বিদেশ মন্ত্রকের বড় অংশ মনে করছে, ভিয়েতনামের মতো দেশকে দূরে ঠেলে দেওয়া ‘আত্মহত্যা’রই সামিল। ঘরোয়াভাবে এ কথাও স্বীকার করা হচ্ছে যে, ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি নিয়ে ঢাক পেটানো হলেও কাজের কাজ এখনও করা যায়নি। সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি দেশের সঙ্গে সম্মেলনেও নয়াদিল্লির কাছে এই নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছে হ্যানয়।
সমস্যার ক্ষেত্রগুলি কী কী? চিন ঝড়ের গতিতে দক্ষিণ চিনা সাগরে কৌশলগত পরিকাঠামো তৈরি করলেও ভারতের ভূমিকা সেখানে নগণ্য। অভিযোগ, সিঙ্গাপুরের সঙ্গে নৌ-সমন্বয় সংক্রান্ত চুক্তি করা ছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত গাঁটছড়া বাঁধতে পারেনি ভারত। দক্ষিণ চিন সাগরের দ্বীপগুলিতে চিন গত কয়েক বছরে এয়ারক্রাফট হ্যাঙ্গার, অস্ত্র রাখার গুদাম, আধুনিক বাঙ্কার, রেডার স্টেশন তৈরি করেছে। অথচ চিনকে টেক্কা দেওয়া বা চাপে ফেলার মতো পরিকাঠামো তৈরি বা সেখানকার চিন-বিরোধী অক্ষের হাত শক্ত করার জন্য কিছুই করেনি ভারত।
হ্যানয়ের আরও অভিযোগ, প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রশ্নে ভারতের সঙ্গে এক কদমও এগনো সম্ভব হয়নি। বহু অনুরোধ সত্ত্বেও বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামী ‘ব্রহ্মস’ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ভিয়েতনামকে বিক্রি করার ব্যাপারে টালবাহানা করেছে নয়াদিল্লি। হ্যানয়ের বক্তব্য, দক্ষিণ চিন সাগরে তাদের নিরাপত্তাজনিত সঙ্কটে পাশে দাঁড়ানোর কথা নয়াদিল্লি মুখে বললেও কার্যক্ষেত্রে সক্রিয় সমর্থন পাওয়া যাচ্ছে না। সমুদ্রপথে চিনের একাধিপত্য রুখতে ভিয়েতনামকে কাছে টানা তাই মোদী সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy