Advertisement
১০ মে ২০২৪

চাবাহার দিবসে দাপট দিল্লিরও

আনুষ্ঠানিক ভাবে ইরানের চাবাহার বন্দরে জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে ডিসেম্বরে। ব্যবহারকারীদের কাছে সেই বন্দরকে তুলে ধরতে ইরান সরকার ২৬ ফেব্রুয়ারি ‘চাবাহার ডে’ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাতে সক্রিয় ভাবে সহায়তা করছে ভারত।

ইরানের চাবাহার বন্দর। ফাইল চিত্র।

ইরানের চাবাহার বন্দর। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:০৮
Share: Save:

আনুষ্ঠানিক ভাবে ইরানের চাবাহার বন্দরে জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে ডিসেম্বরে। ব্যবহারকারীদের কাছে সেই বন্দরকে তুলে ধরতে ইরান সরকার ২৬ ফেব্রুয়ারি ‘চাবাহার ডে’ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাতে সক্রিয় ভাবে সহায়তা করছে ভারত। জাহাজ-সচিবের নেতৃত্বে লগ্নিকারীদের বিরাট প্রতিনিধিদল সে-দিন চাবাহার যাবে। মঙ্গলবার দ্বিতীয় মেরিটাইম কনক্লেভের প্রচারে কলকাতায় এসে এ কথা জানান জাহাজ মন্ত্রকের অধিকর্তা (বন্দর) অরবিন্দ চৌধুরি।

জাহাজ মন্ত্রকের ওই কর্তা জানান, চাবাহার বন্দর দিয়ে অন্তত ২৬টি দেশে পণ্য যাতায়াত করতে পারে। ভারত ওই বন্দর নির্মাণে এবং তার পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। বন্দরকে আরও আকর্ষক করে তোলার জন্য লগ্নিকারীদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরের ধাপে ওই বন্দরে পণ্য খালাস নিয়ে ভারত-ইরান-আফগানিস্তান ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হবে। ধীরে ধীরে অন্য দেশকেও যুক্ত করা হবে এই চুক্তিতে।

জাহাজ মন্ত্রক কর্তারা জানাচ্ছেন, পাকিস্তানের গদর বন্দরকে ভারত মহাসাগরের অন্যতম ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে চায় চিন। তাদের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ বা বিআরআই প্রকল্পে গদর বন্দরের পণ্য বালুচিস্তান হয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মধ্য দিয়ে চিনে পৌঁছনোর কথা। চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর নিয়ে তীব্র আপত্তি রয়েছে ভারতের। গদরের পাল্টা হিসেবে ইরানের চাবাহারে বন্দর নির্মাণ করে ভারত মহাসাগরে নিজেদের উপস্থিতি জাহির করতে নামে দিল্লি। তারই অঙ্গ হিসেবে ত্রিপাক্ষিক চুক্তির বহর বাড়িয়ে আরও কিছু দেশকে চাবাহারে আনতে চায় জাহাজ মন্ত্রক।

চাবাহারে কি নিয়মিত জাহাজ চলাচল করছে? জাহাজ মন্ত্রকের অধিকর্তা (বন্দর) জানান, গত ৩০ ডিসেম্বর ব্রাজিল থেকে ভুট্টা নিয়ে ৮০ হাজার টনের একটি জাহাজ প্রথমে চাবাহারে এসেছিল। ইরানের সংস্থা আইআরএসআইএল সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের জওহরলাল নেহরু বন্দর থেকে কান্ডলা-মুন্দ্রা হয়ে একটি জাহাজ চাবাহারে নিয়ে গিয়েছে। প্রতি সপ্তাহে ভারত থেকে সেখানে জাহাজ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।

ইরানের পাশাপাশি বাংলাদেশের মঙ্গলা ও চট্টগ্রাম বন্দরের সম্প্রসারণেও বিশেষ ভূমিকা নিতে চায় ভারত। এই বিষয়ে ঢাকার সঙ্গে দিল্লির কথাবার্তা চলছে বলে জানান চৌধুরি। কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমারও মনে করেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা বাড়ানোর জন্য কলকাতা বন্দরের আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। তিনি জানান, মুম্বইয়ের জওহরলাল নেহরু বন্দর থেকে দীর্ঘ ২৫ দিন ধরে জাহাজে পণ্য যাচ্ছে বাংলাদেশে। অথচ রেলপথে সেই পণ্য পাঁচ দিনে কলকাতায় এবং পরের পাঁচ দিনে জাহাজে কলকাতা থেকে বাংলাদেশ পাঠানো সম্ভব। মাত্র ১০ দিনে পণ্য পাঠানো গেলে সময় ও খরচ দুই-ই কমবে। লাভবান হবেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। সেই জন্য কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরের সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি-রফতানিকারী সংস্থাগুলির সম্পর্ক আরও নিবিড় করার উপরে জোর দেন বন্দর-প্রধান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chabahar Port India Iran Afghanistan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE