রাজকুমারী উবোলরত্না
এক দিনের চমক! গত কাল যা শোরগোল ফেলে দিয়েছিল গোটা দেশে— আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য লড়তে চলেছেন তাইল্যান্ডের রাজকুমারী উবোলরত্না। দেশবাসীর বিস্ময় কাটতে না কাটতেই, রাজা মহা বাজিরালঙ্গকর্ন আজ ঘোষণা করলেন, তাঁর দিদি নির্বাচনে লড়বেন না। ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ‘যথাযথ’ নয় এবং ‘রাজপরিবারের ঐতিহ্যের বিরোধী’।
আগামী ২৪ মার্চ নির্বাচন তাইল্যান্ডে। দেশের উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ঘি পড়ে গত কালের ঘোষণায়। একদা রাজপরিবারের সমালোচক বলে পরিচিত গদিচ্যুত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তাকসিন শিনাবাত্রার সমর্থক দল ‘তাই রক্ষা চার্ট পার্টি’-র তরফে ঘোষণা করা হয়, তাদের দলের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী রাজকুমারী উবোলরত্না। মুহূর্তে প্রশ্ন ওঠে, তবে কি পুরনো শত্রুর সঙ্গে মিত্রতা করল রাজপরিবার? কারণ, শিনাবাত্রার দল গ্রামীণ মানুষের ভোট পেয়ে এলেও সমাজের অভিজাত শ্রেণির ভোট কোনও দিনই পকেটে পুরতে পারেনি। রাজপরিবার ঘনিষ্ঠ অভিজাত শ্রেণির সঙ্গে তাদের বিরোধ এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে ২০১৪ সালে সেনা অভ্যুত্থান ঘটে। তাতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, জুন্টা সামরিক নেতা প্রয়ুত চান-ও-চা। তাঁর বিরুদ্ধে কি না লড়বেন রাজকুমারী! ধন্দে পড়ে গিয়েছিলেন তাইল্যান্ডবাসী। একে তো প্রথা ভেঙে রাজকুমারীর রাজনীতিতে আসা, তার উপরে পুরনো সমীকরণে ভাঙন।
২০১৪ সালের সেনা অভ্যুত্থানের পরে প্রথম ভোট। এ দিন নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে আগামী সোমবার তারা ঘোষণা করবে। অনেকেরই ধারণা, ভোটযুদ্ধে নিজেদের ‘বাহিনী’তে রাজকুমারীর নাম টেনে এনে দুঃসাহসী পদক্ষেপ করেছেন শিনাবাত্রা। শত্রুপক্ষের ভোটব্যাঙ্কে সিঁদ কাটতেই এই কাজ। কিন্তু রাজা বাজিরালঙ্গকর্নের ঘোষণায় অনেকেই মনে করছেন, নিজের পায়ে কুড়ুল মারলেন শিনাবাত্রার সমর্থকরা। ‘তাই রক্ষা চার্ট পার্টি’ জানিয়েছে, রাজার ঘোষণা তারা সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করেছে। নির্বাচন বিধি ও রাজপরিবারের প্রথা মেনেই তারা চলবে। তবে প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে উবোলরত্না থাকবেন কি না, শেষ কথা বলবে নির্বাচন কমিশন। অবশ্য রাজার বিরুদ্ধে গিয়ে কমিশন কোনও কথা বলবে না বলেই আশা করা যায়।
যাঁকে ঘিরে এত উত্তেজনা, সেই রাজকুমারী যাবতীয় বিতর্ক এড়িয়ে গিয়ে শনিবার ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন, ‘‘তাইল্যান্ডকে এগিয়ে যেতে দেখতে চাই। গোটা বিশ্বের সামনে বিশেষ জায়গা করে নিতে দেখতে চাই। দেশবাসী সকলে নিজেদের অধিকার পাক, সুস্থ ভাবে বাঁচুন, আনন্দে থাকুন।’’ শেষে ‘#আইলভইউ’ বলে ইতি টেনেছেন। কিন্তু ভাইয়ের মন্তব্য কিংবা গত কাল তাঁর নাম ঘোষণা, কোনও কিছু নিয়েই একটি শব্দও খরচ করেননি তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy