Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অ্যাসাঞ্জের বেড়াল কই!

কেউ বলছেন, খোঁজ নেই। কেউ বলছেন, ‘বিপদ’ বুঝে গত বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরেই নিজের দীর্ঘ একাকিত্বের সঙ্গী পোষ্যকে অন্যত্র সরিয়ে দিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ।

দূতাবাসের জানলায় অ্যাসাঞ্জের বেড়াল। ফাইল চিত্র

দূতাবাসের জানলায় অ্যাসাঞ্জের বেড়াল। ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:০৫
Share: Save:

মালিকের হাতে ‘হাতকড়া’। এ বার তাঁর পোষ্যের কী হবে? গত বৃহস্পতিবার জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ব্রিটিশ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই প্রশ্নটা ঘুরে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ‘দূতাবাসের বেড়াল’ তিষ্ঠোতে দিচ্ছে না মূলস্রোতের সংবাদমাধ্যমকেও। কোথায় সে?

কেউ বলছেন, খোঁজ নেই। কেউ বলছেন, ‘বিপদ’ বুঝে গত বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরেই নিজের দীর্ঘ একাকিত্বের সঙ্গী পোষ্যকে অন্যত্র সরিয়ে দিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ। লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাস আবার ‘বেড়াল নিয়ে এই বাড়াবাড়ি’-তে স্পষ্টই বিরক্ত। এক কর্মী তো সাফ বলেই দিলেন, ‘‘এটা দূতাবাস। কুকুর-বেড়াল রাখার জায়গা নয়। অ্যাসাঞ্জের অনুচরেরাই বেড়ালটিকে বহু দিন আগে এখান থেকে নিয়ে গিয়েছেন।’’

সে যা-ই হোক, বেড়ালটা ভাল আছে তো? উদ্বিগ্ন অনেকেই তা জানতে চাইছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ২০১০-এ গুচ্ছ মার্কিন নথি ফাঁস করে গোটা বিশ্বে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা অস্ট্রেলীয় সাংবাদিক তথা কম্পিউটার প্রোগ্রামার জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। কালে সেটাই কাল হল। সঙ্গে জুড়ল সুইডিশ দুই মহিলাকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ। গ্রেফতারি এড়াতে লন্ডনে অবস্থিত ইকুয়েডরের দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ। সময়টা ২০১২। আর ২০১৬-য় বাবার নিঃসঙ্গতা কাটাতে অ্যাসাঞ্জকে দূতাবাসেই ওই বেড়ালটি দিয়ে যান তাঁর সন্তানেরা।

‘এমব্যাসি ক্যাট’— এই নামে টুইটার এবং ইনস্টাগ্রামে অ্যাকাউন্ট এখনও সক্রিয়। ২৯ মার্চ শেষ বার একটি খবর রিটুইট করেছিল ‘এমব্যাসি ক্যাট’। যাতে বলা ছিল, ক্যাটালোনিয়া বিক্ষোভ নিয়ে মুখ খোলায় অ্যাসাঞ্জের ইন্টারনেট সংযোগ ব্লক করেছে দূতাবাস। এ বার ইকুয়েডর তো তাঁর মাথার উপর থেকেই হাত তুলে নিল! এখন বেড়ালের কী হবে?

২০১৬-য় কিউবার নেতা ফিদেল কাস্ত্রো মারা যাওয়ার পরে অ্যাসাঞ্জই নিজের পোষ্যকে ভালবেসে ‘ক্যাট-স্ত্রো’ নামে ডাকা শুরু করেছিলেন। কিন্তু লন্ডনের দূতাবাস সূত্র বলছে, গত বছরই পোষ্যের দেখভাল করা নিয়ে অ্যাসেঞ্জকে সতর্ক করা হয়। দূতাবাসে থাকতে হলে, সেখানকার নিয়মকানুন, পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি মানতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।

এই খবর সামনে আসায় পোষ্য ও মানুষের সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ জন ব্রাডশ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘ভালবাসা না পেলে পোষ্য তার মালিককেও মনে রাখে না। আমার তো মনে হয়, আদৌ কখনও তার মালিকের সঙ্গে হৃদ্যতা গড়ে ওঠেনি। এখন শুনছি, বেড়ালটি আর দূতাবাসে নেই। ভালই হয়েছে। স্থানচ্যুত হয়ে সে বড় জোর নিজের পুরনো জায়গাটার অভাববোধ করবে, মালিকের নয়।’’

সংবাদমাধ্যমকে দূতাবাস জানিয়েছে, গত বছর সেপ্টেম্বর থেকেই বেড়ালটি আর সেখানে নেই। অ্যাসাঞ্জের আইনজীবীদের এক জন জানিয়েছেন, পোষ্যের নিরাপত্তার কথা ভেবে অ্যাসাঞ্জই বেড়ালটিকে নিজের পরিবারের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছেন।

সব মিলিয়ে অ্যাসাঞ্জের মতোই রহস্য দানা বাঁধছে তাঁর বেড়াল নিয়ে। এরই মধ্যে ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ছক কষে তাঁকে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগে অ্যাসাঞ্জের প্রাক্তন সমর্থক তথা সুইডিশ কম্পিউটার প্রোগ্রামার ওলা বিনি-কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jullian Assange Embassy Cat WikiLeaks Ecuador
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE