Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সিরিয়া থেকে ফের অপহৃত ৯০

প্রশাসনের দাবি, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে জঙ্গিদের। কিন্তু বাস্তব দেখিয়ে দিল, জঙ্গি দাপট অব্যাহত সিরিয়ায়। শিশু ও মহিলা-সহ ফের ৯০ জনকে অপহরণের অভিযোগ উঠল ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে (আইএস)। সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার খ্রিস্টান অধ্যুষিত অন্তত দশটি গ্রাম থেকে এঁদের পণবন্দি করা হয়েছে বলে আজ জানায় দু’টি মানবাধিকার সংগঠন।

সংবাদ সংস্থা
বেইরুট শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:২৯
Share: Save:

প্রশাসনের দাবি, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে জঙ্গিদের। কিন্তু বাস্তব দেখিয়ে দিল, জঙ্গি দাপট অব্যাহত সিরিয়ায়। শিশু ও মহিলা-সহ ফের ৯০ জনকে অপহরণের অভিযোগ উঠল ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে (আইএস)। সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার খ্রিস্টান অধ্যুষিত অন্তত দশটি গ্রাম থেকে এঁদের পণবন্দি করা হয়েছে বলে আজ জানায় দু’টি মানবাধিকার সংগঠন। গ্রামছাড়া কয়েক হাজার। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেই জঙ্গিদের সাম্প্রতিক এই তাণ্ডবের কথা জানা গিয়েছে বলে মত ওই সংগঠন দু’টির। অপহৃতেরা আদৌ বেঁচে আছেন কিনা, ধন্দ দেশ জুড়ে।

অপহরণ কাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে কুর্দ প্রশাসনও। কাল ভোররাতেই খাবুর নদীর পারের এই গ্রামগুলিতে হামলা চালায় সশস্ত্র জঙ্গিদল। হাসাকা প্রদেশের তাল হমর শহরের নিকটবর্তী এই গ্রামগুলি মূলত খ্রিস্টান অধ্যুষিত। মনে করা হয়, এই গোষ্ঠীর শিকড় মেসোপটেমিয়া আমলের। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে সিরিয়ায় মানবাধিকার সংগঠন ‘আ ডিমান্ড ফর অ্যাকশন’-এর অধিকর্তা নুরি কিনো জানান, “অপহৃতের সংখ্যাটা একশোর কাছাকাছি। জঙ্গি তাণ্ডবের হাত থেকে বাঁচতে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন প্রায় ৩ হাজার।” এঁদের একটা বড় অংশ হাসাকা ও কামিশলির শহরে আশ্রয় নিয়েছে বলে দাবি ওই সংগঠনের।

ব্রিটেনের মানবাধিকার সংগঠনটি অবশ্য অপহৃতের সংখ্যা ৯০-এর বেশি মানতে নারাজ। তবে অপহৃতদের বেশির ভাগই যে কামিশলি শহর থেকে ৮৫ কিলোমিটার দূরের গ্রাম তাল শামিরামের বাসিন্দা, তা জানিয়েছেন দু’টি সংগঠনই। স্থানীয়দের একটা অংশ অবশ্য অপহৃতের সংখ্যা ২০০-র বেশি বলেই জানাচ্ছেন।

সিরিয়া ও ইরাকের সীমান্ত লাগোয়া এই এলাকায় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ন্যাটোর সঙ্গে যৌথ লড়াই চালাচ্ছে কুর্দ পেশমের্গা বাহিনী। রবিবার দু’টি বড়সড় হামলা চালায় তারা। প্রশাসনের দাবি, তাতে খতম হয়েছে অন্তত ১৮ জন জঙ্গি। তার প্রেক্ষিতেই এই গণঅপহরণ বলে মনে করছে প্রশাসনের একাংশ।

বিয়ের পর বেইরুটে চলে আসা তাল শামিরামের এক খ্রিস্টান মহিলাও এই অপহরণের খবর পেয়েছেন। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কেঁদেই ফেললেন। জানালেন, “বাবা, মা, দাদা, বৌদি কারও খোঁজ পাচ্ছি না। বাচ্চাগুলোও ওদের সঙ্গেই ছিল।” ওই মহিলার দাবি, গ্রামের কোনও বাড়িতেই ল্যান্ডফোন চালু নেই। বন্ধ মোবাইলও। জঙ্গিরাই ফোনের লাইন কেটে দিয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর।

কাঁপা কাঁপা গলায় তিনি এ-ও বললেন, “গত মাসেই বাবা-মা এসেছিলেন আমায় দেখতে। তার পর ফিরেও গেলেন সিরিয়ায়। জঙ্গি তাণ্ডব তো লেগেই আছে ওখানে। পাত্তা দিইনি। কিন্তু এ রকম হবে জানলে কিছুতেই ওদের যেতে দিতাম না। জোর করেই রেখে দিতাম আমাদের সঙ্গে।”প্রাণের ভয়েই নাম প্রকাশে রাজি হননি ওই মহিলা, কিন্তু জঙ্গিদের শাস্তি চাইলেন বেশ জোর গলায়।

পণবন্দিদের মুণ্ডচ্ছেদে ইতিমধ্যেই বিশ্ব জুড়ে ত্রাস ছড়িয়েছে আইএস। সম্প্রতি লিবিয়ার ২১ জন খ্রিস্টান মিশরীয়কে খতম করে এদেরই একটা অংশ। সেই কারণেই এই অপহৃতদের ভবিষ্যৎ নিয়েও আশঙ্কায় প্রশাসন। তবে এঁদের নিয়ে জঙ্গিরা বন্দিবিনিময় শর্তে কুর্দ প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে বলেও ধারণা একাংশের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

syria isis 90 captured
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE