Advertisement
২৫ মার্চ ২০২৩

তাসকিনের গতিতে কাপ দেখছে বাংলাদেশ

লাসিথ মালিঙ্গা নিজেও এ প্রজন্মের অন্যতম সেরা পেসার। তিনি পর্যন্ত বাংলাদেশের পেস অ্যাটাককে সার্টিফিকেট দিয়েছেন। ড্যারেন লেম্যান তো রীতিমতো অভিভূত। লিফটে ওঠার সময় কপিল দেবের ছোট্ট একটি বাক্যে মূল্যায়ন, “অসাধারন তোমাদের পেস বোলিং।” বোলিংয়ে ১০০ মাইল গতি ছুঁয়ে ফেলা শোয়েব আখতারও পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন তাসকিনের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢাকা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৬ ১৫:২৭
Share: Save:

লাসিথ মালিঙ্গা নিজেও এ প্রজন্মের অন্যতম সেরা পেসার। তিনি পর্যন্ত বাংলাদেশের পেস অ্যাটাককে সার্টিফিকেট দিয়েছেন। ড্যারেন লেম্যান তো রীতিমতো অভিভূত। লিফটে ওঠার সময় কপিল দেবের ছোট্ট একটি বাক্যে মূল্যায়ন, “অসাধারন তোমাদের পেস বোলিং।” বোলিংয়ে ১০০ মাইল গতি ছুঁয়ে ফেলা শোয়েব আখতারও পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন তাসকিনের। ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে তাসকিনের তৃতীয় ডেলিভারিটির গতি ছিল ১৪৩ কিলোমিটার, তখনই উঠে এল অ্যাডিলেডে রুবেল হোসেনের ১৪৭ কিলোমিটার গতির ডেলিভারির কথা। রুবেলের অনুপস্থিতিতে তার গতিকে টপকে গেছেন তাসকিন। চলতি এশিয়া কাপে সবচেয়ে জোরে বল করেছেন তিনিই। স্পিডগানে যার গতি ১৪৮ কিলোমিটার।

Advertisement

বলের সিমটা ভাল ব্যবহার করতে পারেন বলে নুতন বলে শুরুটা করবেন তাসকিন— অভিষেক থেকে এটাইই যেন ছিল অলিখিত নিয়ম। টি-২০ ক্রিকেটে যখন চার ছক্কার ফুলঝুরি দেখতে আসে দর্শক, সেখানে বিকল্প ধারণাটাও দিচ্ছেন পুরনো ঢাকার এই ছেলেটি। এশিয়া কাপের চলমান আসরে সফল বোলারদের তালিকায় আল আমিন ( ৪ ম্যাচে ১০ উইকেট) থাকলেও ৪ ম্যাচে ২ উইকেট পেয়েও আলোচনায় তাসকিনই। প্রতিপক্ষকে শুরুতে গতি দিয়ে পিলে চমকে দেওয়ার কাজটা প্রতিনিয়ত করছেন তিনি। তবে শুধু গতি নয়, নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের ফর্মুলাও মেনে চলেছেন তিনি। ৪ ম্যাচে ৭৮টি ডেলিভারির মধ্যে ৪৭টি ডট! সবচেয়ে বেশি ডট পাকিস্তানের বিপক্ষে, ১৬টি।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁর প্রথম স্পেলটাই ধরুন। প্রথম ১২ বলের মধ্যে ডট ১১টি! দ্বিতীয় স্পেলে ১-০-১-১। তার এমন বোলিংয়েই প্রথম ১০ ওভারে ৩৪ এর বেশি করতে পারেনি পাকিস্তান। এবং ওখানেই ব্যাকফুটে চলে য়ান আফ্রিদিরা। ৫ উইকেটে জিতে তাই তাসকিন স্তুতি অধিনায়ক মাশরাফির, “তাসকিন মঞ্চটা সাজিয়ে দিয়েছিল। ছেলেটার পুরো টুর্নামেন্টে ভাগ্য খারাপ ছিল। ওর বলে অনেকগুলো ক্যাচ ড্রপ হয়েছে। ও মানসিক ভাবে দৃঢ় ছিল বলে ফল পেয়েছে।”

সর্বশেষ ম্যাচটি ছাড়া ভাগ্য় সত্যিই সঙ্গে ছিল না তাসকিনের। প্রথম ম্যাচে ব্যক্তিগত ২১ রানের মাথায় ভারতের রোহিত শর্মার ক্যাচ পয়েন্টে ফেলে দিয়ে সাকিব খলনায়ক। যে ছেলেটি ভারতের বিপক্ষে প্রথম ১৫ বলে খরচা করেছিলেন মাত্র ৭ রান, রোহিতকে শিকারে পরিণত করতে না পারায় এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন যে, পরের তিনটি বলে সেখানে সেই রোহিতের হাতে খেতে হলো তাকে ২ চার, একটি ছক্কা। পরের ম্যাচে তাসকিনকে বঞ্চিত করেছেন সৌম্য। তার বলে ক্যাচ ছেড়েছেন মাহমুদুল্লাহও। বয়স মাত্র ২১, তার পরও সতির্থদের হাত থেকে ক্যাচগুলো একটার পর একটা ফসকে যাওয়ায় এতোটুকু আফসোস নেই তাসকিনের। হাসতে হাসতে বলেছেন, “হিসাব করলাম, এই এশিয়া কাপে আমার বলে পাঁচটা ক্যাচ মিস হয়েছে। ওই সময় যখন ক্যাচ উঠেছে, প্রতিবারই কামনা করেছি, ক্যাচটি যেন ধরা যায়।”

Advertisement

২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ভারতের বিপক্ষে, অভিষেকেই বাজিমাত (৫/২৮)। ওয়ানডে ক্রিকেটে ভারতের বিপক্ষে তার রেকর্ডটা দারুন, ৫ ম্যাচে ১২ উইকেট। ভারতের বিপক্ষে নিজের অতীত রেকর্ড ভাল বলেই ফাইনালে নিজের সবটুকু উজাড় করে খেলার সংকল্প তাসকিনের। বলেন, “এশিয়া কাপ টি-২০তে বড় দুই দলের বিরুদ্ধে জিতেছি। এটা আমার অনেক বড় পাওয়া। দেশের হয়ে যখন খেলি, তখন ১০০ শতাংশ এমনিতেই চলে আসে। ক্যারিয়ারে এটাই আমার প্রথম এশিয়া কাপ, আর এই আসরেই ফাইনাল খেলছি। নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। এখন লক্ষ্য একটাই, সেরাটা খেলা।”

যে টি-শার্ট পরে মিডিয়াকে দিয়েছেন সাক্ষাতকার, তাতে ইংরেজীতে বড় করে লেখা ‘বেস্ট ইজ ইয়েট টু কাম’। শুধু তাসকিনই নন, দলের সবাইকে নাকি দেওয়া হয়েছে এই টি-শার্ট। ক্রিকেটারদের প্রতিনিয়ত ভাল করার টনিকও নাকি এই টি-শার্টই। এই টি-শার্টেও স্লোগানটি বুকেও ধারণ করছে বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা ! এমনটাই জানিয়েছেন তাসকিন, “টুর্নামেন্টের শুরুতে আমাদের এই টি-শার্ট দেওয়া হয়েছে। আমরা এই টি শার্টে লেখা কথাটা রাখতে পেরেছি।” হার দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করে উপর্যুপরি তিন জয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ। টি-শার্টে লেখা স্লোগানটিও যে ফাইনালে নিজেদের সেরা খেলার টনিক যোগাচ্ছে।

আরও পড়ুন:
সমর্থকদের এত দিন কিছু দিতে পারিনি, এখন না হয় ধার চুকোই: মাশরফি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.