সকালে একটু দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা অভ্যাস। তার পরে ঘড়ির দিকে তাকিয়েই ছুটতে শুরু করেন বছর ছাব্বিশের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার অঙ্কিতা ঘোষ। দশটার মধ্যে অফিসে ঢুকতে হয়। সারা দিন কম্পিউটারে চোখ এঁটে চেয়ারে বসে থাকা। বিকেল হলেই কোমরে টান ধরে। কিছু দিন পরে সোজা হয়ে দাঁড়াতেও সমস্যা শুরু হয়। যন্ত্রণা বাড়ায় চিকিৎসকের কাছে যান। চিকিৎসক জানান, দীর্ঘক্ষণ এক ভাবে বসে থাকার জন্য মেরুদণ্ডে সমস্যা দেখা দিয়েছে। দিনে অন্তত ৪৫ মিনিট হাঁটতে হবে। না হলে ভুগতে হবে আজীবন।
বাড়ি ফেরার পথে ব্যাগটা কাঁধে না নিয়ে মাঝে মধ্যেই হাতে নিয়ে আসে ক্লাস সেভেনের রোহন রায়। সাতটা ক্লাস, তার জন্য চোদ্দটা বই-খাতা, তার উপরে জলের বোতল, টিফিন বাক্স এত বোঝা বইতে ঘাড় ঝুঁকে যায়। এমনকী রাতে ব্যথায় ঘুমও আসে না। এই রকম যন্ত্রণা টানা দেড় সপ্তাহ হওয়ার পরে বাবার সঙ্গে ডাক্তার দেখাতে যায় সে। তিনি জানান, বয়সে ছোট হলেও রোগ ধরেছে বড়। কাঁধের হাড় বেড়েছে রোহনের। প্রতি দিন আধ ঘণ্টা ব্যায়াম করতে হবে।
রোহন কিংবা অঙ্কিতা কোনও ব্যতিক্রম নয়। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন এ রাজ্যের প্রায় ৯৭ শতাংশ মানুষ কোনও না কোনও সময়ে পিঠের ব্যথা অর্থাৎ ‘ব্যাক পেন’-এ ভুগেছেন বা ভুগছেন। কোনও না কোনও ধরনের মেরুদণ্ডের যন্ত্রণার ভুক্তভোগী এঁরা। ভারী ব্যাগ বহন করা, মাথা নিচু করে দীর্ঘক্ষণ কাজ করা, কিংবা এক টানা চেয়ারে বসে থাকা— এই সব অস্বাস্থ্যকর কাজের জন্যই ব্যাক পেন দেখা দিচ্ছে আট থেকে আশি সব বয়সের মানুষের মধ্যে। চিকিৎসকদের মতে, এর থেকে বেরোনোর পথ নিয়মিত শরীর চর্চা।