কথাতেই আছে মাছেভাতে বাঙালি। শব্দবন্ধটি বার বার ব্যবহারে যতই একঘেয়ে লাগুক না কেন, ভাতের সঙ্গে পাতলা মাছের ঝোল খাওয়ার কত যে গুণ, তা বলে বোঝানোর নয়। বয়স লুকোতে এখন কত রকমের থেরাপি হয়। কোনওটা বলিরেখা কমিয়ে ত্বক টানটান করে, কোনও থেরাপিতে আবার কোলাজ়েনের উৎপাদন বাড়িয়ে একেবারে যৌবনের মতো সৌন্দর্য নিয়ে আসে। বার্ধক্যের ছাপ মুছে ফেলতে খরচসাপেক্ষ লেজ়ার থেরাপিতেও পিছিয়ে যাচ্ছেন না মহিলারা। কিন্তু অনেকেই জানেন না, স্কিন থেরাপি বা ত্বকে রাসায়নিক ব্যবহার করে তারুণ্য ধরে রাখার চেয়ে রোজের ডায়েটে নজর দিলেই ত্বক ভিতর থেকে সতেজ ও তরতাজা থাকবে। আর এই ডায়েটে কিন্তু খুব বেশি খরচ করার প্রয়োজন নেই, বরং রোজের এমন কিছু খাবার আছে, যা ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
রোজের পাঁচ খাবারেই ফিরবে তারুণ্য
পেঁপে-করলা
কোলাজেনের আর একটি উপাদান হল হাইড্রক্সিপ্রোলিন। আর তা পাওয়া যাবে ভিটামিন সি রয়েছে এমন খাবারে। বাঙালির পাতে পেঁপে থাকেই। পেঁপেসেদ্ধ বা কম মশলা দেওয়া তরকারি অথবা স্ট্যু হিসাবে খেলে শরীরে যেমন বল বাড়বে, তেমনই ত্বক অকালে বুড়িয়ে যাবে না। করলাতেও কিন্তু প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকে। প্রথম পাতেই তাই উচ্ছে বা করলার মতো তেতো জাতীয় সব্জি রাখতেই বলেন বাড়ির বড়রা।
ডাল-ভাত
কোলাজেনের জন্য জরুরি গ্লাইসিন ও প্রোলিন জাতীয় অ্যামিনো অ্যাসিড। এই ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকলে ত্বক টানটান হবেই। ডাল, সয়াবিন, বাদাম বা তিল জাতীয় খাবার রোজের পাতে রাখলে, কোলাজেনের উৎপাদন বাড়বে। মুসুর ডাল, মুগ ডাল বা মটর ডাল ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খাওয়া যেতে পারে। কোলাজেন বেশি তৈরি হলেই ত্বকের বলিরেখা দূর হয়ে তারুণ্য ফিরবে। শুরুতে তেতো, তার পরে ডাল দিয়েই ভাত খেতে অভ্যস্ত বাঙালিরা। এই ডালেই কিন্তু রয়েছে তারুণ্যের চাবিকাঠি।
পালং-সজনে
সবুজ শাকপাতা ও সব্জি খেলে ত্বকের জেল্লা ফিরবে। পালং শাক, সজনে ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। শাকপাতায় থাকে ভিটামিন কে ও প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় ও স্বাভাবিক জেল্লা ফেরাতে সাহায্য করে।
রুই মাছের ঝোল
মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। তা ছাড়া ভিটামিন এ ও ভিটামিন ডি-ও থাকে মাছে। ত্বক টানটান রাখতে, ঔজ্জ্বল্য বজায় রাখতে ফ্যাটি অ্যাসিড অত্যন্ত কার্যকর। ম্যাকারেল, ইলিশ, কাতলার মতো মাছে সেলেনিয়ামও থাকে, যা ত্বকের বলিরেখা দূর করতে পারে। মাছের ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির হাত থেকে ত্বককে রক্ষা করতে পারে। সোরিয়াসিস-সহ বিভিন্ন ত্বকের অসুখে, সংক্রমণ প্রতিরোধেও সহায়ক হতে পারে মাছ।
আরও পড়ুন:
শেষ পাতে দই
শেষ পাতে দই বা দুগ্ধজাত খাবারই থাকে। গরমকালে অধিকাংশ বাঙালির রোজকার পাতে থাকে টক দই। আবার সারা বছরই টক দই খাওয়ার অভ্যাস আছে অনেকের। দই কেবল পেট ঠান্ডা রাখে তা নয়, ত্বকের জন্যও ভাল। বাড়িতে পাতা দই নিয়মিত খেলে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা কমবে, ত্বকে কালচে দাগছোপ পড়বে না, চোখের তলার কালিও দূর হবে। অত্যধিক ব্রণ-ফুস্কুড়ি বা র্যাশের সমস্যা থাকে যাঁদের, তাঁরা নিয়ম করে টক দই খেলে ত্বক ভাল থাকবে।