দূরে থেকেও সম্পর্ক সুন্দর হয় যোগাযোগের মাধ্যমেই। ছবি: শাটারস্টক।
নব্বই দশকের শেষ ভাগে বাংলা ব্যান্ডের দাপটে যখন আচ্ছন্ন তরুণ প্রজন্ম। মুখে মুখে ফিরত বিখ্যাত এক ব্যান্ডের গানের কলি: ‘‘ভালবাসা মানে দূরভাষ নিশ্চুপে শুনে ফেলে অনুভূতির হাসি।’’
দেড় দশকের বেশি সময় পেরিয়ে আজ প্রেমিক-প্রেমিকাদের জীবনে এর চেয়ে অমোঘ সত্য বোধ হয় আর কিছু নেই। চাকরি আর সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং এই জোড়া ফলার দাপটে আজ আর বিকেল হলেই হাতে হাত রেখে ময়দানে ঘোরার সুযোগ কোথায়!
প্রেম বলে কয়ে আসে না। ফলে দূরে থাকা মানুষটাকে আপন করে নিতে প্রথম প্রথম সমস্যা হয় না। প্রিয়জন কর্মসূত্রে দূরে চলে গেলেও নাছোড় জুড়ে থাকাটা থাকেই। তবে সমস্যা শুরু হয় ক্রমে। সমস্যার মূল কারণ অদর্শন। সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলা যায়, স্পর্শ তো করা যায় না। এই অসুবিধের সঙ্গেই যুক্ত হয় সন্দেহ। কফিনে পেরেক ঠুকে দেয় কারণে-অকারণে অবিশ্বাস।
কিন্তু লক্ষ যোজন দূরে থেকেও কী ভাল থাকা যায় না? মুঠোফোনে শ্বাসের শব্দটুকু শুনেও কি মনে হতে পারে না পাশাপাশি আছি? মনোবিদরা কিন্তু বলছেন, ‘‘আলবাত পারে। তবে মেনে চলতে হবে কয়েকটি সাধারণ বিষয়।’’ যেমন?
আরও পড়ুন: কিডনিকে ধ্বংস করছে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি, তা হলে প্রতিকারের পথ কী?
মনোবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, সম্পর্কের স্বচ্ছতা সব সময়েই সম্পর্ককে ভাল রাখে। দূরে থাকলে সেই স্বচ্ছতা বজায় রাখার দায়িত্বটা আরও বেড়ে যায়। কারণ সঙ্গী তখন চোখের আড়ালে। সারা দিন কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা না করলেও, মোটামুটি আপডেট দিয়ে রাখলে ভাল। এতে সঙ্গীর একাকীত্বও কমে আবার তাঁর গুরুত্ব আপনার কাছে এখনও অটুট এই বোধের গোড়ায় সার পড়ে। দিনে অন্তত এক বার দূরভাষে কথা বলাটা জরুরি, পাঁচ মিনিটের জন্য হলেও। এটাকে ‘বাধ্যবাধকতা’ বলে যদি মনে হয়, তা হলে বলতে হবে সম্পর্কের ভিতটাই দুর্বল। কারণ, ভালবাসা থাকলে মনের মানুষের সঙ্গে দিনান্তে অন্তত এক বার কথা বলতে ইচ্ছে করাটাই খুব স্বাভাবিক। সঙ্গী যখন আলাদা শহরে, তখন অচেনা বা অল্প চেনা কারও সঙ্গে কফি বা ডিনার বা লাঞ্চ খেতে যাওয়ার আগে, এক বার তাঁকে জানিয়ে রাখাটা বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ দূরে থাকলে যে কোনও মানুষের মধ্যেই সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে নিয়ে এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা কাজ করে। তাঁকে না জানিয়ে কোথাও গেলে তিনি অভিমানী হতেই পারেন। আর এটাকে ‘খুব ছোটখাটো কারণে অভিমান’ বলে দেগে দেবেন না যেন।
আরও পড়ুন: গরমে সুস্থ থাকতে সতর্ক হোন, পরামর্শ চিকিৎসকদের
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
অনলাইন যোগাযোগেও যোগসূত্র বজায় রাখুন।
প্রেমের সম্পর্কের মধ্যে একসঙ্গে সময় কাটানো একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। কেউ কেউ একটু এগিয়ে যৌনতাকেও সম্পর্কে থাকাকালীন খুব সহজ করেই গ্রহণ করেন। সে সব ক্ষেত্রে একে অপরের অবসর, ছুটিছাটাগুলি মিলিয়ে পরিকল্পনা করুন। সঙ্গী বা সঙ্গিনী যখন দূরে তখন অন্য বন্ধু বা বান্ধবীদের সঙ্গে খুব বেশি পার্টি করে না বেড়ানোই ভাল। অত্যন্ত সংবেদনশীল পার্টনারেরও এতে মন খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবু কোথাও গেলে তাঁকে জানিয়ে যান। মনের মানুষ দূরে রয়েছেন বলে সব সময়ে শোকাচ্ছন্ন থাকাটা একেবারেই কাজের কথা নয়। নিজের মনকে ঠিক রাখার দায়িত্বটা নিজেরই। পার্টনার কাছে থাকলে বা একই শহরে থাকলে যেমন হাসিখুশি থাকতেন, তেমনটাই থাকুন। এতে দূরে থাকা মানুষটিও ভাল থাকবেন। মাঝে মাঝেই সময় সুযোগ থাকলে কিছু চমক তুলে রাখুন তাঁর জন্য। হয়তো এক দিন সকালে তাঁর বাড়ির কলিং বেলের ওপারে বা অফিসের নীচে হাজির হয়ে গেলেন! এমন চমক পেতে সঙ্গীর মন্দ লাগবে না কিন্তু!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy