Advertisement
E-Paper

‘আইসক্রিম পার্লার চেয়ার’ কাকে বলে জানেন? হালের অন্দরসাজে নতুন করে ফিরছে পুরনো চেয়ার

অন্দরসজ্জার জিনিসপত্রের যে সমস্ত বড় ব্র্যান্ড রয়েছে দেশে তাদের মধ্যে কয়েকটি নামী ব্র্যান্ড ঘর সাজানোর চেয়ার হিসাবে কেভেন্টার্সের মতো দেখতে লোহার চেয়ারের বিজ্ঞাপন শুরু করেছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২৫ ১১:০৭
ব্রিটিশ সাহেবসুবোদের প্রাতরাশ সরবরাহের জন্য তৈরি করা হয় কেভেন্টার্স। সেখানেও রাখা হয় আইসক্রিম পার্লার চেয়ার।

ব্রিটিশ সাহেবসুবোদের প্রাতরাশ সরবরাহের জন্য তৈরি করা হয় কেভেন্টার্স। সেখানেও রাখা হয় আইসক্রিম পার্লার চেয়ার। ছবি : সংগৃহীত।

দার্জিলিঙের কেভেন্টার্সে কফি খেতে খেতে সেখানকার চেয়ারের নকশা লক্ষ্য করেছেন? খোলা ছাদে পাথরের গোল গোল টেবিল ঘিরে যে লোহার তারের প্যাঁচানো নকশাকাটা চেয়ার সার দিয়ে বসানো থাকে, সেগুলি দার্জিলিঙে কেভেন্টার্সের প্রায় জন্মের সময় থেকে রয়েছে। ওই চেয়ারের নকশা এতটাই বৈগ্রহিক যে, শুধু চেয়ারের নকশা দেখেই কেভেন্টার্স বলে চেনা যায়। ইদানীং যদিও কেভেন্টার্সে গেলে ওই চেয়ারের পাশাপাশি ফাইবারের চেয়ারও সাজানো থাকে। বোঝা যায়, খোলা ছাদে জল পড়ে চেয়ারের ক্ষয় ধরছে বলেই অপেক্ষাকৃত টেকসই বিকল্প বেছে নিয়েছে রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষ। তবে পুরনো ওই চেয়ারের নকশা নতুন করে জায়গা করে নিচ্ছে ভারতীয় অন্দরসাজে।

অন্দরসজ্জার জিনিসপত্রের যে সমস্ত বড় ব্র্যান্ড রয়েছে দেশে তাদের মধ্যে কয়েকটি নামী ব্র্যান্ড ঘর সাজানোর চেয়ার হিসাবে কেভেন্টার্সের মতো দেখতে লোহার চেয়ারের বিজ্ঞাপন শুরু করেছে। সেই সব চেয়ারের ছবি দেখে ভাল লাগার কথাও জানিয়েছেন ক্রেতারা। তাঁরা অবশ্য ওই চেয়ারকে কেভেন্টার্সের চেয়ার বলে চেনেন না। লোহার তার পাকানো ওই ধরনের চেয়ারের একটি নামও আছে। আইসক্রিম পার্লার চেয়ার। যার ইতিহাস প্রায় ২০০ বছরের পুরনো।

নামী ব্র্যান্ড ঘর সাজানোর চেয়ার হিসাবে কেভেন্টার্সের মতো দেখতে লোহার চেয়ারের বিজ্ঞাপন শুরু করেছে।

নামী ব্র্যান্ড ঘর সাজানোর চেয়ার হিসাবে কেভেন্টার্সের মতো দেখতে লোহার চেয়ারের বিজ্ঞাপন শুরু করেছে। ছবি: সংগৃহীত।

বিদেশে আইসক্রিম পার্লারের প্রচলন ১৭০০ শতকের শেষ দিকে। সে কালে ছোট্ট বাটিতে আইসক্রিম বা জেলেটো পরিবেশন করা হত নগরের উচ্চবংশীয়দের। পরে ১৮৬৯ সালে আইসক্রিম সেলুনও খোলে বস্টনে। সেখানে আইসক্রিমের পাশাপাশি নানা রকম স্বাদু পানীয়ও পরিবেশন করা হত। শিকাগোর এমনই একটি আইসক্রিম সেলুন অথবা পার্লারে প্রথম আইসক্রিম পার্লার চেয়ার দেখা যায় বলে ধারণা।

লোহার প্যাঁচানো নকশা করা চেয়ারে বসে আইসক্রিম খেতেন আমেরিকার সম্ভ্রান্তেরা।

লোহার প্যাঁচানো নকশা করা চেয়ারে বসে আইসক্রিম খেতেন আমেরিকার সম্ভ্রান্তেরা। ছবি: সংগৃহীত।

শিকাগোর সেই আইসক্রিম খাওয়ার জায়গাটি সাজানো হয়েছিল গ্যাসলাইটের মায়াবী আলো আর দেওয়ালে আয়না দিয়ে। সেই আইসক্রিম পার্লারেরই বিশেষত্ব ছিল লোহার তার দিয়ে পেঁচিয়ে তৈরি ওই চেয়ার। যা আপাতদৃষ্টিতে ভঙ্গুর বলে মনে হলেও আদতে ভঙ্গুর নয়। গোল কিংবা চৌকো টেবিলে পাতা দুধসাদা টেবিল ক্লথে পরিবেশন করা হতে আইসক্রিম। আর সেই আইসক্রিম ওই লোহার প্যাঁচানো নকশা করা চেয়ারে বসেই খেতেন আমেরিকার সম্ভ্রান্তেরা।

ক্রমে চেয়ারের নামই হয়ে যায় আইসক্রিম পার্লার চেয়ার। সেই সময়ে তো বটেই, পরবর্তী কালেও বহু আইসক্রিম এবং পানীয় খাওয়ার রেস্তরাঁয় ওই ধরনের চেয়ার দেখা গিয়েছে। ১৯১১ সালে দার্জিলিং যখন বাংলার ব্রিটিশ শাসকদের গ্রীষ্মাবকাশের প্রিয় জায়গা, তখন সেখানে ব্রিটিশ সাহেবসুবোদের মনোরঞ্জনের জন্য তৈরি করা হয় কেভেন্টার্স। যেখানে প্রাতরাশের পাশাপাশি আইসক্রিম এবং পানীয়ও পরিবেশন করা হবে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রচলিত ধারা মেনে সেখানেও রাখা হয়েছিল আইসক্রিম পার্লার চেয়ার।

পরবর্তী কালে বহু আইসক্রিম এবং পানীয় খাওয়ার রেস্তরাঁয় ওই ধরনের চেয়ার দেখা গিয়েছে।

পরবর্তী কালে বহু আইসক্রিম এবং পানীয় খাওয়ার রেস্তরাঁয় ওই ধরনের চেয়ার দেখা গিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।

ধীরে ধীরে অবশ্য নানা শৌখিন নকশার প্রভাবে আইসক্রিম পার্লার চেয়ার চোখের আড়ালে চলে যায়। তবে এ বার সেই চেয়ার বহু দিন পরে ফিরছে। রেস্তরাঁর বসার জায়গা হিসাবে নয়। গৃহস্থের অন্দরসজ্জার আসবাব হয়ে। লোহার তারের তৈরি ওই রকম দু’টি চেয়ার এবং একটি টেবিল। বারান্দার এক কোণে, ছোট্ট খাওয়ার ঘরে কিংবা খোলা ছাদের একান্ত সময় যাপনের জায়গার শোভা বর্ধন করবে।

Interior Designing Darjeeling
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy