Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

‘প্রতিদিন ২০ কিলোমিটার হাঁটি’, বলছেন মমতা

শহরের একাধিক চিকিৎসক মানছেন মুখ্যমন্ত্রীর এই স্বাস্থ্য দাওয়াই।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৯ ০১:১৬
Share: Save:

তিনি গাড়িতে উঠে রোড শো করার থেকে হেঁটে মিছিল করতেই সাবলীল। কারণ, যাঁরা গাড়িতে রোড শো করেন, তাঁদের এক ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে পা ফুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তিনি যখন নবান্নে থাকেন, পাঁচ মিনিটের বেশি এক জায়গায় বসে থাকেন না। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব ফাইল সই করেন। তাঁর কথায়, ‘‘এক বার বসে পড়লেন তো গেলেন! আর উঠতেই ইচ্ছে করবে না। শরীরের নাম মহাশয়। যা সওয়াবে, তাই সয়।’’ বুধবার আগরপাড়ার ঊষুমপুরে এক নির্বাচনী জনসভায় ভাষণের ফাঁকে এমনটাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মঙ্গলবারের ডামাডোলের পরে উত্তাল রাজ্য তথা দেশের রাজনীতি। তবে এ সবের জেরে বুধবার কিন্তু থমকে ছিল না কোনও দলেরই নির্বাচনী প্রচার। পূর্ব নির্ধারিত সেই জনসভায় গুরুগম্ভীর বিষয়ের মাঝে এ ভাবেই উঠে এল মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য সচেতনতার বার্তা। এ দিন তাঁর পরামর্শে বাড়তি গুরুত্ব পেল আগেকার দিনে মেয়েদের কাজের পদ্ধতির প্রসঙ্গ। আগে কেন মেয়েদের কম রোগ হত? মুখ্যমন্ত্রীর উত্তর, ‘‘মেয়েরা ঘর মোছা, মশলা বাটা, তরকারি কাটা, কাপড় কাচা সব করতেন। এতে হাত, কোমর-সহ সারা শরীরের ব্যায়াম হত। এখন তো যন্ত্র আসায় সবাই মেশিনের মতো হয়ে গিয়েছেন। অনেক দিন গাড়ি না চালালে, বাসন ব্যবহার না করলে দেখবেন মরচে পড়ে গিয়েছে। অনেকেই এখন যন্ত্রের মাধ্যমে শারীরচর্চা করেন। তবে কৃত্রিম কিছুই ভাল নয়। মনে রাখবেন ‘ওল্ড ইজ অলওয়েজ গোল্ড’। শুধু হাঁটলেও ক্যালোরি বেশি ঝরে।’’

নিজের কথা বলতে গিয়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘গত দেড় মাস ধরে একটানা নির্বাচনের প্রচার করছি। রোজ ২০ কিলোমিটার করে হাঁটি। আমি না হাঁটলে আমার মস্তিষ্ক হাঁটবে না। এমনকি আমি গলা এবং ও গালের ব্যায়ামও করি। নিজে সুস্থ থাকলে তবেই তো লড়াইটা জমবে।’’

মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শের সঙ্গে খানিকটা সহমত অস্থি-রোগ চিকিৎসক রামেন্দু হোমচৌধুরী। তাঁর কথায়, ‘‘নিজেকে সুস্থ রাখতে শারীরচর্চা অবশ্যই জরুরি। তবে এখন প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ে এমনিতেই শামিল সকলে। সে জন্য আগেকার দিনের মতো এখন মেয়েদের পক্ষে ঘরের কাজ হাতে করাটা সময়সাপেক্ষ। ফলে সকলকে যন্ত্রের সাহায্য নিতেই হয়।’’ তিনি জানান, শিশু, কমবয়সি এবং বয়স্ক সকলকেই প্রতিদিন সময় ধরে শারীরিক কসরত করতে হবে। সুস্থ রাখতে প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাদ্য তালিকায় যোগ করার ব্যাপারে নজর রাখতে হবে।

শহরের একাধিক চিকিৎসক মানছেন মুখ্যমন্ত্রীর এই স্বাস্থ্য দাওয়াই। তাঁদের মতে,— ছোটদের জাঙ্ক ফুড খাওয়ানোর প্রবণতা কমাতে হবে। ওদের মাঠেঘাটে খেলাধুলো, ক্যারাটে প্রভৃতির মতো শারীরিক কসরতের মধ্যে রাখুন। হাঁটার এখনও কোনও বিকল্প নেই। হাঁটলে পেশীতে রক্ত সংবহন ভাল হয়, অক্সিজেন বাড়ে, ভাল কোলেস্টেরল (এইচডিএল কোলেস্টেরল) বাড়ে। এই কোলেস্টেরল হৃদ্‌যন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখে। হাঁটার ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষমতা বাড়ে, ওজন নিয়ন্ত্রণ করা যায়, নিয়ন্ত্রণে থাকে রক্তে শর্করার মাত্রা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Health TIps Wellness
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE