শিশুর মন ভাল রাখার ওষুধ।
বাড়িতে পোষ্য থাকার সুবিধা অনেক। শুধু সময় কাটানো নয়, পোষ্যের থেকে বাড়ির শিশুরা শিখতে পারে অনেক কিছু। হালের এক গবেষণা বলছে এমনটাই। আমেরিকার মনোবিদ জিনা ম্যাকডোয়েল এবং স্টিভেন ফ্লেডম্যান তাঁদের সাম্প্রতিক গবেষণা দেখিয়েছেন, শিশুদের বেড়ে ওঠার সময়ে তাদের সঙ্গে পোষ্য থাকলে মনের জোর বাড়ে, নিজেদের আবেগের উপরে বেশি নিয়ন্ত্রণ আসে।
কী বলছে গবেষণা?
ম্যাকডোয়েল এবং ফ্লেডম্যানের গবেষণা বলছে, শিশুদের উদ্বেগ এবং অবসাদ কাটাতে পোষ্যের কোনও তুলনা নেই। বিশেষ করে অতিমারির সময়ে, যখন বহু শিশুই বাড়ি থেকে বেরোতে পারছে না, ক্লাস করছে অনলাইনে— তাদের উদ্বেগ বা অবসাদ হওয়া স্বাভাবিক। সেই সময়ে পোষ্য পারে মানসিক চাপ কাটিয়ে দিতে।
এ ছাড়াও এই সময়ে পোষ্যই হয়ে উঠতে পারে শিশুর একেবারে আদর্শ বন্ধু। ছোট পরিবার, যেখানে শিশুরা একা বড় হয়, সেখানে পোষ্য তাদের একঘেয়েমি কাটিয়ে দিতে পারে।
যে সব শিশুরা অটিজমে আক্রান্ত, তাদের জন্যও পোষ্য বিড়াল খুব কাজের হয়ে উঠতে পারে। এমনটাই বলছে ম্যাকডোয়েল এবং ফ্লেডম্যানের গবেষণা।
মনোবিদ কী বলছেন?
মনোবিদ জয়িতা সাহা বলছেন, এ সবের পাশাপাশি আরও অনেকগুলো উপকার হতে পারে ছোট শিশুদের সঙ্গে পোষ্য থাকলে। পোষ্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার দায়িত্বের কিছুটা শিশুদের উপরে ছেড়ে দেওয়া উচিত। এতে সে শুধু তার পোষ্যকেই নিয়মানুবর্তিতা শেখাবে না, নিজেও শিখবে। জয়িতার কথায়, ‘‘এমন বহু শিশু আছে, যারা কোনও দায়িত্ব নিতে চায় না। ঠিক সময়ে ঘুম থেকে ওঠে না। নিজে স্নান করতে চায় না। খেতে চায় না। এদের দায়িত্ব শেখানোর জন্য পোষ্য খুবই কাজে লাগতে পারে।’’ তাঁর মতে, একটা কুকুর থাকলে, তাকে হাঁটাতে নিয়ে যাওয়া বা খেলানোর দায়িত্ব যদি শিশুদের উপর দেওয়া হয়, তাদের দায়িত্ব বোধ এক লাফে অনেকটা বেড়ে যায়।
আরও একটি উপকারের কথা বলছেন জয়িতা। ‘‘এখন পরিবার ছোট হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে বাইরে খেলতে যাওয়া বন্ধ। ফলে বহু শিশুই মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ছে। তাদের জন্য পোষ্য খুবই কাজের হয়ে উঠতে পারে। পোষ্যর সঙ্গে সময় কাটালে মোবাইল আসক্তি কমবে’’, মত তাঁর।
তবে বহু পরিবারের পক্ষেই বাড়িতে নতুন একটা সদস্য নিয়ে আসা কঠিন। স্থানাভাব কিংবা অর্থনৈতিক কারণেও হতে পারে। এই সব পরিবারের শিশুদের সপ্তাহে এক দিন কোনও অনাথ পশুদের রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। কুকুর-বিড়ালের বদলে অন্য ধরনের পোষ্যর সান্নিধ্যও দেওয়া যেতে পারে। যেমন অ্যাকোয়ারিয়াম। বাড়িতে একটি অ্যাকোয়ারিয়াম থাকলেও শিশুর মন ভাল হয়। এমনটাই বলছে ম্যাকডোয়েল এবং ফ্লেডম্যানের গবেষণা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy