অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ম মেনে খেলেও কাজ না হলে সচেতন হোন। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ম করে পূর্ণ মেয়াদকাল অবধি খেলেও কাজে আসছে না ওষুধ! আজকাল আকছার এমন অভিজ্ঞতার সাক্ষী রোগী থেকে চিকিৎসকরাও। এমনটা কি আপনার সঙ্গেও হয়েছে? তা হলে সাবধান! গবেষকদের দাবি, এই কাজ না করার কারণের নেপথ্যে দায়ী আরও এক অ্যান্টিবায়োটিক ‘কোলিস্টিন’।
না, তার মানে এই নয় যে, আপনিই ওষুধ আকারে এই অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করছেন, যার ফলে অন্য অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ নষ্ট হচ্ছে। বরং এই ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিকের প্রবেশ শরীরে খানিক অন্য রকম ভাবে হয়। কী ভাবে তা হয়। জানেন?
জ্বর বা সর্দি-কাশির সময় চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার চল নতুন নয়। প্রায়শই কড়া দাওয়াই দিয়ে অসুখবিসুখ ছাড়াতে অ্যান্টিবায়োটিকের শরণ নিতেই হয়। কিন্তু এই অ্যান্টিবায়োটিকের কর্মক্ষমতা নষ্ট হচ্ছে পোলট্রির হাঁস-মুরগির ডিম ও মাংস খাওয়ার কারণে!শুধু পোলট্রিই নয়, মাংস প্রদান করে এমন পশুদের স্বাস্থ্যকর করে তোলার জন্যও এই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হয়, যা চরম ক্ষতি করে মানবস্বাস্থ্যের।
আরও পড়ুন: ওষুধ ছাড়াই দাঁতের সমস্যাকে কব্জা করুন ঘরোয়া এই উপায়ে
পোলট্রি ফার্মে অবাধ ব্যবহৃত অবৈধ কোলিস্টিন শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করছে। ছবি: শাটারস্টক।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, “মানুষের শরীরে নানা রোগ প্রতিহত করতে যে অ্যান্টিবায়োটিকগুলি ব্যবহৃত হয়, তাদের সবক’টি গুণাগুণই নষ্ট করে দিতে পারে এই কোলিস্টিন। এই অ্যান্টিবায়োটিক মানবদেহের বিশেষ কিছু সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বা নির্দিষ্ট সমক্রমণের শিকার না হলেও এটি খেলে তার ক্ষতি মারাত্মক। অতিরিক্ত হৃদরোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়া, ওবেসিটি, এমনকি কোনও কোনও ক্ষেত্রে লিভার ক্যানসারেরও কারণ এই কোলিস্টিন। বহু বার নানা ভাবে ব্যবসায়িক স্বার্থে কোলিস্টিন ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। তবু সচেতনতা আসেনি, যা খুবই শঙ্কার বিষয়।’’
আমাদের দেশে এটির ব্যবহার কত খানি? সম্প্রতি লন্ডনের ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজিম একটি সমীক্ষা চালায় ৷ তাতেযে তথ্য উঠে আসে, তা আরও বেশি শঙ্কার কারণ হিসাবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। সমীক্ষায় প্রকাশ, ভারতে বেশির ভাগ পোলট্রির মালিকরাই বেশি পরিমাণ মাংস ও ডিমের লোভে, পাখিদের কৃত্রিম উপায়ে স্বাস্থ্যবান করে তুলতে এই অ্যান্টিবায়োটিক অত্যন্ত উচ্চমাত্রায় ব্যবহার করে থাকেন।বাদ নেই পশুর মাংস বিক্রেতারাও। এ ছাড়াও বাজারে যে প্রক্রিয়াজাত মাংস পাওয়া যায়, যেমন বার্গারের ভিতরের মাংসের পুর, নাগেট্স বা ফ্রায়েড চিকেনের রেডিমেড প্যাকেটজাত চিকেন— এ সবেও এই আন্টিবায়োটিকের উপস্থিতি থাকে।
এমনকি এই এর আগেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বার বার সতর্ক করে যে, মানবদেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিক যেন কোনও ভাবেই পশু-পাখির শরীরে ব্যবহার করা না হয়৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও টনক নড়েনি পোলট্রি ও পশুর মাংস বিক্রতাদের।
আরও পড়ুন: একই হেলমেট বা টুপি অনেকে ব্যবহার করেন? কী ক্ষতি করছেন জানেন?
চিকিৎসকদের পরামর্শ, মাংস-ডিম খাওয়ার আগে সচেতন হোন, চেষ্টা করুন ব্রয়লারের হাঁস-মুগি এড়িয়ে আকারে ছোট, ওজনে হালকা হাঁস-মুরগি কিনতে। পশুর মাংসের সময়ও একই ভাবে ছোট আকারের কম মাংসের পশু কিনুন। বাজারের প্রক্রিয়াজাত মাংস একেবারে না কেনাই ভাল। নইলে এই কোলিস্টিন ধীরে ধীরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে নানা অসুখের দিকে ঠেলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy