রাস্তায় চা-কফি খাওয়ার আগে দেখে নিন কিসের কাপ। —নিজস্ব চিত্র
কাজের চাপ কাটাতে ঘনঘন অফিসের বাইরে বেড়িয়ে চা খান? কিংবা রাস্তায় বেড়িয়ে চেনা ঠেকের আড্ডায় ঘন ঘন চা-কফিতে চুমুক চলে? কিংবা রাস্তায় বেড়িয়ে শিশুকে কাপে করে খেতে দেন দুধ? তা বেশ। নিয়ন্ত্রণ রেখে চা-কফি খান, ক্ষতি নেই। শিশুর প্রয়োজনে তাকে দুধও খাওয়ান রাস্তায়। কিন্তু কিসে করে খান এ সব?
এই ‘কিসে’-র প্রশ্নেই সাবধান করছেন চিকিৎসকরা। মাটির ভাঁড়ের বদলে যে হারে প্লাস্টিকের কাপের প্রচলন বিগত কয়েক বছরে আমাদের দেশে শুরু হয়েছে, তাতে মোটেও স্বস্তিতে নেই আমাদের স্বাস্থ্য। চিকিৎসকদের সুরে সুর মিলিয়ে একই দাবি ‘আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অব মেডিসিন’-এরও।
সাম্প্রতিক একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, বিশ্বে ক্যানসার বিস্তারের বিচারে চিন ও আমেরিকার পরেই ভারতের স্থান। ভারতে প্রতি বছর ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ৪.৫ থেকে ৫ শতাংশ হারে।
আরও পড়ুন: ফ্রিজে এ সবও রাখেন না কি? তা হলে আজ থেকেই মত বদলান
‘‘আর এই ক্যানসারের একটা অন্যতম কারণ যথেচ্ছ প্লাস্টিকের ব্যবহার। বিশেষ করে বিয়ের ভোজ থেকে রাস্তার খাবার, এমনকি বোতল থেকে শুরু করে চায়ের কাপ সবেতেই প্লাস্টিকের ছোঁওয়া। নামী-দামি কফি শপেও আকছার মেলে প্লাস্টিকের ড্রিঙ্ক পট। সেও অসুখ ডাকে। তবে সে সবের চেয়েও ক্ষতিকর সাধারণ সস্তা প্লাস্টিকের চায়ের কাপ।’’— জানালেন ক্যানসার বিশেষজ্ঞ সোমনাথ সরকার।
সুস্থ থাকতে এড়িয়ে চলুন প্লাস্টিকের কাপ। —নিজস্ব চিত্র।
চায়ের প্লাস্টিক কাপ থেকে মুখে ও লিভারে ক্যানসার ছড়ানোর কথা জানিয়েছেন ‘আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অব মেডিসিন’-এর মুখ্য গবেষকরা। তাঁদের মতে, এ সব চায়ের কাপ মূলত মাইক্রোপ্লাস্টিক দিয়েই তৈরি হয়। এতে থাকা টক্সিক পদার্থ বিসফেনল-এ ক্যানসারের অন্যতম কারণ। বিশেষ করে গরম পানীয়ের সংস্পর্শে এলে তা সহজেই পানীয়র সঙ্গে মিশে যায়। মহিলাদের ইস্ট্রোজেন হরমোনের কার্যকারিতাকে বাধা দেয় এটি। এমনকি পুরুষদের শুক্রাণু কমিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রেও অন্যতম দায়ী এই বিসফেনল-এ।
আরও পড়ুন: স্মৃতি দুর্বল, ভাবছেন অ্যালঝাইমার্স? তা কিন্তু আসলে নয়!
সাধারণত, মাটির ভাঁড়ের তুলনায় প্লাস্টিকের কাপ সস্তা ও সহজলভ্য হওয়ায় এতে চা-কফি কাওয়ার প্রবণতা বাড়েছে। এই ধরনের কাপ তৈরিতে ব্যবহৃত পলিভিনাইল ক্লোরাইড (পিভিসি)-কে নরম করা হয় থ্যালেট ব্যবহার করে। এই থ্যালেট শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। শ্বাসকষ্ট, অটিজম থেকে শুরু করে স্তন ক্যানসার— নানা রকম ভয়াবহ অসুখ ছড়ায় এই থেকেই।
সুতরাং সামগ্রিক ভাবে প্লাস্টিক বর্জন শুরু করে দিন আজ থেকেই। না বলুন প্লাস্টিকের চায়ের কাপকেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy