জীবনের উপান্তে এসে অনেকেই বলেন, হস্টেল জীবনটাই সবচেয়ে ভাল ছিল। সন্তানকে বড় করতে গিয়ে অভিভাবকেরা অতীতের সেই দিনগুলির কথা বলতে গিয়ে আবেগে ভাসেন। অনেকেরই ধারণা, স্বনির্ভর হওয়ার প্রথম ধাপই হল হস্টেল জীবন।
তবে শুরুটা অনেকের ক্ষেত্রেই চ্যালেঞ্জিং হয়। প্রথম বার বাড়ির নিরাপত্তা, আরাম ছেড়ে নতুন জায়গায় গিয়ে আর পাঁচ জনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য বাড়তি উৎকণ্ঠা থাকে অধিকাংশ পড়ুয়ারই। সেখানে মা, বাবা থাকবেন না। বা চাইলেই প্রয়োজনের জিনিস চট করে মিলবে না। হস্টেল যাওয়ার জন্য মানসিক প্রস্তুতির পাশাপাশি দরকার প্রয়োজনের জিনিস সঙ্গে রাখা।
প্রথমবার হস্টেলে যাওয়ার সময় কী কী সঙ্গে রাখবেন?
আরও পড়ুন:
ঘরের জিনিস: হস্টেলের একটি ঘরে সাধারণত দু’জন বা তার চেয়েও বেশি জন থাকেন। ফলে জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখার সুযোগ থাকে না। তা ছাড়া জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখার জায়গার অভাবও থাকে। তাই প্রয়োজনেরটুকুই কাছে রাখা ভাল। যেহেতু ঘরে জিনিস রাখার স্থান কম, তাই দুই তিনটি তাক দেওয়া, চাকা লাগানো প্লাস্টিকের ক্যাবিনেট রাখাও সুবিধাজনক হবে। খাটের পাশে রাখা দরকার একটি পাপোসও। একই ঘর অনেকে ব্যবহার করার ফলে নোংরা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। সুন্দর পাপোস ঘরের শোভাও বৃদ্ধি করবে এবং বার বার পা মুছে উঠলে বিছানার চাদর দ্রুত নোংরা হবে না।
বিছানার চাদর: সঙ্গে নেওয়া দরকার ২-৩টি বিছানার চাদর। এই চাদর যেমন পাতা যায়, গায়ে দিতেও লাগে। ব্যস্ততার মধ্যে চাদর কাচার সময় না-ও হতে পারে। তাই সঙ্গে বেশি থাকা ভাল। হালকা, সুতির চাদর ব্যবহার করা সুবিধাজনক হবে।
পোশাক: দৈনন্দিন ব্যবহারের পোশাক ছাড়াও সঙ্গে একটি শাড়ি, চুড়িদার, পাঞ্জাবি-পাজামা বা ভাল পোশাক সঙ্গে রাখা দরকার। বন্ধুরা মিলে কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা করলেও ভাল পোশাকের দরকার হতে পারে।
পরিষ্কারের জিনিসপত্র: হস্টেলে যাওয়া মানে নিজের জিনিসপত্র পরিষ্কারের দায়িত্ব নিজের। জীবাণুনাশক ওয়াইপস, মাইক্রোফাইবার ক্লথ কাজে লাগবে। সঙ্গে রাখা দরকার টিস্যু বা হাত মোছার কাগজও। নিজের পোশাক, বিছানার চাদর কাচাকাচিও করতে হবে। সে কারণে, সাবান থাকা দরকার।
টুকিটাকি জরুরি জিনিস: সেফটিপিন, ছুরি, হ্যাঙ্গার, দড়ি, জামা আটকানোর ক্লিপ, ছোট কৌটো বা টিফিনবক্সও অনেক কাজে লাগে। প্রতি দিন জামা কাচা সম্ভব নয়। এক বার পরা জামা হাওয়ায় মেলে দেওয়ার জন্য হ্যাঙ্গার কাজে লাগবে। এ ছাড়া বাইরে কোথাও জামা, চাদর শুকোনোর জন্য দড়ি, ক্লিপের দরকার পড়বে। হাতের কাছে খাবার মজুত করার জন্য কৌটোও প্রয়োজনীয়। পোশাক, অন্তর্বাস, টুকিটাকি জিনিস ছোট, বড় স্বচ্ছ প্লাস্টিকের প্যাকেটে আলাদা করে গুছিয়ে রাখতে পারেন। এতে প্রয়োজনে খুঁজে পেতে সুবিধা হয়।
স্নানঘরের জিনিস: একই স্নানঘর যেহেতু সকলে ব্যবহার করবে তাই সাবান থেকে শ্যাম্পু, ক্রিম, তোয়ালে সবই নিজের জায়গায় গুছিয়ে রাখা জরুরি। এ জন্য ছোট বাক্সে নিজের জিনিস নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে দিতে পারেন।
প্রয়োজনীয় ওষুধ: দৈনন্দিন যদি কোনও ওষুধ খেতে হয়, প্রেসক্রিপশন –সহ সেটি একটি বাক্সে গুছিয়ে রাখা দরকার। এ ছাড়াও প্রয়োজনীয় ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শে সঙ্গে রাখা জরুরি।
ছোটখাটো অনেক জিনিসই স্মৃতির সঙ্গে জুড়ে থাকে। তেমন জিনিস সঙ্গে রাখেন অনেকেই। কিন্তু হস্টেলে জিনিসপত্র এদিক-ওদিক হয়ে যাওয়ার সম্ভবনাও রয়ে যায়। সে কারণে মূল্যবান অলঙ্কার, দামি জিনিস বা স্মৃতিসম্পৃক্ত জিনিস বাড়িতে রেখে যাওয়াই ভাল।