Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
নুন

করোনা আতঙ্কে কমেনি একটুও, রোগ এড়াতে দূরে থাকুক নুন

বাজারচলতি আয়োডাইজ়ড যে নুন পাওয়া যায়, তাতে ৪০ শতাংশ সোডিয়াম এবং ৬০ শতাংশ ক্লোরাইড থাকে।

নুন বেশি খেলেই বাড়বে বিপদ। ছবি-শাটারস্টক থেকে নেওয়া

নুন বেশি খেলেই বাড়বে বিপদ। ছবি-শাটারস্টক থেকে নেওয়া

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২০ ১৭:৪৯
Share: Save:

করোনা আবহ। লকডাউনে বাড়িতে নিত্যনতুন রান্না করেছেন প্রতিদিন। সুস্বাদু রান্না মানেই নুন, চিনি, তেল-মশলা। বিপদ এক লাফে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে তাতে।

নুন খেলেই গুণ! উঁহু। বরং তার উল্টো। নুন বেশি খেলেই বাড়বে বিপদ। শুধু বেশি বললে ভুল হবে। প্রতিদিন নুন খাওয়া উচিত খুব সামান্য পরিমাণে। সরাসরি না হলেও প্রতিদিন রান্নায় নুন খাওয়ার অভ্যাসের কারণেই রোগ প্রতিরোধ শক্তি অনেকটাই কমে যায়, বলছেন চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ, প্রত্যেকেই।

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘নুনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে। সুষম আহার মানেই নুনের পরিমাণ কমাতে হবে। তবে শুধু নুন নয়, চিনি এবং তেলেও একই সঙ্গে লাগাম টানতে হবে। হাইপারটেনশনের সমস্যা দেখা দেবে যদি কেউ নিয়মিত অতিরিক্ত পরিমাণে নুন খান। সে ক্ষেত্রে করোনা সংকটের সময় কো-মর্বিড ফ্যাক্টর অর্থাৎ অন্য রোগ হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। বেশি নুন-চিনি-তেলে সেটা বেড়ে যায়।’’

আরও পড়ুন: স্রেফ নুন-জল গার্গলেই জব্দ করোনা, বলছে গবেষণা​

কিন্তু কেন ?

বাজারচলতি আয়োডাইজ়ড যে নুন পাওয়া যায়, তাতে ৪০ শতাংশ সোডিয়াম এবং ৬০ শতাংশ ক্লোরাইড থাকে। শুধু খাবারে স্বাদ নয়। স্টেবিলাইজার এবং বাইন্ডার হিসেবেও কাজ করে এটি। নুন তো খাবার সংরক্ষণেও বড় ভূমিকা পালন করে। এই প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদ সোমা চক্রবর্তী বলেন, বেশি পরিমাণ নুনে ব্যাকটিরিয়া থাকতে পারে না। মাছে নুন-হলুদ মাখিয়ে রেখে দেওয়ার কারণও সেটি। কিন্তু প্রতিদিনের খাবারে নুনের প্রয়োজন খুবই সামান্য।

আরও পড়ুন: করোনা-আবহে এই ফলের রস হতে পারে রক্ষাকর্তা​

তাঁর কথায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে প্রতি দিন ৬ গ্রাম নুন অর্থাৎ ২.৪ গ্রাম সোডিয়াম প্রয়োজন। অর্থাৎ হিসেব কষে দেখলে যেটা মাত্র এক চামচ। এর চেয়ে বেশি নুন শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। চোখে দেখা যায় যে নুন, তার চেয়ে বেশি ক্ষতিকারক ইনস্ট্যান্ট খাবার, স্ন্যাক্সে থাকা নুন।

বেশি নুন মানেই বেশি সোডিয়াম। শরীরে মাত্রাতিরিক্ত সোডিয়াম প্রবেশ করলে কী হতে পারে?

• রক্তচাপ বাড়বে। ফলে হাইপারটেনশন এবং হৃদরোগের সম্ভাবনাও বাড়বে। যা থেকে পরবর্তীতে ব্রেন স্ট্রোকও হতে পারে।

• ক্যালসিয়াম-সোডিয়ামের একটা নির্দিষ্ট ভারসাম্য রয়েছে। তা বিঘ্নিত হবে। ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমে হাড়ের ক্ষতি হতে পারে।

• সোডিয়ামের কারণে হাত-পা-ফুলে যাওয়া, কিডনির সমস্যা এই দুই-ই দেখা দেবে। সোডিয়ামের পরিমাণ রক্তে বেড়ে গেলে তরল ঘিরে থাকা কোষ এবং রক্তবাহে রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধির অর্থ, হৃদযন্ত্র আরও বেশি সক্রিয় হবে, রক্তবাহে আরও বেশি চাপ পড়বে। ক্ষতি হবে। হার্ট ফেলিওরের সম্ভাবনাও রয়েছে।

সোমা চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, "আজ নুন খেলাম না। কাল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যাবে। সেটা কখনও নয়। কিন্তু নুনের পরিমাণ দিনের পর দিন বাড়তে থাকলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্যে সমস্যা তৈরি হবে। ফলে প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে এর প্রভাব পড়বে। তাই খাবারে যতটা সম্ভব কম নুন খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতেই হবে।"

আয়োডাইজড নুনের বিকল্প হিসেবে কী ব্যবহার করা যেতে পারে?

আয়োডিনযুক্ত নুনের সঙ্গে সৈন্ধব লবণ এবং বিট নুন ব্যবহার করতে হবে। আয়োডিনযুক্ত নুন পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE