শহরের অনাময় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিউরো-সার্জারি বিভাগ খোলার ব্যাপারে প্রস্তুতি নিতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষাকে চিঠি দিল স্বাস্থ্য দফতর। গত ৯ অক্টোবরের চিঠিতে অপারেশন থিয়েটার-সহ অন্যান্য ঘর খুলতে কতটা জায়গা লাগবে, কত টাকা প্রয়োজন হবে তা জানাতে বলা হয়েছে। তাছাড়া বিভাগ চালাতে কত জন চিকিৎসক, সার্জেন ও কর্মী লাগবে তাও প্রস্তাব আকারে জানাতে বলা হয়েছে অধ্যক্ষাকে।
অধ্যক্ষা মঞ্জুশ্রী রায় বলেন, “চিঠি পেয়েছি। ইতিমধ্যে আমরা বিষয়টি নিয়ে একটি বৈঠকও করেছি। কী ধরনের ভবন লাগবে, কী কী যন্ত্রপাতি লাগবে, কত সার্জেন বা সাধারণ কর্মী লাগবে তার তালিকা তৈরি হচ্ছে। তালিকা তৈরি হলেই আমরা সেই প্রস্তাব রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে পাঠাব।”
বর্ধমানের উপকণ্ঠে আলিশা মৌজায় এই অনাময় হাসপাতালকে কেন্দ্র করে প্রথমে জেলা হাসপাতাল তৈরির কথা হয়েছিল। কিন্তু তা চালু করতে না পেরে বর্ধমানের জেলা পরিষদ একটি বেসরকারি সংস্থাকে ৩১ বছরের লিজ দিয়ে দেয়। এ নিয়ে বর্ধমানের ক্রেতা সুরক্ষা ও কল্যাণ কেন্দ্র হাইকোর্টে মামলাও দায়ের করে। ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বরে হাইকোর্ট জেলা প্রশাসনকে ওই হাসপাতালকে সরকারি তত্ত্বাবধানে সমস্ত বিভাগ চালু করতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু কয়েকটি বিভাগ খোলা হলেও অনেক বিভাগ খোলা সম্ভব হয়নি আজও। তার মধ্যেই আছে এই নিউরো-সার্জারি ইউনিট।
ওই সংস্থার সাধারণ সম্পাদক কুদরাতুল আবেদিন জানিয়েছেন, হাসপাতালটি যেহেতু জাতীয় সড়কের উপর অবস্থিত তাই প্রতিদিনই দুর্ঘটনাগ্রস্থ রোগীদের চাপ থাকে। কিন্তু নিউরো-সার্জারি বিভাগ না থাকায় সমস্যায় পড়ছেন তাঁরা। এই মুশকিল থেকে বেরোতেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সম্প্রতি চিঠি লিখে দুর্ঘটনাগ্রস্থ মানুষের চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার এবং ডাক্তারি পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে নিউরো-সার্জারি ইউনিট চালু করার আবেদন জানানো হয়েছিল। এরপরে ৩ নভেম্বর রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে তাঁদের সংস্থাকে একটি চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষাকে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো-সহ উপযুক্ত চিকিৎসক ও প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ানদের তালিকা অবিলম্বে পাঠাতে বলা হয়েছে।
অধ্যক্ষা মঞ্জুশ্রীদেবী অবশ্য বলেন, “রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আমরা এখনও ওই প্রস্তাব পাঠাতে পারিনি। তবে কী কী লাগবে তার তালিকা তৈরি করছি। কলকাতা থেকে এক নিউরো-সার্জেনকে ডেকে তাঁকে আমাদের কী ধরনের পরিকাঠামো লাগবে তা স্থির করতে বলেছি।” তিনি আরও জানান, অনাময় হাসপাতালের দোতলায় একটি ভবন অর্ধসমাপ্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। সরকারের কাছ থেকে কিছু টাকা পেলেই ওই ভবনের কাজ শেষ করা হবে। রাজ্য সরকারকে কয়েকদিনের মধ্যে ওই প্রস্তাব দেওয়া হবে বলেও তাঁর দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy