Advertisement
E-Paper

খুলির অংশ হারিয়ে ফেলে প্রশ্নের মুখে হাসপাতাল

দুর্ঘটনায় গুরুতর চোট পাওয়া তরুণের মাথার খুলির একটি ছোট অংশ সংরক্ষিত ছিল হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, পরবর্তী সময়ে তরুণের অবস্থার উন্নতি হলে ওই অংশটি মস্তিষ্কে ফের প্রতিস্থাপন করা হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৪ ০২:১২

দুর্ঘটনায় গুরুতর চোট পাওয়া তরুণের মাথার খুলির একটি ছোট অংশ সংরক্ষিত ছিল হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, পরবর্তী সময়ে তরুণের অবস্থার উন্নতি হলে ওই অংশটি মস্তিষ্কে ফের প্রতিস্থাপন করা হবে। কিন্তু সেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই এখন চিঠি দিয়ে পরিবারের লোকজনকে জানালেন, ওই অংশটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবতে হবে।

ই এম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালের এই ঘটনা বেসরকারি হাসপাতালের দায়বদ্ধতার নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। অভিযোগ, বেসরকারি হাসপাতালগুলির উপরে এমনিতেই স্বাস্থ্য দফতরের তেমন কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। তা হলে কি যে কোনও ধরনের গাফিলতি ঘটিয়েই পার পেয়ে যাবে তারা? অভিযুক্ত রুবি জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ নিয়ে একনই কোনও কথা বলতে চাননি। বেসরকারি হাসপাতালগুলির সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব হসপিটালস অব ইর্স্টান ইন্ডিয়ার অন্যতম সদস্য রূপক বড়ুয়া বলেন, “বিষয়টা বিস্তারিত জানি না। তাই এখনই কোনও মন্তব্য করা সম্ভব নয়।”

যদিও আইনজ্ঞেরা মনে করছেন, সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের এমন আচরণ গুরুতর গাফিলতির পর্যায়েই পড়ছে। যেমন প্রাক্তন আইনমন্ত্রী নিশীথ অধিকারী বললেন, “এর জন্য ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৩৮ ধারা অনুযায়ী মামলা হতে পারে। এই ধারায় মারাত্মক অনিয়ন্ত্রিত কাজকর্ম ও গাফিলতির জন্য কারও জীবন বিপন্ন করার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া কেউ চাইলে খুনের চেষ্টার মামলাও করা যেতে পারে।” মেডিকো-লিগাল বিশেষজ্ঞ শেখর বসুও ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৩৮ ধারায় মামলার কথা উল্লেখ করেন। এই ধরনের ঘটনা গুরুতর অপরাধ হিসাবে গণ্য হতে পারে বলে জানান তিনি। তবে তাঁর মতে, এতে খুনের চেষ্টার মামলা হয় না। হলে তা টিকবে না। আবার যদি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেরা উদ্যোগী হয়ে ওই ব্যক্তির জন্য বিকল্প খুলির অংশের ব্যবস্থা করেন, তা অস্ত্রোপচার করে লাগিয়ে দেওয়া হয় এবং রোগী তাতে সুস্থ হয়ে যান তা হলে মামলা দুর্বল হয়ে যাবে বলে জানান শেখরবাবু।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালের মার্চে ওই হাসপতাল থেকেই ঝাঁপ দেন অর্ণব দত্ত (২৩)। তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। ওই সময়ে পর পর তাঁর কয়েকটি অস্ত্রোপচার হয়। মস্তিষ্কের একটি অস্ত্রোপচারের সময়ে খুলির ছোট একটি অংশ পরবর্তী সময়ে প্রতিস্থাপনের জন্য আলাদা করে রাখা হয়। সেই অংশটি হাসপাতালেই সংরক্ষিত ছিল।

অর্ণবের পরিবারের অভিযোগ, সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে তাঁদের চিঠি দিয়ে জানানো হয় ওই অংশটি পাওয়া যাচ্ছে না। বিকল্প হিসেবে টাইটেনিয়াম বা বোন সিমেন্ট দিয়ে খুলির নকল অংশ বানিয়ে প্রতিস্থাপনের কথাও বলা হয়। পরিবারের প্রশ্ন, এমনিতেই টানা দেড় বছর ধরে চিকিৎসার খরচ জোগাতে গিয়ে তাঁরা কার্যত ফতুর হয়ে গিয়েছেন। তার উপরে এখন নকল খুলির অংশের ব্যবস্থা করার মানে বাড়তি খরচ। হাসপাতালের গাফিলতির জন্য সেটা তাঁরা কেন বহন করবেন? পাশাপাশি ‘ফরেন বডি’ শরীরে লাগালে তা থেকে সংক্রমণের ভয়ও রয়েছে।

রুবি জেনারেল হাসপাতালের তরফে সিনিয়ার জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) টি এন ভট্টাচার্য প্রথমে বলেন, “আমরা এ ব্যাপারে কিছু শুনিনি।” কিছুক্ষণ পরে তিনি ফের বলেন, “শুনেছি, কিন্তু যা বলার দু’দিন পরে বলব।”

portion of scull em bypass ruby hospital negligence arnab dutta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy