Advertisement
১৯ মে ২০২৪

খরচই সার, পরিষ্কার হয় না হাসপাতাল

প্রতি মাসে হাসপাতাল সাফাইয়ে খরচ হয় লক্ষ টাকার উপরে। অথচ জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের গোটা এলাকা জুড়ে জঙ্গল ও আবর্জনার স্তূপ। নিকাশি নর্দমা সাফাইয়ের বালাই নেই ভিতরে বাইরে কোথাও। নেই ব্লিচিং বা ফিনাইল ছড়ানোর ব্যবস্থা। একই অবস্থা ওয়ার্ডের মধ্যেও। প্রসূতি বিভাগে পা রাখার উপায় নেই। শৌচাগারের দুর্গন্ধে সেখানে ঢোকা দায়।

জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে এ ভাবেই ছড়িয়ে থাকে আবর্জনার স্তূপ। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।

জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে এ ভাবেই ছড়িয়ে থাকে আবর্জনার স্তূপ। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৪ ০২:৪৫
Share: Save:

প্রতি মাসে হাসপাতাল সাফাইয়ে খরচ হয় লক্ষ টাকার উপরে। অথচ জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের গোটা এলাকা জুড়ে জঙ্গল ও আবর্জনার স্তূপ। নিকাশি নর্দমা সাফাইয়ের বালাই নেই ভিতরে বাইরে কোথাও। নেই ব্লিচিং বা ফিনাইল ছড়ানোর ব্যবস্থা।

একই অবস্থা ওয়ার্ডের মধ্যেও। প্রসূতি বিভাগে পা রাখার উপায় নেই। শৌচাগারের দুর্গন্ধে সেখানে ঢোকা দায়। প্রায় প্রতিদিনই এই নিয়ে রোগীদের অভিযোগ শুনতে শুনতে অতিষ্ঠ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমা হাসপাতালে ৩০০ রোগীর জায়গায় গড়ে চারশো’রও বেশি রোগী ভর্তি থাকেন। আটটি ওয়ার্ডে তিন শিফটে প্রতিদিন অন্তত ২৪ জন সাফাইকর্মী প্রয়োজন হয়। কিন্তু জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে সব মিলিয়ে সাফাইকর্মী রয়েছেন সাকুল্যে ১১ জন। ওয়ার্ড মাস্টার আনারুল হকের সাফ কথা, ‘‘১১ জন কর্মী দিয়ে এত বড় হাসপাতালের আটটি ওয়ার্ড যে ভাবে সামলানো সম্ভব সেটাই করা হচ্ছে। সবাই হাসপাতালে আমাকে হাতের কাছে পেয়ে অভিযোগ করছে। আমি তাদের পরিস্থিতির কথা বুঝিয়ে বলছি।”

সাফাইকর্মীর এই সঙ্কটে এক ঠিকাদারি সংস্থাকে হাসপাতাল সাফাইয়ের ভার দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, জনা পাঁচেক কর্মীকে কাজে লাগিয়ে প্রতি মাসে গড়ে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে বিল করছে ওই সংস্থা। ঠিক কী কী কাজ করেন ওই সংস্থার কর্মীরা তা জানা নেই খোদ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টারেরও। তিনি বলেন, ‘‘ওই সংস্থার কত জন সাফাই কর্মী আছেন, তাঁরা কোথায়-কী কাজ করেন, তাঁদের নাম-পরিচয় কীআমি তার বিন্দুবিসর্গও কিছুই জানি না। গোটা হাসপাতালের ভিতর ও বাইরের চত্বর ওই সংস্থারই সাফাই করার কথা। কিন্তু কেন তা হয় না সেটাও তারাই জানে। আমি সমস্ত ঘটনা হাসপাতালের সুপারকে জানিয়েছি। তবে এটুকু জানি রাজ্য সরকার প্রতি মাসে লক্ষ টাকার উপরে বিল মেটায় হাসপাতাল সাফ-সুতরো রাখার জন্য।” তারপরেও গোটা হাসপাতাল ভরেছে আগাছার জঙ্গলে।

হাসপাতালের সুপার শাশ্বত মণ্ডল বলেন, “আগাছার জঙ্গল নিয়মিত কেটে ফেলার কথা ওই ঠিকাদারি সংস্থার। তারা জানিয়েছে নিয়মিত কাটার পরে ফের জন্মাচ্ছে আগাছা। তাই এবার কীটনাশক স্প্রে করা হয়েছে যাতে সে আগাছা আর না জন্মাতে পারে। তাতে কাজ না হলে আগাছা কেটে ফেলা হবে।” শাশ্বতবাবুর দাবি ঠিকাদারি সংস্থার তরফে কতজন কর্মী কাজ করছে তার তালিকা-সহ সমস্ত নথি ওয়ার্ড মাস্টারের কাছে জমা দেওয়ার কথা ওই সংস্থার। তাদের কাজকর্মের তদারকিও করবেন ওয়ার্ড মাস্টার নিজে, এমনটাই নিয়ম। কিন্তু কেন সে সব ঠিকমতো হচ্ছে না, তা নিয়ে ওই ঠিকাদারি সংস্থার সঙ্গে কথা বলা হবে বলে জানান হাসপাতাল সুপার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE