Advertisement
E-Paper

চিকিৎসক-সঙ্কট মেটাতে নয়া প্রশাসনিক নির্দেশ ঘিরে জট

কোথাও একজনও নেই, আবার কোথাও দু’জনের জায়গায় একজন। অবস্থা সামাল দিতে যেখান থেকে একজন করে পাঠানো হচ্ছে সেখানেও ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় অবস্থা। চিকিৎসকদের এই ফাঁকা জায়গা পূরণ কবে হবে সে নিয়েও দ্বিধা রয়েছে। এরই মধ্যে সম্প্রতি রামপুরহাট মহকুমাশাসকের একটি নির্দেশের জন্য তাঁদের সমস্যা আরও বেড়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৩৮

কোথাও একজনও নেই, আবার কোথাও দু’জনের জায়গায় একজন। অবস্থা সামাল দিতে যেখান থেকে একজন করে পাঠানো হচ্ছে সেখানেও ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় অবস্থা। চিকিৎসকদের এই ফাঁকা জায়গা পূরণ কবে হবে সে নিয়েও দ্বিধা রয়েছে। এরই মধ্যে সম্প্রতি রামপুরহাট মহকুমাশাসকের একটি নির্দেশের জন্য তাঁদের সমস্যা আরও বেড়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।

প্রসঙ্গত, নিজে চিকিৎসক হওয়ায় রামপুরহাট মহকুমাশাসক উমাশঙ্কর এস রামপুরহাট জেলা হাসপাতাল ছাড়াও মাঝে মাঝে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম সরেজমিন দেখতে বা এলাকার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি ঠিক ঠিক চলছে কি না দেখতে গিয়ে চিকিৎসক বিহীন প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে বসে রোগী দেখেন। এই অবস্থায় মহকুমা এলাকার স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল ফেরাতে উদ্যোগী হন তিনি। সম্প্রতি রামপুরহাট মহকুমা এলাকার মোট ৮টি ব্লকের ( মুরারই ১ ও ২, নলহাটি ১ ও ২, রামপুরহাট ১ ও ২, ময়ূরেশ্বর ১ ও ২) বিএমওএইচদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় মহকুমা এলাকার চিকিৎসক বিহীন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে সোমবার, বুধবার, শুক্রবার এই তিনদিন ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে একজন করে মেডিক্যাল অফিসার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে ২ ঘণ্টা করে রোগী দেখবেন। যতদিন না প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে নতুন চিকিৎসক নিয়োগ হচ্ছে, ততদিন এই ভাবে চিকিৎসকদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। হাসপাতালে যাওয়ার জন্য ব্লক অফিস থেকে গাড়ির ব্যবস্থা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সোমবার থেকে চিকিৎসকহীন প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে চিকিৎসকেরা আসেননি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জেলার ৫৮টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ১৫টি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ৪টি গ্রামীণ হাসপাতাল, সিউড়ি ও রামপুরহাট দু’টি জেলা হাসপাতাল এবং বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল মিলিয়ে ১৫২ জন চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। তার মধ্যে ৩৫টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসকই নেই। এ দিকে, ক্ষমতায় আসার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রামপুরহাট মহকুমাকে পৃথক স্বাস্থ্যজেলা ঘোষণা করেন। ঘোষণার মাস ছ’য়েক পরে মাত্র একজন (স্বাস্থ্য জেলার নিয়ম অনুযায়ী অন্তত ৪ জন )কে মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক পদে নিয়োগ করার কথা। অথচ সেই পদে এখনও কোনও আধিকারিক নেই। রামপুরহাট মহকুমার মধ্যে ২৩টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে অর্ধেকের বেশি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক নেই। তার মধ্যে নলহাটি ১ ব্লকের কুরুমগ্রাম, কয়থা, সোনারকুণ্ড তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক বছর ধরে চিকিৎসক নেই। একই অবস্থা নলহাটি ২ ব্লকের ভদ্রপুর, শীতলগ্রাম, মুরারই ১ ব্লকের চাতরা, রাজগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও। মুরারই ২ ব্লকের রুদ্রনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছাড়া বাকি তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক নেই। চিকিৎসক নেই রামপুরহাট ১ ব্লকের উদয়পুর প্রাথমিক স্বাস্থকেন্দ্রেও।

চিকিৎসকের অভাব আছে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রেও। এই পরিস্থিতিতে মহকুমাশাসকের নির্দেশ মতো কাজ করতে গিয়ে দু’দিকে ঠিক মতো পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কার্তিককুমার মণ্ডল বলেন, “অনেক চিকিৎসক তাঁদের অসুবিধার কথা বলেছেন। আমি তাঁদেরকে মহকুমাশাসকের নির্দেশ মতো কাজ করতে বলেছি। তবে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালিয়ে এই ভাবে কতদিন চালাতে পারেন দেখা যাক। তবে পুজোর পরে চিকিৎসক নিয়োগ হবে আশা করা যায়। তখন কিছুটা হলেও সমস্যা দূর হবে বলে মনে হয়।”

rampurhat district hospital physician crisis
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy