দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল দশা বাসন্তী কাঁঠালবেড়িয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির। চিকিৎসক ও কর্মীর অভাবে মাঝে মধ্যেই বন্ধ হয়ে পড়ে থাকছে সেটি। মাঝেমধ্যে বহির্বিভাগ খোলা পাওয়া গেলেও, দশ শয্যার ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী ভর্তি নেওয়া একেবারেই বন্ধ। অথচ বাসন্তীর ভাঙনখালি, খেড়িয়া, কঁঠালবেড়িয়া, পুরাতন ডকঘাট-সহ আশপাশের বহু গ্রামের মানুষের ভরসা ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সেখানে গিয়ে সাড়া না পেলে রোগী নিয়ে তাঁদের ছুটতে হচ্ছে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে।
ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে দু’জন চিকিৎসক ছিলেন। তার মধ্যে এক জনকে তুলে নেওয়া হয়েছে। নার্স মোটে এক জন। অস্থায়ী কর্মীদের দিয়ে গ্রুপ ডি-র কাজ করানো হোত। এক জন চিকিৎসক, ও এক জন নার্স নিয়ে ওই কেন্দ্রে জরুরি পরিষেবা দেওয়া প্রায় অসম্ভব। তার উপর ওই চিকিৎসক বা নার্সের কেউ এক জন অসুস্থ হয়ে পড়লে বহির্বিভাগ চালানোও সম্ভব হয় না।
দিন কয়েক আগে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল তালা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে সেটি। জখম এক রোগীকে রিকশায় নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দিকে আসছিলেন ভাঙনখালির ওই পরিবার। স্বাস্থ্যকেন্দ্র তালা বন্ধ দেখে রোগীকে নিয়ে ছুটলেন ক্যানিং হাসপাতালের দিকে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ন্যূনতম স্বাস্থ্য পরিষেবাটুকু পাচ্ছেন না তাঁরা। এক সময়ে রোগী ভর্তি নেওয়া হলেও এখন তা বন্ধ। আগে প্রসব করানোর ব্যবস্থা ছিল। এখন সে সবও হয় না। কাঁঠালবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রেজিনা মণ্ডল, সালমা গাজি, রাজা গাজিরা বলেন, “আগে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত চিকিৎসক থাকতেন। রাত-বিরেতে প্রয়োজন পড়লে প্রসূতিদের নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোরও ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু এখন রোগীকে নিয়ে যেতে হয় পনেরো কিলোমিটার দূরে বাসন্তী ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা পাঁচ কিলোমিটার দূরে ক্যানিং হাসপাতালে যা সময়সাপেক্ষ। খরচও হয়।”
এই নিয়ে বাসন্তী পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি মাজেদ মোল্লা বলেন, “ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিষেবাগত সমস্যার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রামকৃষ্ণ ঘোষ। তিনি বলেন, “মাত্র এক জন চিকিৎসক দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। তার মধ্যেই সব রকম পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। জেলা স্তরে বিষয়টি জানানো হয়েছে।” মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম দাস মালাকার বলেন, “বিষয়টি নজরে এসেছে। পরিষেবা উন্নত করার চেষ্টা চলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy