Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু, বিতর্ক

ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে নার্সিংহোমে চিকিত্‌সাধীন এক মহিলার মৃত্যুকে ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধল শিলিগুড়িতে। শনিবার সকালে শিলিগুড়ির খালপাড়ার একটি নার্সিংহোমে মৃত্যু হয় ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা অনিমা শেঠের। তবে ডেঙ্গিতেই যে বছর ৪২ এর ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে তা সরাসরি বলতে কিংবা লিখতে রাজি হননি নার্সিংহোমের সংশ্লিষ্ট চিকিত্‌সক। তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসাবে লেখা হয় ‘ভাইরাল ফিভার’এবং মাথায় জখম নিয়ে তিনি মারা গিয়েছেন। কিন্তু আঘাতে মারা গেলে তা ‘পুলিশ কেস’ বলে বিবেচিত হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫১

ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে নার্সিংহোমে চিকিত্‌সাধীন এক মহিলার মৃত্যুকে ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধল শিলিগুড়িতে।

শনিবার সকালে শিলিগুড়ির খালপাড়ার একটি নার্সিংহোমে মৃত্যু হয় ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা অনিমা শেঠের। তবে ডেঙ্গিতেই যে বছর ৪২ এর ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে তা সরাসরি বলতে কিংবা লিখতে রাজি হননি নার্সিংহোমের সংশ্লিষ্ট চিকিত্‌সক। তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসাবে লেখা হয় ‘ভাইরাল ফিভার’এবং মাথায় জখম নিয়ে তিনি মারা গিয়েছেন। কিন্তু আঘাতে মারা গেলে তা ‘পুলিশ কেস’ বলে বিবেচিত হয়। এবং সে ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই ময়নাতদন্তের প্রশ্ন ওঠে। এর পর পরিবারের লোকজন ডেঙ্গিতে মারা গেলেও কেন তা লেখা হচ্ছে না, এই প্রশ্ন তোলায় চিকিত্‌সক আগের লেখা ডেথ সর্টিফিকেটের বদলে লিখে দেন ভাইরাল ফিভার, থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া এবং যকৃতের অসুখের জন্য মৃত্যু হয়েছে। চিকিত্‌সক পিন্টু কুমার অগ্রবাল বলেন, “রোগীর শরীরে প্লেটলেট কমে গিয়েছিল। এনএসওয়ান পরীক্ষায় শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়ে। তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে ম্যাক অ্যালাইজা পরীক্ষার সময় পাওয়া যায়নি। তাই ডেঙ্গি হয়েছে নিশ্চিত না-হওয়ায় তা মৃত্যুর কারণে লেখা যাচ্ছে না।”

এই ঘটনার জেরে, স্বাস্থ্য দফতর ডেঙ্গি আক্রান্তদের ব্যাপারে তথ্য প্রকাশ্যে না আনার জন্য নার্সিংহোমগুলিকে চাপ দিচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। শনিবার শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সঞ্জয় খাতি নামে এক কিশোর একই সঙ্গে ডেঙ্গি এবং এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। তাঁরও মৃত্যুর কারণ হিসাবে হৃদরোগেরও উল্লেখ করা হয়। শহরের বিভিন্ন নার্সিংহোমে ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে অনেকে ভর্তি থাকলেও হাসপাতালগুলিতে জ্বরের রোগী সে ভাবে নেই। তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন বাসিন্দাদের অনেকে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর ওই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, এনএসওয়ান পরীক্ষায় জীবাণু ধরা পড়লেও নিয়মমাফিক ওই সমস্ত রোগীর রক্তের নমুনা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ক্ষেত্রেও পাঠানো হয়েছে। দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস বলেন, “কী কারণে মৃত্যু হয়েছে তা দেখা হচ্ছে।”

চিকিত্‌সক এবং স্বাস্থ্য দফতরের এই মনোভাবে ক্ষুব্ধ মৃতের পরিবার এবং এলাকার বাসিন্দারা। মৃতের প্রতিবেশী সন্তোষ মিশ্র ও প্রলয় দাস বলেন, “ডেঙ্গিতে আক্রান্ত বলেই তো চিকিত্‌সকরা জানিয়েছিলেন। মৃত্যুর পর কেন তা পরিষ্কার করে তাঁরা লিখতে পারছেন না বোঝা যাচ্ছে না।” তাঁরা জানান, এলাকায় অনেক বাড়িতেই ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে বাসিন্দারা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের কয়েকজনের প্লেটলেট বা অনুচক্রিকার সংখ্যাও দ্রুত কমছে বলে পরিবারের লোকেরা উদ্বিগ্ন। অথচ মশা মারতে পর্যাপ্ত স্প্রে করা হচ্ছে না। ধোঁয়া ছড়ানো হচ্ছে না।

দিন কয়েক আগেই কোদাল হাতে নিয়ে উত্তরবঙ্গ মন্ত্রী নিজেই নিকাশি পরিষ্কার করতে শুরু করায় বাসিন্দাদের প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন। তিনি লোক দেখানো কাজ করছেন বলে বিরোধী দলের অনেকেই অভিযোগ করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে কোদাল নিয়ে নর্দমায় নামতে নিরস্ত করার চেষ্টা করেন। এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ মারাত্মক আকার নিয়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, পুরসভার ৫, ৭, ৮, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়িয়েছে। তা ছাড়া ৪, ৬, ৩১, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডেও ডেঙ্গি হানা দিয়েছে। সেই মতো ১২ টি ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য দফতর এবং পুরকর্মীরা ব্যবস্থা নিচ্ছেন। বাসিন্দাদের অনেকের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

siliguri dengue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy